মাঝরাতে সহকর্মীর হাঁকডাকেই ভাঙল ঘুম! নোবেল জয়ের খবরে হতবাক মার্কিন অর্থনীতিবিদ
ঘড়িতে তখন রাত ২.১৫। ঘুমিয়েই ছিলেন অঘোরে, আর মাঝেই তুমুল হাঁকডাক, দরজায় টোকা। তাতেই মাঝরাতে বিশ্রীভাবে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় প্রাথমিক ভাবে বিরক্তই হয়েছিলেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল আর মিলগ্রোম। কিন্তু তারপরেই এল আসল সুখবর। যাতে রীতিমতো বিহ্বল হয়ে পড়লেন মিলগ্রোম। জানতে পারলেন এই বছরের অর্থনীতি আর এক খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ রবার্ট বি উইলসনের সঙ্গে নোবেল প্রাপকের তালিকায় নাম উঠেছে তাঁরও। আথর তারপরেই কোনোভাবেই উচ্ছ্বাস ধরে রাখতে পারলেন না তিনি। সম্প্রতি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে করা টুইট বার্তায় তার পুরো ভিডিওটিই ভাইরাল হয়েছে নেটপাড়ায়।

কেন সবকর্মীর থেকে খবর পেলেন পল?
অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়ার খবর নোবেল কমিটির পক্ষ থেকেই জানানোর কথা। কিন্তু নোবেল কমিটির বক্তব্য, মাঝরাত্রে পলকে ফোন করা হলেও তাঁকে ধরা যায়নি। পলের বন্ধু উইলসনও একইসাথে নোবেল পেয়েছেন। ফলে একরকম উছ্বসিত হয়েই প্রতিবেশী পলের দরজায় সে রাতেই হানা দিয়েছিলেন উইলসন। সুইডেনের স্টকহোমে দিনের আলো ফুটে গেলেও সেই একই সময়ে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রায় মাঝরাত। স্বভাবতই পল মিলগ্রোমের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি নোবেল কমিটির পক্ষে।

মিলগ্রোমের ডোর-ক্যামেরায় ভিডিও!
আমেরিকার পশ্চিম তটে অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া তখন নিদ্রাচ্ছন্ন! মিলগ্রোমের দরজায় বসানো ক্যামেরায় ধরা পড়েছে উইলসন ও পলের কথোপকথনের ভিডিও। সেই ভিডিওটি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ট্যুইটারে পোস্ট করা হয় বলে খবর। ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, প্রতিবেশী ও সহকর্মী উইলসন তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে পলের দরজায় এসে টোকা দিচ্ছেন। বেশ কয়েকবার টোকা দেওয়ার পর পল সারা দেন এবং নোবেলপ্রাপ্তির খবর জানতে পারেন। নিলাম তত্ত্বের উপর অভাবনীয় কাজ করে যাঁরা সাড়া ফেলে দিয়েছেন, তাঁদেরই একজন যে এত হাঁকডাকের মাঝে নিদ্রারত, সে খবরই মজা পেয়েছেন নেটিজেনরা।

কথোপকথনের রেকর্ড ক্যামেরায়
এদিকে পল মিলগ্রোমের ডোর-ক্যামেরায় ধরা পড়েছে পল আর উইলসনের কথোপকথনের পুরো দৃশ্যই। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুইট বলছে, মিলগ্রোমের স্ত্রী সেসময়ে স্টকহোমে ছিলেন, তাঁর মোবাইলের সাথে ডোর-ক্যামেরা সংযুক্ত। দরজায় টোকার খবর ফোনে পাওয়ার পরই মিলগ্রোমের স্ত্রী পুরো কথোপকথন দেখেন যা তাঁর মোবাইলে রেকর্ড হয়। ভিডিওয় দেখা যায়, পল সাড়া দেওয়ার পর উইলসন বলছেন, "পল, আমি বব উইলসন তুমি নোবেল পেয়েছো। ওদের তরফে তোমাকে জানানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু মনে হয় ওরা তোমাকে ফোনে পায়নি।" ঘটনার আকস্মিকতায় পল অবাক হয়ে বলেন, "তাই? আমি নোবেল পেয়েছি!" উত্তরে উইলসনের স্ত্রী জানান, "এইবার তো অন্তত ফোনটা তুলুন!"

নোবেল কমিটির ফোন না তোলার ঘটনা নতুন কিছু নয়
নোবেল কমিটির এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, "নোবেল কমিটির ফোন না তোলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এর আগেও ২০১০ সালে এমনই ঘটনা ঘটেছিল।" জানা যায়, রসায়নে নোবেল পান মার্টিন শ্যালফি, ওশামি শিমোমুরা এবং রজার ওয়াই. সিয়েন। যদিও নোবেল কমিটির ফোন যখন আসে, তখন মার্টিন শ্যালফি ছিলেন গভীর ঘুমে। শ্যালফির কথায়, "আমি যথারীতি সকাল ৬.১০-এ উঠে নোবেল কমিটির একজনকে ফোন করে কৌতূহলবশত জিজ্ঞাসা করি যে এবছর রসায়নে কারা নোবেল পেলেন?" শ্যালফির জানান, কথা বলতে বলতেই ল্যাপটপ খুলে তিনি অবাক হয়ে যান যে, পুরস্কারজয়ী বিজ্ঞানী তিনি নিজেই!
ছবি সৌ:টুইটার
ঘরে আটকে পড়া 'হাতি' চিনের বিরুদ্ধে দিল্লি-ওয়াশিংটন জোট, বিশেষ বার্তা আমেরিকার