করোনার শিকড় খুঁজতে চিনে হু-এর প্রতিনিধি দল, উহানে পা রাখতেই ১০ দিনের কোয়ারেন্টাইন
করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল নিয়ে বিশ্বের দরবারে আগেই কোণঠাসা হয়েছিল চিন। বারংবার নানা তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরা সত্ত্বেও অভিযোগ মানতে নারাজ ছিল জিনপিংয়ের সরকার, উল্টে ভারত-বাংলাদেশ-রাশিয়া-গ্রীস থেকে আমদানিকৃত সামুদ্রিক মাছের মাধ্যমে দেশে করোনা ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছিল চিনের কমিউনিস্ট সরকার। যদিও অবশেষে বহু কূটনৈতিক টানাপোড়েনের শেষে দেশে হু-এর ১০ সদস্যের বিশেষ প্রতিনিধিদলকে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে শি-জিনপিংয় প্রশাসন। যদিও আন্তর্জাতিক মহলের দাবি, মহামারীর উৎপত্তিস্থল খতিয়ে দেখার বিষয়ে তদন্তকে নানাভাবে প্রভাবিত করতে পারে বেজিং।

কূটনৈতিক কৌশলের ফল পেল হু
গত কয়েকমাস যাবৎ বেজিংয়ের সঙ্গে লাগাতার কূটনৈতিক আলোচনার ফল পেল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। বৃহস্পতিবার চিনের উহানে পৌঁছেছে ১০ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল। সূত্রের খবর, বর্তমানে তাঁদের বিশেষ কোয়ারেন্টাইনের মধ্যে রাখা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, চিনের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বাদুড় থেকে সর্বপ্রথম মানবদেহে আসে কোভিড। যদিও চিন বিদেশ থেকে করোনা প্রবেশের ভ্রান্ত থিওরি খাড়া করার চেষ্টা করলেও পরে সঠিক প্রমাণের অভাবে তা ধোপে টেকেনি।

চিনে তদন্তের বিষয়ে সন্দিহান আন্তর্জাতিক মহল
এদিকে হু-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশেষ তদন্ত দলে রয়েছেন আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, জাপান, ব্রিটেন, রাশিয়া, নেদারল্যান্ডস, কাতার ও ভিয়েতনামের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি চিন সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন করোনা শিকড় খুঁজতে চৈনিক বিজ্ঞানী ও হু-এর বিশেষজ্ঞরা একে-অপরের তথ্য আদানপ্রদান করবে। যদিও প্রমাণ জোগাড় ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে হু বিশেষজ্ঞ দল জিনপিংয়ের সরকারের থেকে কতটা সহায়তা পাবে, সে বিষয়ে সন্দিহান আন্তর্জাতিক রাজনীতিকরা।

সকলরকমের তদন্তের বিরোধিতা করেছে চিন
১৯৩০-এর পর করোনাকালে সর্বাধিক পারাপতন ঘটে বিশ্ব-অর্থনীতিতে। স্বাভাবিকভাবেই ট্রাম্প-প্রশাসন চিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তদন্তের ডাক দিলে তা এড়িয়ে যায় চিন। অন্যদিকে একই দাবি তোলার কারণে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করে বেজিং। সূত্রের খবর, কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন বিশেষজ্ঞ দলের নানাবিধ করোনা পরীক্ষা হবে। সূত্রের মতে, এ সময়ে চিনাগবেষকদের সঙ্গে ভিডিও মাধ্যমে যুক্ত থেকে কাজ শুরু করবে হু।

বিতর্কের মাঝেই বিশেষ বার্তা তাইওয়ানের
ইতিপূর্বেই আন্তর্জাতিক মহলে করোনা সংক্রমণের বিষয়ে নানাবিধ তত্ত্ব ছড়িয়েছে চিন। চোরাশিকারীদের কারণে করোনা ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন হু-এর সদস্য প্রাণীবিশারদ পিটার ড্যাসজ্যাক। তাছাড়াও নানা সময়ে তথ্যগোপন ও তথ্যবিকৃতির মত ভয়ানক অভিযোগ উঠেছে জিনপিং সরকারের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে হু-এর বক্তব্য, একবারের পরিদর্শনে সঠিক জন্মস্থল পাওয়া না গেলেও একটি ধারণা পাওয়া সম্ভব। তাইওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক শিন-রূহ-শিনের মতে, "করোনা গবেষণাকে অন্ততপক্ষে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য হু-কে চিনের সাহায্য করা উচিত।"

১৪ জানুয়ারি সোনার দামে প্রবল পতন! মকর সংক্রান্তিতে কলকাতায় দর একনজরে