প্রেসিডেন্টের সামনে বেয়াদপি! ঘাড় ধাক্কা দিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে বের করে দেওয়া হল সাংবাদিককে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোপে সিএনএন সাংবাদিক। যার জেরে সেই সাংবাদিককে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হল হোয়াইট হাউস থেকে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোপে সিএনএন সাংবাদিক। যার জেরে সেই সাংবাদিককে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হল হোয়াইট হাউস থেকে। পরে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ সান্ডার্স এক বিবৃতিতে জানান, অভব্য আচরণের জন্য সিএনএন-এর রিপোর্টার জিম অ্যাকোস্টাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর হার্ড পাসও নিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরের নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত জিম অ্যাকোস্টা হোয়াইট হাউসের সীমানাও মাড়াতে পারবেন না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছে সিএনএন।
সাংবাদিক জিম অ্যাকোস্টাও এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে টুইটও করেছেন। তিনি টুইটারে একটি ভিডিও তুলে ধরেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে মার্কিন সিক্রেট ইনটেলিজেন্সের এক আধিকারিক অ্য়াকোস্টার কাছ থেকে তাঁর প্রেস পাস কেড়ে নিচ্ছেন।
The US Secret Service just asked for my credential to enter the WH. As I told the officer, I don’t blame him. I know he’s just doing his job. (Sorry this video is not rightside up) pic.twitter.com/juQeuj3B9R
— Jim Acosta (@Acosta) November 8, 2018
ঘটনমার সূত্রপাত মিড-টার্ম ইলেকশনের পর হোয়াইট হাউসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে। যেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সিএনএন-এর রিপোর্টার জিম অ্য়াকোস্টা ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন মধ্য-আমেরিকা থেকে যে সব উদ্বাস্তু সমানে আমেরিকায় ঢুকছেন তাঁদের নিয়ে তিনি কী ভাবছেন। কিন্তু ট্রাম্প এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি। উল্টে তিনি ক্ষিপ্ত হন। ট্রাম্পের চোখের ইশারা করতে হোয়াইট হাউসের এক ইনটার্ন অ্যাকোস্টার হাত থেকে মাইক্রো-ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অ্যাকোস্টা জোর করেই মাইক্রো-ফোন ধরে রেখে সমানে ট্রাম্প-কে প্রশ্ন করতে থাকেন।
এরপরই ক্ষিপ্ত ট্রাম্প সিএনএন-এর রিপোর্টার অ্যাকোস্টাকে 'মানুষের শত্রু' বলে মন্তব্য করেন। এখানেই থামেননি ট্রাম্প। অ্য়াকোস্টাকে তিনি একজন 'ভীষণরকমের রুক্ষ ব্যক্তি' বলেও সম্বোধন করেন। তাঁর মতো একজনের সিএনএন-এর হয়ে কাজ করার কোনও যোগ্যতা নেই বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প। মাইক্রোফোন ছেড়ে আসনে বসে যেতে অ্যাকোস্টাকে নির্দেশও দেন ট্রাম্প।
I'm posting this close up not to bolster my argument that Jim Acosta did nothing wrong, because I think that's pretty clear. Instead, look at the way this staffer keeps looking to Trump for confirmation on each attempt. It's so creepy. This blind obedience is cult like. pic.twitter.com/PRLBxkoCHI
— Amee Vanderpool (@girlsreallyrule) November 8, 2018
পরে অ্যামি ভেন্দারপল নামে এক জন ঘটনার একটি ভিডিও টুইটারে পোস্ট করেন। অ্যামি সাফ বলেন, ইনটার্ন যখন বারবার মাইক্রোফোন কাড়ার চেষ্টা করছিলেন তখন প্রতিটি অ্যাকশনের শেষে তিনি প্রেসিডেন্টের দিকে তাকাচ্ছিলেন। এমন অন্ধ আনুগত্য সত্যিকারেই হাস্যকর।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ সান্ডার্স জানিয়েছেন, জিম অ্যাকোস্টা যা করেছেন তা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। হোয়াইট হাউসের ইতিহাসে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি বলেও মন্তব্য করেছেন সান্ডার্স। সেইসঙ্গে তিনি বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এক জন রিপোর্টার যে ভাবে ইনটার্নকে হাত দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে তা কখনও ভাবেই সহ্য করা হবে না।
গোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে সিএনএন। তারা সান্ডার্স-এর বিবৃতিকে প্রতারক বলেও মন্তব্য করেছে।
Tonight the White House revoked @Acosta’s press pass. CNN’s response to @PressSec and @realDonaldTrump: pic.twitter.com/EY2iFLvP3P
— CNN Communications (@CNNPR) November 8, 2018
[আরও পড়ুন: দীপাবলি-তে আমেরিকায় নারী-শক্তির জয় জয়কার, একাধিক নজির তৈরি করল মধ্যবর্তী নির্বাচন ]
অ্যাসোসিয়েশন রিপ্রেজেন্টেটিং দ্য ওয়াশিংটন এই ঘটনার নিন্দা করে অবিলম্বে অ্য়াকোস্টার উপর থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত তুলে নেওয়ার আর্জি রেখেছে। সমালোচনায় সরব হয়েছে দ্য হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন। যেভাবে সিক্রেট সার্ভিস-এর এক এজেন্ট-কে দিয়েয় অ্য়াকোস্টার প্রেস পাস কেড়ে নেওয়া হয়েছে তার সমালোচনা করেছে এই অ্য়াসোসিয়েশন। গোটা ঘটনাই গ্রহণযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করেছে তারা। যদিও, এত তোপের মুখেও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউস থেকে সাফ বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।
অ্য়াকোস্টার হয়ে গলা ফাটাতে গিয়ে ট্রাম্পের রোষের মুখে পড়েন এনবিসি-র রিপোর্টার পিটার অ্যালেক্সান্ডার। তিনি ট্রাম্প-কে প্রশ্ন করার সময় বলেন, অ্যাকোস্টা যথেষ্টই দক্ষ ও ভদ্র রিপোর্টার। এতে ট্রাম্পের তির্যক মন্তব্যের শিকার হন পিটারও। সিএনএন রিপোর্টারকে কথা শোনানোর সময় ট্রাম্পকে এমন কথাও বলতে শোনা যায় যে, 'আমার মনে আমাকে দেশটা চালাতে দেওয়া উচিত। আপনারা বরং সিএনএন-টাকে বালো করে চালান। এতে আপনাদের রেটিং আরও বাড়বে।' এমনকী সিএনএন ফেক নিউজ প্রকাশ করে বলেও অভিযোগ করেন ট্রাম্প। এর জন্য সিএনএন-কে মানুষের শত্রু বলেও মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।