For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

আবহাওয়া: বর্ষাকালে নেই বৃষ্টির দেখা, তীব্র গরম কমবে কবে?

আবহাওয়া: বর্ষাকালে নেই বৃষ্টির দেখা, তীব্র গরম কমবে কবে?

  • By Bbc Bengali

তীব্র রোদে হাঁশফাশ।
Getty Images
তীব্র রোদে হাঁশফাশ।

বাংলাদেশে আষাঢ় শেষে শ্রাবণ মাস শুরু হলেও গত কয়েকদিন ধরে ভারী বৃষ্টির দেখা নেই।

বিগত কয়েকদিন ধরে আবহাওয়া যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করে আছে।

আকাশে শরত ও হেমন্তকালের মতো বিক্ষিপ্ত মেঘের আনাগোনা এবং একই সাথে তীব্র খরতাপ।

ফলে ভরা বর্ষাকালেও বাংলাদেশের মানুষকে ভ্যাপসা গরমের যন্ত্রণা সইতে হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্ষাকালে যে পুঞ্জিভূত মেঘ বাংলাদেশে অবস্থান করার কথা সেটা এখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আছে। এজন্য বাংলাদেশে বর্ষাকালেও মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে না।

আবার গত এক দশক ধরেই আবহাওয়ায় এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রভাবে ঋতু পরিক্রমায় এই পরিবর্তন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

বর্ষাকালে আবাদি জমি ফেটে চৌচির

টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র রোদে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে বাংলাদেশের কৃষিখাত।

জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার কৃষক মো. রেজওয়ানের আবাদি জমি এরইমধ্যে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে।

অন্যান্য বছর এ সময়ে জলমগ্ন জমিতে আমনের চারা বুনলেও এবারে বৃষ্টির অভাবে জমিতে পানি নেই।

বর্ষাতেও শুষ্ক আবাদি জমি।
BBC
বর্ষাতেও শুষ্ক আবাদি জমি।

আমন চারার বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে, ইতোমধ্যে অনেক চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে কটা সবজি চাষ করেছেন সেগুলোও তীব্র গরমে নষ্ট হওয়ার পথে।

সামনের ক'দিন বৃষ্টি না হলে অতিরিক্ত টাকা গুনে জমিতে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে বলে তিনি জানান।

মি. রেজওয়ান বলছিলেন, "আমরা তো কৃষিকাজ করি। কিন্তু সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারি না। রোদে গা জ্বলে।মাঠে তো এক ছটাক বৃষ্টি নাই। আমন বোনার কোন পানিও নাই। আমনের চারাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সবজি চাষ করছি। সেগুলিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে তো সেচ দিতে হবে। তখন দাম বেড়ে যাবে।"

গ্রামের মতো শহরাঞ্চলেও রোদের তাপ ও গরমে খোলা আকাশের নীচে কাজ করা মানুষের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম হয়েছে। এমনকি ঘরের জানালা দরজা খুললেও ভেসে আসছে গরম বাতাসের হলকা।

ভারী বৃষ্টি এই গরম কমার সম্ভাবনা নেই বলছেন আবহাওয়াবিদরা।

কেন এতো গরম, বৃষ্টি নামবে কবে?

আবহাওয়া অধিদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে গত সাত দিনের মতো রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, যশোর, কুষ্টিয়া ও সিলেটসহ কয়েকটি জেলার ওপর তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

যদি টানা তিন দিন অন্তত ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করে, সেটাকেই তাপপ্রবাহ বলে।

আরও পড়তে পারেন:

* গরমে অসুস্থতা থেকে রক্ষা পাওয়ার ১০ উপায়

* তীব্র দাবদাহ যেভাবে মৃত্যুরও কারণ হতে পারে

* তীব্র দাবদাহের মধ্যে যেভাবে নিজেকে সুস্থ রাখবেন

পানি
Getty Images
পানি

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, গত কয়েকদিনে সারাদেশে যে তীব্র গরম পড়েছে সেটা হালকা বা মাঝারি বৃষ্টিপাতে কমার কোন সম্ভাবনা নেই। এক্ষেত্রে প্রয়োজন ভারী বৃষ্টি।

তবে রোববার পর্যন্ত দেশের কোন অংশেই ভারী বৃষ্টিপাতের কোন আভাস দেখা যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।

বর্ষাকালে বৃষ্টি কেন নেই

আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলছেন, প্রকৃতিতে বর্ষাকাল চললেও আকাশে যে পুঞ্জিভূত মেঘের অক্ষ সেটা বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছে। এ কারণে বাংলাদেশে বৃষ্টির দেখা নেই।

এই অক্ষ বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেলেই মুষলধারে বৃষ্টি সম্ভব বলে তিনি জানিয়েছেন।

মি. মান্নান বলেন, "গত এক সপ্তাহ ধরে তাপপ্রবাহ চলছে, বৃষ্টির ঘনঘটা কম, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি, আকাশ মেঘমুক্ত একইসাথে প্রখর সূর্যকিরণ। সব মিলিয়ে অসহনীয় অবস্থা। এটা আরও দুইদিন সহ্য করতে হতে পারে। ভারী বৃষ্টি ছাড়া গরম কমবে না। দুইদিন পরেও ভারী বৃষ্টিপাত হবে কিনা সেটাও নিশ্চিত না।"

আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুগল বিভাগের শিক্ষক নাজমুন নাহার বলছেন সমুদ্রে নিম্নচাপ না হওয়ায় বৃষ্টির যে ঘনীভূত মেঘ সেটা আকাশে জমতে পারছে না। ফলে বৃষ্টি হচ্ছে না।

নিম্নচাপ হলে সমুদ্রের পানি জলীয় বাষ্প আকারে ওপরে উঠে ঘনীভূত হয় এবং মেঘ তৈরি করে। সেই মেঘ বৃষ্টির পানি আকারে নেমে আসে।

যেহেতু নিম্নচাপ তৈরি হচ্ছে না। তাই মেঘ জমে বৃষ্টি নামছে না। উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ায় এখন শুধু গরম বাতাস ওপরে উঠছে। আকাশে যে মেঘ আছে সেটা শরতের মেঘ। বৃষ্টির মেঘ নেই।

গত কয়েকদিন যাবত বাংলাদেশে তীব্র গরম।
Getty Images
গত কয়েকদিন যাবত বাংলাদেশে তীব্র গরম।

আবহাওয়ার অস্বাভাবিক পরিস্থিতির কারণ কী

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তীব্র তাপপ্রবাহের জন্য কম বৃষ্টি, বাতাসের গতিবেগ কমে যাওয়া, জলীয় বাষ্পের আধিক্য, সর্বোচ্চ ও সর্ব নিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কমে যাওয়াকে অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান।

সেইসাথে গত এক দশকে গ্রীষ্ম ক্রমে দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং শীতকালেও গড় তাপমাত্রা বেশি থাকছে।

সেইসাথে বর্ষাকালে বৃষ্টির পরিমাণও কমে গিয়েছে আশঙ্কাজনক হারে। বৃষ্টিপাত হচ্ছে অন্য মৌসুমে। এর পেছনে বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে মূল কারণ হিসেবে দুষছেন আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান।

মি. মান্নান বলেন, "জুন মাসে উত্তর পূর্বাঞ্চল বৃষ্টিতে ভেসে গেল। অথচ এই মাসে খরা পরিস্থিতি। বর্ষা আচরণ কিছুটা বৈচিত্র্যপূর্ণ যেমন এক বছরে বৃষ্টি বেশি হয়, আরেক বছর কম। কিন্তু এতো দীর্ঘদিন ধরে তাপপ্রবাহ থাকাটা অস্বাভাবিক।

মূলত, ২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে আবহাওয়ায় এই অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত গরমে মেঘ পুঞ্জিভূত হতে পারছে না। গরম বাতাসের ধাক্কায় মেঘে যে পানি থাকে তা বৃষ্টি হয়ে নামার আগেই বাষ্প হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে, তীব্র গরমের কারণে বাতাসের স্বাভাবিক গতি প্রবাহে পরিবর্তন এসেছে। এর প্রভাবে ফসলের আবাদ কমে যাচ্ছে যা ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তায় বড় প্রভাব ফেলতে পারে সেইসাথে নতুন ধরণের রোগবালাই দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

English summary
when will be rain started in monsoon
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X