আমেরিকায় নির্বাচন ২০২০ : সামাজিক মাধ্যম কি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে?
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রচারণার উত্তাপ শুধু যে দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর গায়ে এসেই লাগছে তাই নয় - সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলোকে লক্ষ্য করেও উঠছে নিত্য নতুন অভিযোগ।
অভিযোগের মূল কথা হলো: সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলো তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করছে।
বিশেষ করে সাম্প্রতিক একটি ঘটনার প্রতিক্রিয়া হয়েছে খুবই ক্রুদ্ধ।
ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেনের ছেলে হান্টারের কথিত কিছু ইমেইলের স্ক্রিনশটসহ একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল নিউইয়র্ক পোস্ট পত্রিকা। কিন্তু টুইটার ব্যবহারকারীরা যখন সেই রিপোর্টের লিংক টুইটারে পোস্ট করতে গেলেন তখন টুইটার সেটা ব্লক করেছিল।
টুইটারের বক্তব্য ছিল, তারা এটা করেছে কারণ তাদের নীতিমালায় আছে যে হ্যাকিং-এর মাধ্যমে পাওয়া কোন দলিল এ প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা যাবে না।
এতে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
টুইটার তখন তাদের যুক্তিগুলো ঠিকমত ব্যাখ্যা করতে না পারার জন্য দু:খ প্রকাশ করে।
তবে অনেক রিপাবলিকান সমর্থকের চোখে এটা ছিল চূড়ান্ত প্রমাণ যে সামাজিক মাধ্যমগুলো রক্ষণশীলদের বিরুদ্ধে পক্ষপাত দেখাচ্ছে।
টেড ক্রুজের মত সিনিয়র রিপাবলিকানরা মনে করেন, নিউইয়র্ক পোস্টের ওই বিশেষ রিপোর্টটি যদি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপারে হতো - তাহলে টুইটার এ আচরণ করতো না ।
অভিযোগটা অনেক দিন ধরেই করা হচ্ছে যে সিলিকন ভ্যালি ভেতরে ভেতরে উদারনৈতিক, এবং তাদের প্ল্যাটফর্মগুলোতে কোনটা গ্রহণযোগ্য আর কোনটা নয় - তার মীমাংসা করার ক্ষেত্রে এদের অনেক সমস্যা আছে।
রক্ষণশীলদের অভিযোগের মূলকথা
রক্ষণশীলরা যখন পক্ষপাতের অভিযোগ করে তখন তারা যা বলতে চাইছে তা হলো সামাজিক মাধ্যমে কনটেন্ট যাচাই-বাছাই করার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা রক্ষা করা হচ্ছে না।
তারা মনে করে যে তাদের পোস্টগুলো অতিমাত্রায় সেন্সর করা হয় বা দমন করা হয়।
কিন্তু সামাজিক মাধ্যম যে পক্ষপাতদুষ্ট এমন অভিযোগ নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করাটা কঠিন।
এটা ঠিক যে ফেসবুক বা টুইটার অনেক ক্ষেত্রেই গোপনীয়তা রক্ষা করে। তাদের সব উপাত্ত তারা অন্যকে জানতে দেয় না এবং তাদের এ্যালগরিদমগুলো ঠিক কিভাবে কাজ করে তা প্রকাশ করে না।
এর ফলে রিপাবলিকানরা যখন কিছু একটা অন্যায় করা হয়েছে বলে রব তোলে - সেটা প্রায়ই কোন একটা নির্দিষ্ট ঘটনাকে অবলম্বন করে তোলা অভিযোগ। তারা যেটা বলতে চায় তা হলো, ওই একটি ঘটনা থেকেই বৃহত্তর প্রবণতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো অবশ্য এরকম কোন পক্ষপাতিত্বের কথা অস্বীকার করে থাকে।
তবে এটা ঠিক যে বেশ কিছু কোম্পানি সম্প্রতি মডারেশনের ক্ষেত্রে ( কোন কনটেন্ট তাদের প্ল্যাটফর্মে দেখানো যাবে কি যাবে না তা যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে) সরাসরি হস্তক্ষেপের নীতি নিয়েছে।
সংবাদপত্রের ক্ষেত্রে বলা যায়: কী ছাপানো যাবে আর কী যাবে না - সম্পাদকদের এরকম ইস্যু প্রতিদিন মোকাবিলা করতে হয়। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো অনেকটা তাই করতে শুরু করেছে।
মার্কিন সেনেটে প্রশ্নের মুখোমুখি সোশাল মিডিয়া প্রধানরা
বুধবার মার্কিন সেনেটের একটি কমিটির সামনে হাজির হতে হয়েছিল ফেসবুক, টুইটার ও গুগলের প্রধানদের।
সেখানে তাদেরকে এই পক্ষপাতের ইস্যুতেই রাজনীতিবিদদের দিক থেকে কড়া কড়া প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় ।
টুইটারের নীতিমালা অনুযায়ী তারা বিভিন্ন কনটেন্ট মুছে দিতে পারে বা তাকে ভুয়া তথ্য (মিসইনফরমেশন) বলে চিহ্নিত করতে পারে।
বিশেষ করে এ নিয়ে সেনেটরদের তোপের মুখে পড়েছিলেন টুইটারে প্রধান জ্যাক ডরসি।
তাকে প্রশ্ন করা হয়: কেন টুইটার ডাকযোগে দেয়া ভোটের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পোস্টের গায়ে লেবেল সেঁটে দেয় - কিন্তু ইরানের আয়াতোল্লাহ খামেনি যখন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সহিংসতার হুমকি দেন, তখন তাতে কিছুই করা হয়না?
তখন মি. ডরসি বলতে বাধ্য হন যে ইরানি নেতার টুইটকে সামরিক শক্তি প্রদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল যা তাদের নীতির লংঘন নয়।
নিউইয়র্ক পোস্ট পত্রিকায় হান্টার বাইডেন সংক্রান্ত রিপোর্টটি নিয়ে টুইটার প্রধানকে তীব্রভাবে আক্রমণ করেন রিপাবলিকান সেনেটর টেড ক্রুজ।
"মি, ডরসি, কার ভোট পেয়ে আপনি এমন এক জায়গায় গিয়ে বসেছেন যে মিডিয়া কি রিপোর্ট করবে-না-করবে বা আমেরিকার জনগণ কি শুনতে পারবে-না-পারবে - তা আপনি ঠিক করে দেবেন? কেন আপনি ডেমোক্র্যাটদের প্রচারণা গোষ্ঠীর মত আচরণ করছেন, আপনার রাজনৈতিক বিশ্বাসের বিপরীত মতামতের কণ্ঠরোধ করছেন?" - প্রশ্ন করেন ক্রুজ।
'আমি আপনার উদ্বেগ শুনেছি এবং স্বীকার করছি" - জবাব দেন ডরসি, তারপর তিনি টুইটারের কনটেন্ট যাচাই-বাছাইয়ের ব্যাপারে আরো স্বচ্ছতার কথা বলেন।
শুধু রিপাবলিকানরাই যে এ ব্যাপারে বিচলিত হয়ে পড়েছেন তা নয়।
ওই কমিটির ডেমোক্র্যাট সদস্যরা বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোকে জঙ্গী ঘৃণা-ছড়ানো গোষ্ঠীগুলোর উত্থানে মদদ দেবার অভিযোগ করেন।
সেনেটর গ্যারি পিটার্স এবং এ্যামি ক্লোবুশার ফেসবুকের তীব্র নিন্দা করে অভিযোগ করেন, তারা লোকজনকে উগ্রপন্থায় দীক্ষিত করার ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখছে।
এদের মধ্যে এমন একটি গোষ্ঠীও আছে যারা যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্যের গভর্নরকে অপহরণ করার ষড়যন্ত্র করছিল বলে অভিযোগ আছে।
ক্লোবুশার বলেন, "সম্প্রতি কিছু জরিপে দেখা গেছে আপনাদের কিছু এ্যালগরিদম মানুষকে বিভেদ সৃষ্টিকারী কনটেন্টের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এটা আমাদের রাজনীতির যে ক্ষতি করছে তা কি আপনাকে বিচলিত করে?"
ফেসবুকের প্রধান মার্ক জাকারবার্গ বলেন,"সেনেটর আপনি যেভাবে এই সিস্টেম কাজ করে বলে বর্ণনা করছেন, তার সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করি। আমরা মানুষকে সেই কনটেন্টই দেখাই যা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।"
আমেরিকান জনগণ কি মনে করে?
আগস্ট মাসে পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপে আভাস মেলে, রিপাবলিকানদের ৯০ শতাংশই মনে করে যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাজনৈতিক মতামত সেন্সর করা হয়। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে এই মত পোষণ করেন ৫৯ শতাংশ লোক।
তাহলে কি তাদের ধারণাটায় কিছুটা সত্য আছে?
রিপাবলিকানদের সমালোচনার একটা বক্তব্য হলো: ফেসবুকে এ্যালগরিদম রক্ষণশীলদের মতামতকে দমন করে থাকে। কিন্তু ফেসবুকের ক্ষেত্রে উপাত্ত থেকে এর প্রমাণ মেলে না।
ক্রাউডট্যাঙ্গল নামে ফেসবুকের মালিকানাধীন একটি জরিপকারী 'টুল' প্রতিদিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় পোস্টগুলোর একটা হিসেব দিয়ে থাকে।
এতে দেখা যায়, যে কোন দিনেই শীর্ষ জনপ্রিয় ১০টি পোস্টের মধ্যে অধিকাংশেরই লেখক হচ্ছেন দক্ষিণপন্থী ভাষ্যকাররা। যেমন ড্যান বনজিনো বা বেন শাপিরো । এর সাথে ফক্স নিউজ বা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পোস্টগুলোও আছে।
মি. ট্রাম্পের ফেসবুক পেজের ফলোয়ার সংখ্যা ৩ কোটি ২০ লাখ - তার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের দশ গুণ।
এখন ফেসবুকের বিরুদ্ধে যদি দক্ষিণপন্থী কনটেন্ট দমনের অভিযোগ ওঠে তাহলে বলতেই হবে যে তারা কাজটা মোটেও ভালোভাবে করতে পারছে না।
তাহলে কি বামপন্থী কনটেন্টের চাইতে ডানপন্থী কনটেন্টকে বেশি আনুকুল্য দেখানো হচ্ছে?
ব্যাপারটা এত সহজ-সরল নয়।
ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া স্টাডিজের অধ্যাপক সিভা বৈদ্যনাথন বলছেন, "এটাকে বামপন্থী-বনাম-দক্ষিণপন্থী এভাবে দেখলে ভুল হবে। আসলে পক্ষপাতটা হচ্ছে এমন কনটেন্টের দিকে যা জোরালো আবেগ জাগিয়ে তোলে।"
"আমেরিকার সামাজিক মাধ্যমে কিছু উগ্র-দক্ষিণপন্থী পোস্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। তাদের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করে না যে এ প্ল্যাটফর্মটির কাঠামোর ভেতরেই পক্ষপাত আছে" - বলেন তিনি।
তবে যে পোস্টগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় - সেগুলোর দিকে তাকালে আপনি বুঝতে পারবেন কেন এর ফাঁদে তুলনামূলকভাবে ডানপন্থী কনটেন্ট বেশি আটকা পড়ে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং রিপাবলিকানদের অনেকে মনে করে যে ডাকযোগে দেয়া ভোটে কারচুপি হতে পারে। কিন্তু খুব কম ডেমোক্র্যাটই তা মনে করে।
ফেসবুকের জাল-ভোটার সংক্রান্ত কনটেন্ট ভুয়া খবর বলে লেবেল সেঁটে দেবার নীতি আছে - কারণ তাদের যুক্তি অনুযায়ী এটা মার্কিন নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর আস্থা বিনষ্ট করতে পারে।
কিন্তু তার পরও রিপাবলিকানরা অনেক বেশি মাত্রায় এর শিকার হয়।
ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার
বর্ণবাদ-বিরোধী ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার ইস্যুটির দিকে তাকানো যাক।
ফেসবুক প্রধান মার্ক জাকারবার্গ নিজে এ আন্দোলনের প্রতি খোলাখুলি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু ফেসবুকে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটারের পেজে ফলোয়ারের সংখ্যা মাত্র ৭ লাখ ৪০ হাজারের কিছু বেশি।
অন্যদিকে ব্লু লাইভস ম্যাটার নামে আরেকটি ফেসবুক পেজ আছে - যা পুলিশ কর্মকর্তাদের সমর্থন করে এবং বর্ণবাদের ক্ষেত্রে পুলিশ-বিরোধিতার বিপরীতে তাদের অবস্থান। এটির বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগও উঠেছে। তবে গ্রুপটির প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস্টেফার বার্গ তা অস্বীকার করেন।
এই পেজটির ফলোয়ারের সংখ্যা ২৩ লাখ।
মি বার্গ মনে করেন ফেসবুক রক্ষণশীল মতামতের বিরুদ্ধে পক্ষপাত দেখাচ্ছে। কিন্তু তার পেজের জনপ্রিয়তা দেখে কি তা সঠিক মনে হয়?
মি. বার্গ বলেন, "আমি এসব সংখ্যার কথা বলছি না। আমি বলছি পর্দার পেছনে কি হচ্ছে, ...যেমন একটা পেজকে ডিমনিটাইজ করার মতো পদক্ষেপের কথা ।"
ফেসবুক যদি স্থির করে যে কোন একটি পেজ তাদের নিয়ম লঙ্ঘন করছে - তাহলে তারা ওই পেজে আসা বিজ্ঞাপন ও চাঁদা থেকে অর্থ আয় করার পথ বন্ধ করে দেয়।
মি বার্গ মনে করেন, এধরনের পক্ষপাত সহজে চোখে পড়ে না এবং দক্ষিণপন্থী পেজগুলোর ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি বেশি।
কিন্তু এ অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন কারণ ফেসবুক এই তালিকা কখনো প্রকাশ করে না যে কোন কোন পেজের বিরুদ্ধে তারা ব্যবস্থা নিয়েছে।
টুইটারের ক্ষেত্রে কী হচ্ছে?
টুইটার অবশ্য ফেসবুকের চাইতে অনেক আলাদা।
এর ব্যবহারকারীদের খুব সামান্য একটি অংশ নিয়মিত তাদের নিজেদের কনটেন্ট পোস্ট করে থাকে।
সম্প্রতি পিউ এর এক জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে নিয়মিত পোস্ট করেন এমন প্রাপ্তবয়স্ক টুইটারদের ৭০ শতাংশই ডেমোক্র্যাট।
এর ফলে টুইটারকে হয়তো অধিকতর উদারনৈতিক প্ল্যাটফর্ম বলা যায়, কিন্তু এখানে রক্ষণশীলদের বিরুদ্ধে পক্ষপাত করা হচ্ছে এমন অভিযোগ প্রমাণ করা কঠিন।
উদাহরণ হিসেবে কোভিড-১৯এর ক্ষেত্রে কী হয়েছে তা দেখা যাক।
এটা ঠিক যে টুইটার মি. বাইডেনের তুলনায় মি ট্রাম্পের টুইটগুলোর বিরুদ্ধে বেশি ব্যবস্থা নিয়েছে। মি. ট্রাম্প একটি টুইটে বলেছিলেন যে কোভিডের চেয়ে ফ্লু বেশি বিপদজনক।
কিন্তু জরিপে এটাও দেখথা গেছে যে কোভিডের ব্যাপারে মি. ট্রাম্পের ভুয়া তথ্য ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরিপে দেখা গেছে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হচ্ছেন কোভিড নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানোর সবচেয়ে বড় উৎস। তাহলে তিনি যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টুইটারের মডারেটরের লক্ষ্যবস্তু হবেন তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই ।
সামাজিক মাধ্যমের সংকট
ঠিক এই কারণেই সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলোর হয়তো তাদের প্ল্যাটফর্মে কী প্রকাশ করা যাবে বা যাবে না - তা মডারেট না করাটাই ভালো। কারণ, এটা করা শুরু করলেই আপনি রাজনীতির ভেতরে ঢুকে পড়বেন।
কিছু রিপাবলিকান নেতা মনে করেন, সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে যে কোন রকম সম্পাদনাই মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপের শামিল।
মার্চ মাসে এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এতে বলা হয়, "ইন্টারনেটে আমেরিকানরা কী দেখতে পারবে বা বলতে পারবে তা সীমিতসংখ্যক কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ঠিক করে দেবে - এটা আমরা হতে দিতে পারি না।'
অন্যভাবে বলা যায় যে এরকম কোন সিদ্ধান্তকে দার্শনিকভাবে রক্ষণশীল-বিরোধী হিসেবে দেখা যেতে পারে।
মি. ট্রাম্প আরো বলেছেন, কমিউনিকেশন্স ডিসেন্সি এ্যাক্ট নামে যে আইন আছে তার ২৩০ ধারাটি তিনি অপসারণ করবেন।
এতে সামাজিক মাধ্যমে লোকে যা পোস্ট করে তার জন্য কোম্পানিগুলো দায়ী হবার হাত থেকে রক্ষা পাবে, এবং এর অনুপস্থিতি সামাজিক মাধ্যম শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
অন্যদিকে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো যদি কিউএ্যানন ষড়যন্ত্র, ঘৃণাসূচক বক্তব্য বা এরকম কোন নিষিদ্ধ কর্মকান্ডের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার নীতি নেয় - তাহলে তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠবেই।
এসব পক্ষপাতের অভিযোগ প্রমাণ করা যত কঠিন, অ-প্রমাণ করাটাও ততটাই কঠিন।
সামাজিক মাধ্যম কোম্পানিগুলো এখন এমনি একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। তারা নিজেরা অবশ্য পক্ষপাতের অভিযোগ অস্বীকার করে চলেছে।
তবে অনেক আমেরিকানই তাদের কথা বিশ্বাস করেন না।
(উত্তর আমেরিকান প্রযুক্তি বিষয়ক রিপোর্টর জেমস ক্লেটনের একটি রিপোর্ট অবলম্বনে। )
আরও পড়তে পারেন:
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আমেরিকার নির্বাচনে কতটা প্রভাব ফেলবে?
সামাজিক মাধ্যমে গুজব বন্ধ করা কি সম্ভব? কীভাবে ?
'সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি মাদকের চেয়েও ভয়াবহ'
যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়া আপনার ব্যবসা ধ্বংস করতে পারে
ফেসবুক থেকে এক মাস দুরে থাকা কি সম্ভব?