ভোটের ১০০ দিন আগেও অগ্নিগর্ভ মার্কিন মুলুক! নির্বাচনী বৈতরণী পার নিয়ে সন্দিহান ট্রাম্প
ভোটের ১০০ দিন আগেও অগ্নিগর্ভ মার্কিন মুলুক! নির্বাচনী বৈতরণী পার নিয়ে সন্দিহান ট্রাম্প
২০২০ নির্বাচনের বাকি মাত্র ১০০ দিন। কিন্তু নির্বাচন এগিয়ে এলেও ক্রমেই পায়ের তলার মাটি হারাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের ১০০ দিন আগেও অগ্নিগর্ভ চেহারা গোটা আমেরিকার। গত কয়েক মাস থেকে সামাজিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক বিতর্কের জেরে আমেরিকায় লেগেই রয়েছে অশান্তি। রবিবারও বেশ কয়েকটি শহরে দাঙ্গারও খবর মেলে। এমতাবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প কি ফের দ্বিতীয় দফায় হোয়াট হাউস জিততে পারবেন? বর্তমানে সে দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। যদিও গোটা দেশে দাঙ্গা অশান্তির কারণ হিসেবে বারংবারই ডেমোক্রেট শিবিরের দিকে আঙুল তুলেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত শহরগুলিতে বাড়ছে উত্তেজনা
গত কয়েকদিন থেকে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু ঘিরে উত্তাল আমেরিকার জনপদ। "ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার" শীর্ষক বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের হাত ধরে পুলিশি নিপীড়নের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হয়েছে নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, ফিলাড্যালফিয়া, ডেট্রোয়েট, বাল্টিমোর, ওকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ার মত ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহরগুলি। কিন্তু নির্বাচনের আগে কোনোরকম অশান্তি চান না ট্রাম্প। একারণেই আন্দোলন দমানোর জন্য ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহরগুলিতে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা আরও জোরদার করার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। অন্যদিকে, ডেমোক্রেটের তরফে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ধরপাকড়,জোর করে আটক রাখার মত অভিযোগও আসছে।
করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থ ট্রাম্প প্রশাসন
এদিকে নির্বাচনের আগেই করোনার প্রাদুর্ভাব আরও খানিক অস্বস্তিতে ফেলেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। মহামারীর শুরু থেকেই বারংবার বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। এদিকে সারা বিশ্বে করোনার ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে আমেরিকা। গত ৫দিনে আমেরিকায় প্রতিদিনই করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় হাজার মানুষ। পাশাপাশি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমেরিকায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১ লাখ ৭৫ হাজার দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। এই কটিন পরিস্থিতে জনস্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলাতেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভোটের মাত্র ১০০ দিন আগে কিছু কিছু জনমত সমীক্ষা বলছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যতই ব্যর্থ হয়েছেন।
জনমত সমীক্ষায় ট্রাম্পের থেকে এগিয়ে জো বাইডেন
করোনা সংকট ও প্রবল অর্থনৈতিক মন্দার মাঝেই কার্যত সব জনমত সমীক্ষায় দেখা গেছে, ট্রাম্পের থেকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছেন৷ কিন্তু ২০১৬ সালেও জনমত সমীক্ষায় পিছিয়ে থেকেও ডেমোক্র্যাট দলের হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে নির্বাচন জেতেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও এইসমস্ত সমীক্ষাকে কার্যত চ্যালেঞ্জ জানিয়ে 'জাল ভোট' বলে দেগে দেয় ট্রাম্প সমর্থকেরা। অন্যদিকে ট্রাম্প বাইডেনকে কটাক্ষ করে একটি টুইট বার্তায় লেখেন, " বাইডেনের প্রচারে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। 'নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ' ভোটাররা ৩ নভেম্বর কথা বলবেন। জাল সমীক্ষা ও খবর র্যাডিকাল বাম শক্তিকে বাঁচাতে পারবে না।"
ডিজিটাল মাধ্যমে চলছে নির্বাচনী প্রচার
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চরিত্র করোনা সংকটের কারণে আমূল বদলে গেছে। ভিড়ে ঠাসা জনসভার ঝুঁকি এড়াতে বাইডেন শুরু থেকেই ডিজিটাল মাধ্যমকে বেশি গুরুত্ব দিলেও ট্রাম্প করোনাভাইরাসের তোয়াক্কা না করেই বেশ কয়েকটি জনসভা আয়োজন করেছিলেন। এই জনসভাগুলিকে ঘিরে একাধিক বিতর্কের মুখেও পড়েছেন ট্রাম্প। বিতর্কের পর থেকে ডিজিটাল মাধ্যমেই প্রচার চালাচ্ছেন ট্রাম্প।
২০২০-তে কার দখলে হোয়াইট হাউস ?
এদিকে বাইডেন একটি টুইট বার্তায় লেখেন, "আর ১০০ দিন পর আমাদের দেশকে নতুন পথে চালিত করার সুযোগ আসছে। যে পথে আমরা আমাদের উচ্চতম আদর্শ পূরণ করতে পারি এবং সব মানুষ সাফল্যের ন্যায্য সুযোগ পায়।" এমতাবস্থায়, ২০২০ এর নির্বাচন যে বেশ হাড্ডাহাড্ডি হতে চলেছে তা নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন নেই। এখন অবশেষে হোয়াইট হাউস কার দখলে যায় সেটাই দেখার।
কলকাতা–মুম্বই–নয়ডায় আইসিএমআর-এর টেস্টিং ল্যাব, উদ্বোধনে নরেন্দ্র মোদী