তাইওয়ানে উচ্চপদস্থ মার্কিন কর্তা! চিনের সঙ্গে স্নায়ুযুদ্ধের মাঝে কোন পদক্ষেপের পথে ট্রাম্পের আমেরিকা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য সচিব অ্যালেক্স আজার তাইওয়ান যাচ্ছেন। এবং ১৯৭৯ সালে তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পর এই প্রথম কোনও উচ্চপদস্থ কর্তাকে সেদেশে পাঠাচ্ছে আমেরিকা, তাও আবার একজন ক্যাবিনেট সদস্য। সেখানে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন মার্কিন স্বাস্থ্য সচিব।
চিনের আগ্রাসী মনোভাব
গত কয়েক মাস ধরে এ অঞ্চলে সামরিক হুমকি বাড়িয়ে চলেছে চিন। তারা তাইওয়ান দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা জোরদার করছে, এমনটাই অভিযোগ করা হচ্ছে তাইওয়ানের তরফে। দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা লক্ষ করলে দেখা যাবে, চিন ধীরে ধীরে তার সামরিক প্রস্তুতি বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষত তাইওয়ানের নিকটবর্তী পানিসীমা ও আকাশসীমায় তারা এ কাজ করে চলছে। তাদের পক্ষ থেকে হুমকি বেড়েই চলছে। এই আবহে মার্কিন সরকারের এক উচ্চপদস্থ সচিবের তাইওয়ান বৈঠক এবং সেদেশের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করা নিঃসন্দেহে চিনের কাছে বড় ধাক্কা।
চিন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত
চিন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত ১৯২৭ সালে। ওই সময়ে চিন জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৯ সালে মাও জেদংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান। এখনও তারাই তাইওয়ান নিয়ন্ত্রণ করে। তাইওয়ানভিত্তিক সরকার দাবি করে, চিন কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেজিংভিত্তিক চিনা সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে। বর্তমানে তাইওয়ানকে চিনের স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
চিনের হুঙ্কার
২০২০ সালের মে মাসে তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন চিনবিরোধী নেতা সাই ইং ওয়েন। তাঁর শপথগ্রহণের পর চিনের তাইওয়ান বিষয়ক দফতরের মুখপাত্র ম্যা জিয়াওগুয়াং বলেন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার পর্যাপ্ত সক্ষমতা চিনের রয়েছে। বেজিং কখনওই কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম বা চিনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না।
দক্ষিণ চিন সাগর ঘিরে উত্তেজনা
দক্ষিণ চিন সাগরে চলছে যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আর চিনের বেড়ে চলা সামরিক শক্তি প্রদর্শন। এরই মধ্যে আমেরিকার এই পদক্ষেপে তাইওয়ানকে নিজেদের ভূ-সীমানার অংশ দাবি করা চিন ক্ষুব্ধ হয়েছে। ব্যস্ত আন্তর্জাতিক জলপথের অংশ তাইওয়ানের এই প্রণালি। এই বিষয়ে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, প্রয়োজনের তাগিদে যেকোনও দেশের জাহাজ এখানে প্রবেশ করতে পারে।