করোনা নাকি ইনফ্লুয়েঞ্জা, নতুন বছরের প্রাক্কালে নয়া রোগের বিপদ, ‘ফ্লোরোনা’ আসলে কি জেনে নিন
‘ফ্লোরোনা’ আসলে কি জেনে নিন
করোনা ভাইরাস, ওমিক্রনের আতঙ্ক গোটা বিশ্বকে গ্রাস করেছে। এরই মাঝে নতুন এক রোগ ধরা পড়ল, যার নাম 'ফ্লোরোনা’। ইজরায়েল সংবাদপত্র ইয়েদিওথ আহরোনোথ রিপোর্ট করেছে যে 'ফ্লোরোনাl’ রোগে তাদের দেশে একজন আক্রান্ত হয়েছে, এটি আসলে করোনা ভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জার দ্বৈত সংক্রমণ। সংবাদপত্রটি উল্লেখ করেছে যে এই সপ্তাহে রবিন মেডিক্যাল সেন্টারে প্রসবের জন্য প্রবেশকারী একজন মহিলার মধ্যে এই 'দ্বৈত রোগের’ সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছিল।
ইজরায়েলে আক্রান্ত একজন
চিকিৎসকদের মতে, ওই তরুণী, যাঁর টিকাকরণ করানো ছিল না, তিনি এখন সুস্থ আছেন এবং শুক্রবারের পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ইজরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও সিডিসি জানিয়েছে যে ইজরায়েলে ব্যাপকভাবে ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণের ওয়েভ দেখা গিয়েছে, গত সপ্তাহেই এই দেশের হাসপাতালগুলিতে ১,৮৪৯ জন রোগীর চিকিৎসা হয়েছে। তবে এই রোগের উপসর্গ মৃদু কিন্তু তা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই দুই রোগের সমন্বয়ে তৈরি নতুন কেস ও মানবদেহে তার প্রভাব নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে অনেক লোকই এই দুই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিন্তু এখনও তাঁরা ডায়গনোস করাননি।
ফ্লোরোনা রোগ আসলে কি
কোভিড-১৯ ভাইরাস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংমিশ্রনে তৈরি এই দ্বৈত সংক্রমণ ফ্লোরোনা। ২০২০ সালের মার্চ মাসে মহামারি শুরু হওয়ার পর এই ধরনের রোগের প্রথম ঘটনা এটি। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ফলে নিউমোনিয়া, মায়োকার্ডাইটিস এবং কখনও কখনও এমনকি মৃত্যুর মতো গুরুতর উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। রোগ প্রতিরোধ কেন্দ্র ও ইজরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই রোগ নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে হাসপাতালগুলিতে গত সপ্তাহে ১,৮৪৯ জন জটিল অবস্থায় থাকা রোগীর চিকিৎসা চলার পর এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ফ্লোরোনার উপসর্গ কি
স্বাস্থ্য মন্ত্রক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, 'ফ্লোরোনা'র উপসর্গগুলি নিউমোনিয়া ও অন্যান্য শ্বাস-প্রশ্বাসের জটিল রোগ এবং মায়োকার্ডিটিসের মতো গুরুতর উপসর্গ হতে পারে। এই রোগের যদি ঠিকমতো চিকিৎসা না হয় তবে মৃত্যুর ঝুঁকিও থাকতে পারে। তাই মন্ত্রকের নির্দেশ অনুসারে, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন নেওয়ার ৬ মাস পর ব্যক্তি নিরাপদে করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারেন।
‘ফ্লোরোনা’–তে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ভূমিকা কি
কায়রো ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ব্যাকটেরিয়া, পুষ্টি এবং অনাক্রম্যতা বিষয়ক পরামর্শক ডাঃ নাহলা আবদেল ওয়াহাবের মতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি ভেঙে পড়ে, তবে একাধিক প্রতিযোগিতামূলক উপসর্গ ও প্রদাহ দেখা যাবে হৃদপিণ্ডের পেশিতে, যা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উপসর্গ। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস ও কোভিড-১৯ এর উপসর্গের সঙ্গে, দুটি ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশের অর্থ হল, এটি তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার পতনের সবচেয়ে বড় প্রমাণ। ডাঃ নাহলার মতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা মেনে চলার পাশাপাশি ভ্যাকসিন গ্রহণের দ্রুততার ওপর জোর দিয়েছেন, যাঁরা এখনও পর্যন্ত টিকা পাননি, তাঁরা যেন দ্রুত টিকা নিয়ে নেন কারণ 'ফ্লোরোনা' ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। দীর্ঘদিন ধরে যারা রোগে ভুগছেন তারা যেন চিকিৎসকের পরামর্শ নেন দ্রুত।