মার্কিন কংগ্রেসে প্রথম ভাষণ ট্রাম্পের, ভারতের জন্য কি আদৌও চিন্তার কারণ রয়েছে
মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার স্টেট অব্য দ্য ইউনিয়ন-এ ভাষণ দিলেন মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে। সেখানেও ফের একবার আমেরিকার জনতার প্রতি নিজের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিলেন তিনি। আমেরিকাকে আগে প্রাধান্য দিতে হবে। আইএসআইএসের সঙ্গে লড়তে হবে। দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা হবে। এমন হাজারো বক্তব্য উঠে এল ট্রাম্পের কথায়। নানা প্রসঙ্গে কী বললেন তিনি আসুন দেখে নেওয়া যাক।

কর্মসংস্থান
২০১৬ সালে নির্বাচন হওয়ার পর থেকে আমরা ২৪ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে পেরেছি। যার মধ্যে ২ লক্ষ কাজ তৈরি হয়েছে ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে। এটা অসাধারণ সাফল্য। এছাড়া বছরের পর বছর একই মুজরিতে কাজ করার পর তা বাড়ছে। কর্মসংস্থানের ফলে বেকারত্বের হার গত ৪৫ বছরে সর্বনিম্ন হয়েছে।

কর ছাড়
৪ জনের পরিবার যারা ৭৫ হাজার ডলার রোজগার করছে তাঁরা করের ক্ষেত্রে অন্তত ২ হাজার ডলার বেশি ছাড় পেতে চলেছেন। কর ছাড়ের ফলে ইতিমধ্যে ৩০ লক্ষ মানুষ তার সুবিধা পেয়েছেন।

ব্যবসায়িক লেনদেন
যুগের পর যুগ ধরে অবৈধভাবে ব্যবসা হয়েছে আমেরিকায়। এতে ক্ষতি হয়েছে আমেরিকার। আমাদের চাকরি, সম্পদ সব নিয়ে চলে গিয়েছে অন্যরা। সেই যুগ বদলে গিয়েছে। এখন থেকে ব্যবসায়িক লেনদেন হবে স্বচ্ছ্ব, যোগাযোগপূর্ণ।

মার্কিন পরিকাঠামো
আমরা আমাদের শিল্পকে ঢেলে সাজাচ্ছি। আমেরিকা সবসময় গড়তে উদ্যোগ নিয়েছে। পরিকাঠামোর ঘাটতিকে ঢাকতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ফলে শিল্প আনার পাশাপাশি পরিকাঠামোর উন্নয়ন প্রয়োজন। আমরা নতুন রাস্তা, ব্রিজ, হাইওয়ে, রেলওয়ে ও জলপথ তৈরি করব। আমেরিকাকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

সীমান্ত নীতি প্রসঙ্গে
সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করা হবে যাতে অপরাধীরা মাদক ও অন্যান্য নানা জিনিস নিয়ে এদেশে প্রবেশ কের বিশৃঙ্খলা করতে না পারে। যুগের পর যুগ ধরে খোলা সীমান্ত থাকায় এসব অবাধে হয়েছে। অনেকে ঢুকে পরে আমেরিকার দরিদ্র জনতার কাজ কেড়ে নিয়েছে। এসব এবার থেকে হবে না। আমার নজের রয়েছে আমেরিকার মানুষ। যারা দিনের পর দিন বঞ্চিত হয়েছে।

উদ্বাস্তু প্রসঙ্গে
আমার ও নির্বাচিত সমস্ত সদস্যদের কর্তব্য আমেরিকানদের স্বার্থ রক্ষা করা। উদ্বাস্তুদের জন্যও উন্নয়নমূলক নীতি নেওয়া হচ্ছে। আগে ১৮ লক্ষ উদ্বাস্তু যারা অনেক আগে পরিবারের সঙ্গে আমেরিকায় এসেছিলেন তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তাদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

অভিবাসন প্রসঙ্গে
ভিসা লটারি সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এভাবেই জঙ্গিরা অন্যের হাত ধরে এদেশে ঢুকে পড়ছিল। একজন অভিবাসী এবার থেকে অগুনতি সদস্যকে আমেরিকায় আনতে পারবেন না। একমাত্র স্বামী-স্ত্রী ও নাবালক সন্তানদের সঙ্গে থাকার জন্য আনা যাবে।

রাশিয়া ও চিন প্রসঙ্গে
জঙ্গিদের মুখোমুখি হওয়ার পাশাপাশি আমরা চিন ও রাশিয়ার মতো শক্তির চ্যালেঞ্জ নিয়ে লড়ছি। এরা আমাদের স্বার্থ, অর্থনীতি, মূল্যবোধকে চ্যালেঞ্জ করছে। তাই সেনার শক্তি বাড়াতে হবে। আমাদের পরমাণু শক্তিকে উন্নত করতে হবে। আশা করি তা ব্যবহারের প্রয়োজন কখনও পড়বে না। তবে তা এত শক্তিশালী করতে হবে যাতে তা যেকোনও শত্রুকে উড়িয়ে দিতে পারে।

আইএসআইএসের সঙ্গে লড়াই
মিত্র দেশগুলির সঙ্গে জোট বেঁধে আইএসআইএসকে বিশ্ব থেকে সরিয়ে দেবে আমেরিকা। এই প্রসঙ্গে জানাচ্ছি, আইএসকে প্রায় নির্মূল করা গিয়েছে। ইরাক ও সিরিয়ার মাত্র দশ শতাংশ এদের দখলে রয়েছে। এক বছরের মধ্যে তা সম্ভব হয়েছে। আইএস ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই জারি থাকবে।

জেরুসালেম প্রসঙ্গে
একমাস আগেই জেরুসালেমকে ইসরালেয়ের রাজধানী বলে আমরা ঘোষণা করেছি। আফগানিস্তানে জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, জঙ্গিরা হাসপাতালে গিয়ে বোমা রেখে আসছে। এদের নিধন ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই।

উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে
উত্তর কোরিয়ায় যেভাবে অপশাসন চলছে এমন নজির আর কোথাও নেই। উত্তর কোরিয়া আমাদের হুমকি দিচ্ছে। এই অবস্থা বন্ধ করতে হবে। আমি আগের শাসকদের মতো ভুল পথে হাঁটব না। সেই পথে হেঁটেই আমরা ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছেছি।