For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ডলার: ৪০০০ কোটি ডলারের বেশি রিজার্ভ থাকার পরও বাংলাদেশের বাজার কেন অস্থির

  • By Bbc Bengali

ডলারের বাজার অস্থির, বাংলাদেশ। (ফাইল ফটো)
Getty Images
ডলারের বাজার অস্থির, বাংলাদেশ। (ফাইল ফটো)

বাংলাদেশে বিলাসবহুল পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও ডলারের বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে।

তবে বাংলাদেশে ৪১০০ কোটি ডলারের বেশি রিজার্ভ রয়েছে। এরপরও ডলারের বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না এবং পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

মুদ্রা বাজারের অস্থিরতা সামলাতে অল্প সময়ের মধ্যে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করা হয়েছে কয়েকবার।

সর্বশেষ এক ধাক্কায় ৮০ পয়সা কমিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতি ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করে দিয়েছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা।

কিন্তু খোলাবাজারে এই দামে ডলার মিলছে না।

মঙ্গলবার খোলাবাজারে এক ডলার কিনতে ১০০ টাকার বেশি গুণতে হয়েছে।

আরও পড়ুন:

ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দপ্তর।
BBC
ঢাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দপ্তর।

ডলারের বাজার নিয়ে উদ্বেগ কোথায়

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী এ মুহূর্তে ৪,১০০ কোটি ডলারের বেশি রিজার্ভ রয়েছে।

বড় অংকের রিজার্ভ থাকলেও ডলারের বাজারের অস্থিরতার ক্ষেত্রে আমদানি ব্যয় ব্যাপকহারে বৃদ্ধিকে বড় কারণ হিসাবে দেখেন অন্যতম একজন অর্থনীতিবিদ ড: খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

"যে রিজার্ভকে আমরা মনে করছি স্বস্তিদায়ক, কথাটা আসলে এমুহূর্তে সঠিক নয়," বলছেন তিনি।

এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অর্থনীতিবিদ মি: মোয়াজ্জেম বলেন, "যেহেতু আমাদের আমদানি ব্যয় বহুলাংশে বেড়েছে এবং গত নয় মাসে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৭ শতাংশ, ফলে এখন যে রিজার্ভ রয়েছে, তা দিয়ে পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

"অথচ এই রিজার্ভ দিয়ে আট মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব ছিল, যখন আমাদের আমদানি ব্যয় কম ছিল," বলেন মি: মোয়াজ্জেম।

তিনি আরও বলেন, সংখ্যার হিসাবে রিজার্ভে যে ৪১ বিলিয়ন ডলার (চার হাজার একশো কোটি ডলার) রয়েছে, তা এখনকার প্রেক্ষাপটে ন্যুনতম মাত্রায় রয়েছে। "এটা খুব স্বস্তিজনক অবস্থায় নেই।"

ফলে পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এটিকে একটা চ্যালেঞ্জ বলে তিনি মনে করছেন।

আমদানি ব্যয় বেড়েছে তেল, ডালসহ খাদ্যদ্রব্য বা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রে।

একই সাথে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিরও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন।

আমদানিকারকদের অস্বস্তি

আমদানিকারকরা বলেছেন, বাংলাদেশে ডলারের বৃদ্ধির কারণে সংকটের মুখে তারা এখন অনেক ক্ষেত্রে খাদ্যদ্রব্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন।

বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে শীর্ষ পর্যায়ের একজন আমদানিকারক আবুল বাশার চৌধুরী বলেছেন, ডলারের বাজারে নজরদারির অভাবে তারা অস্বস্তিতে রয়েছেন।

তিনি উল্লেখ করেন, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের ইচ্ছামতো ডলারের দাম নেয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তার বক্তব্য হচ্ছে, "বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের যে দাম ঠিক করে দিচ্ছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো কিন্তু তা মানছে না।

"এই ব্যাংকগুলো তাদের ইচ্ছামতো প্রতি ডলারের দাম ৯৫ টাকা বা ৯৬ টাকা করে নিচ্ছে আমাদের আমদানি করার ক্ষেত্রে। এটা কিন্তু কাম্য না।"

আমদানিকারক আবুল বাশার চৌধুরী বলছেন, দামে এতটা পার্থক্য করা ঠিক নয়। "ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমরা আগে যে পরিমাণ খাদ্যপণ্য আমদানি করতাম, এখন তার অর্ধেকের বেশি আমরা করতে পারছি না।"

ঢাকায় খোলাবাজারে ডলারের দাম অনেক বেশি।
Getty Images
ঢাকায় খোলাবাজারে ডলারের দাম অনেক বেশি।

বাণিজ্যিক ব্যাংকেও দাম বেশি

মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বিনিময় হার ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে দেবার পরেও খোলাবাজার ডলারের দাম উঠেছে ১০০ টাকার বেশি।

আর বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যার যার মতো বাড়তি দাম নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

একটি বেসরকারি ব্যাংক ওয়ান ব্যাংকের চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার পারুল বিশ্বাস বলেছেন, বাজারে ডলারের ঘাটতি থাকায় ব্যাংকগুলো সমস্যায় পড়েছে।

তিনি সমস্যার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, আসলে ব্যাংকগুলোর হাতে আমদানির এলসি খোলার মতো যথেষ্ট ডলার আছে কিনা- সে প্রশ্ন রয়েছে। যে কারণে ব্যাংকগুলোকে ডলার কিনতে হচ্ছে বলে তিনি বলছেন।

তিনি আরও বলেন, "আমাদের এই ডলার কিনতে হচ্ছে রেমিটেন্স হাউজ বা একচেঞ্জ হাউজ এবং বিদেশি কোন ব্যাংক বা স্থানীয় যাদের কাছে বেশি আছে, তাদের কাছ থেকে। যার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দাম ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা দিয়ে কিন্তু আমি মার্কেট থেকে (ডলার) কিনতে পারছি না।"

তিনি ব্যাখ্যা করেন ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত দামের বেশি টাকা দিয়ে ডলার কিনতে হওয়ায় একটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

"ইমপোর্টের পেমেন্টগুলো হয়ে যাচ্ছে ৯৫ টাকা বা ৯৬ টাকা। কারণ আমি কিনছি ৯৩ টাকায়। সেটা ৮৭ টাকা ৫০ পয়সায় আমি কীভাবে দিতে পারি?" বলেন ওয়ান ব্যাংকের কর্মকর্তা পারুল বিশ্বাস।

মার্কিন ডলার
Getty Images
মার্কিন ডলার

কেন্দ্রীয় ব্যাংক যা বলছে

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেছেন, খাদ্যদ্রব্য ছাড়া বিলাসবহুল সামগ্রী আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক বাড়িয়ে তা নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

একইসাথে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ডলার সরবরাহ বাড়িয়ে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার চেষ্টা তাদের রয়েছে।

মি: ইসলাম বলেন, "আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, আমাদের রেমিটেন্স বাড়ছে। জুলাই মাসে কোরবানির ঈদের সময় রেমিটেন্স আরও বাড়বে। এছাড়া রপ্তানিও বেড়েছে।

"ফলে আমরা আশা করছি, কিছু দিনের মধ্যেই ডলারের বাজার একটা ভারসাম্যের মধ্যে আসবে," বলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র।

কর্তৃপক্ষ এমুহূর্তে রেমিটেন্স এবং রপ্তানি বৃদ্ধির একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করছেন।

কিন্তু অর্থনীতিবিদদের তাতে সন্দেহ রয়েছে।

ড: খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, "যদিও রপ্তানি আয় বেড়েছে, কিন্তু তারপরও এক মাসে আট হাজার তিনশো কোটি ডলার আমদানি ব্যয়ের বিপরীতে রপ্তানি আয় হচ্ছে চার হাজার পাঁচশো কোটি ডলার। ফলে আমদানি ব্যয় অনেক বেশি থাকছে।"

এছাড়া মি: মোয়াজ্জেম উল্লেখ করেন, ডলারের দাম বাড়তে থাকলে যারা রেমিটেন্স পাঠায়, তাদের মধ্যে খোলাবাজারে দাম বেশি পেতে হুন্ডির মাধ্যমে বা অন্য উপায়ে দেশে টাকা পাঠানোর প্রবণতা বাড়বে। এই পরিস্থিতি ডলারের বাজারে আরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অর্থনীতিবিদ এবং আমদানিকারকরা অবশ্য মনে করেন, ডলারের অস্থির বাজার সামলানোর এখনও সময় রয়েছে এবং সেজন্য কর্তৃপক্ষের আরও সতর্ক থাকা ও নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।

English summary
Why Bangladesh Market is volatile?
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X