করোনা সংক্রমণ রুখতে মাস্ক পরার নতুন নির্দেশিকা নিয়ে এল হু
বিশ্বজুড়ে এখনও বেড়ে চলেছে কোভিড সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে একাধিক পরিবর্তনের কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তার মধ্যে পরিস্কার–পরিচ্ছন্নতা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এছাড়াও রয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও মাস্কের ব্যবহার। এই মাস্কের ব্যবহারের ব্যাপারে নতুন কিছু পথনির্দেশ দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু।
মাস্ক ঝুঁকি কমায় সংক্রমণের
শুক্রবার রাতে হু-এর প্রধান টেড্রস আধানম সাংবাদিক সম্মেলন করে এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেন। তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রুখতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা বা পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যসম্মত অভ্যেস গড়ে তোলার বিকল্প মাস্ক নয়। কিন্তু তার পরেও ঝুঁকি কমাতে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নতুন গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই ধরনের পরামর্শ আগামী দিনেও দেবে হু।' টেড্রস আধানম জানিয়েছেন, যেখানে সংক্রমণ বেশি হারে ছড়িয়েছে, সেখানকার স্থানীয় সরকার যেন সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরার জন্য উৎসাহিত করেন। বিশেষ করে যেখানে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়, যেমন গণ পরিবহণ ব্যবস্থা, দোকান বা কোনও বদ্ধ বা ভিড় এলাকায় সেখানে ফেব্রিক মাস্ক পরতেই হবে। নইলে সংক্রমণ দ্রুত হারে ছড়াবে।
বয়স্কদের মাস্ক পরতে হবে
হু-এর ডিরেক্টর আরও জানিয়েছেন যে যাদের বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি এবং চিকিৎসার মধ্যে রয়েছেন, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা যেখানে সম্ভব হচ্ছে না তাদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। হু এর আগে জানিয়েছিল যে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য কর্মী, কোভিড-১৯ রোগী ও তাদের যত্ন নিচ্ছে এমন মানুষই মেডিক্যাল মাস্ক পড়বে। কারণ সেই সময় মাস্কের বিশ্বব্যাপা ঘাটতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। সাংবাদিক সম্মেলনে টেড্রস নির্দেশিকা সংশোধন করে জানিয়েছেন যে মাস্ক কখনই কাউকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে না এবং হাও ধোওয়া, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা সহ অন্যান্য সংক্রমণ প্রতিরোধের কৌশলের ওপর জোর দিয়েছিলেন।
ফেব্রিক মাস্ক পরার ওপর জোর
হু-র প্রধান জানিয়েছেন, যে সব এলাকায় সংক্রমণ খুব বেশি হারে ছড়িয়েছে, সেখানে ক্লিনিকাল এরিয়ায় সবাইকে মেডিক্যাল মাস্ক পরতে হবে। শুধু মাত্র স্বাস্থ্যকর্মীরা মেডিক্যাল মাস্ক পরলে চলবে না, সেখানে যাঁরা থাকবেন সবাইকে মেডিক্যাল মাস্ক পরতে হবে। শুক্রবার দেওয়া সংশোধিত নির্দেশিকায় নতুন কিছু তথ্যও দিয়েছে হু। টেড্রস জানিয়েছেন, ফেব্রিক মাস্কের ব্যাপারে হু-এর অনুরোধে গবেষণা করা হয়েছে। এই নতুন গবেষণা অনুসারে হু এই পরামর্শই দিতে চাইছে যে, ফেব্রিক মাস্কের মধ্যে অন্তত তিন রকম মেটিরিয়ালের স্তর থাকে। তাই এই মাস্কই ব্যবহার করা উচিত।
প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে
বর্তমানে কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে বিশ্বজুড়ে। এই কাজে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগযোগ রেখে চলেছে হু। তবে এই কাজে অনেকটা সময় লাগতে পারে বলেই তাদের ধারণা। এই পরিস্থিতিতে মানুষের সচেতনতা কেবলমাত্র এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার হাতিয়ার হতে পারে বলে এর আগেও জানিয়েছে হু। সেই ব্যাপারেই আরও একটু বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।