কাশ্মীরে আটক রাজনৈতিক নেতাদের ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল মার্কিন কূটনীতিবিদের
জম্মু ও কাশ্মীরে আটক রাজনৈতিক নেতাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্যে ভারত সরকারের কাছে আবেদন জানালেন আমেরিকার বিদেশ দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের সহকারী সচিব অ্যালিস ওয়েলস। ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এই বিষয়ে অ্যালিস ওয়েলস বলেন, 'আমরা ভারত সরকারকে বরাবর বলে এসেছি, যে রাজনৈতিক নেতাদের নামে নির্দিষ্ট অভিযোগ নেই তাঁদের মুক্তি দিন।'
বিদেশি কূটনীতিকদের কাশ্মীর সফরে যেতে দেওয়া সঠিক
কাশ্মীর প্রসঙ্গে অ্যালিস ওয়েলস আরও বলেন, 'মার্কিন দূত ও অন্যান্য বিদেশি কূটনীতিকদের যেভাবে কাশ্মীরে যেতে দেওয়া হয়েছে তা সরকারের পক্ষে সঠিক পদক্ষেপ। ভারত সরকার সেখানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। ইন্টারনেট পরিষেবা আংশিক চালু হয়েছে। সেই সঙ্গে ভারত সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, আমাদের কূটনীতিকদের নিয়মিত সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক।'
এখনও বন্দি তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
এর আগে জম্মু ও কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সফরের আগেই চারজন কাশ্মীরি রাজনীতিবিদকে মুক্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা করে জম্মু ও কাশঅমীর প্রশাসন। জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসনের তরফে এই বিষয়ে জানানো হয় যে ন্যাশনাল কনফারেন্সের নাজির গুরেজি, পিডিপি-র আবদুল পক খান, পিপলস কনফারেন্লের মহম্মদ আব্বাস বানি ও কংগ্রেসের আবদুল রশিদকে শুক্রবার সন্ধ্যায় মুক্তি দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর থেকেই তাদেরকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিল। এর আগে ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর ৪ মাস বন্দী থাকার পর মুক্তি দেওয়া হয় পাঁচ রাজনীতিবিদকে। তবে এখনও বন্দি রয়েছেন প্রাক্তন তিন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহ, তাঁর ছেলে ওমর আব্দুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতি।
সিএএ নিয়েও কথা বলেন ওয়েলস
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই রাইসিনা ডায়লগ-এ যোগ দিতে দিল্লিতে এসেছিলেন অ্যালিস ওয়েলস। ভারতে এসে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতার দৃশ্য দেখেন তিনি। সেই বিষয়েও সাংবাদিকদের কাছে মুখ খোলেন তিনি। এই বিষয়ে তিনি বলেন, 'ভারতে গিয়ে বুঝতে পারলাম, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সেখানে কী ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে খুব জোরদার আলোচনা চলছে ভারতে। বিষয়টি নিয়ে অনেকে পথে নেমেছেন। রাজনৈতিক বিরোধীরা সরব হয়েছেন। মিডিয়ায়, কোর্টে, সব জায়গায় ওই আইন নিয়ে চর্চা হচ্ছে। আমরা বরাবরই বলে আসছি আইনত সকলেরই সমান সুরক্ষা পাওয়া উচিত।'
'ভারতের বিদেশনীতি অনেক আক্রমণাত্মক হয়েছে'
ভারতের বিদেশ নীতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'একসময় এই দেশ আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানাত না। কিন্তু গত দুই দশকে পরিস্থিতি বদলেছে। এই বিগত দশকগুলি ধরে তারা নিজেদের স্বার্থে মুখ খুলছে। ভারতের বিদেশনীতি অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে।'