আচমকা কাবুল দূতাবাস থেকে কূটনীতিকের সংখ্যা অর্ধেক করতে তৎপর ওয়াশিংটন: রিপোর্ট
আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছুঁচো-গেলা অবস্থার কথা আমরা অল্পবিস্তর সবাই জানি। প্রায় দুই দশক ধরে সে দেশের সমস্যার সামরিক সমাধান করে উঠতে পারেনি ওয়াশিংটন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি দুনিয়া।
আফগানিস্তানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছুঁচো-গেলা অবস্থার কথা আমরা অল্পবিস্তর সবাই জানি। প্রায় দুই দশক ধরে সে দেশের সমস্যার সামরিক সমাধান করে উঠতে পারেনি ওয়াশিংটন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি দুনিয়া। সামরিক সমাধানের পথ বেশিদূর এগোবে না বুঝে এবারে খোদ তালিবানের সঙ্গে আলোচনার পথে এগিয়েছে ওয়াশিংটন। এখনও সেরকম রফাসূত্র বেরিয়ে যদিও আসেনি; উপরন্তু আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তালিবানের বোঝাপড়ার সম্ভাবনা বেশ কঠিন হওয়ার দরুন সমস্ত শান্তিপ্রক্রিয়াটি এখনও যথেষ্ঠ নড়বড়ে।
আর এবারে, এই নড়বড়ে শান্তিপ্রক্রিয়ার মধ্যেই মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পিও জানিয়েছেন যে কাবুলে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসে কর্মীদের সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেক করা হবে।
মে মাসের শেষের দিকে তড়িঘড়ি কূটনীতিক প্রত্যাহার পরিকল্পনা মার্কিনিদের
রয়টার্স-এর একটি বিশেষ প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে যে পম্পিও মে মাসের শেষের দিকে তাঁর এই কর্মীহ্রাসের পরিকল্পনাটি লাগু করতে তৈরী হচ্ছেন। লক্ষ্য, সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সমস্ত প্রক্রিয়াটিকে শেষ করা। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন আধিকারিকদের মতে এই পদক্ষেপ হয়তো সময়োপযোগী হচ্ছে না, রয়টার্স আরও জানিয়েছে।
একদিকে যখন মার্কিন-তালিবান শান্তি আলোচনা যখন শম্বুকের গতিতে এগোচ্ছে, তখন তাঁর পরিকল্পনার এক বছর আগেই এই ব্যাপক কূটনৈতিক পদক্ষেপ অনেক মহলেই চমক সৃষ্টি করেছে।
এই খবরে আনন্দিতই হবে তালিবান
রয়টার্স এও জানিয়েছে যে তালিবানের কাছে মার্কিন দূতাবাসের কর্মীসংখ্যা হ্রাসের খবরটি যথেষ্ঠ আনন্দ সহকারে গৃহীত হবে। কাবুলে মার্কিন শক্তির উপস্থিতির এক অন্যতম বড় পরিচায়ক হচ্ছে তাদের দূতাবাসের কলেবর বৃদ্ধি। ৯/১১ সন্ত্রাস হানার পরে আফগানিস্তানে মার্কিন আক্রমণের পর থেকেই এই দূতাবাসের আকৃতি দিনে দিনে বেড়েছে। বছর চারেক আগে এই দূতাবাসের পরিসরটিকে বাড়ানোর জন্যে ৮০০ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত খরচ করা হয়েছে। সেখান থেকে এখন লোক কমানো হলে তা অবশ্যই তালিবানদের কাছে বিরাট সুখবর।
রয়টার্স-এর প্রতিবেদনটি একজন মার্কিন আধিকারিককে উদ্ধৃত করে বলেছে যে কাবুল দূতাবাস থেকে কর্মীসংখ্যা কমানোর পদক্ষেপটিকে আসলে দেখা উচিত রাশিয়া ও চিনের মতো বড় শক্তিগুলির সঙ্গে টক্কর দেওয়ার জন্যে অন্যত্র কূটনৈতিক লোকবল বাড়ানো হিসেবে।
ক্ষুব্ধ হবে কাবুলের নির্বাচিত সরকার
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে যাই সাফাই দেওয়া হোক না কেন, একথা পরিষ্কার যে আফগানিস্তানের মাটি থেকে ক্রমশ নিজেদের প্রত্যাহার করে নিতে ট্রাম্প প্রশাসন অধৈর্য্য হয়ে পড়েছে যদিও তার অন্যতম বড় পরিণতি যে কাবুলের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে ওয়াশিংটনের সম্পর্কের অবনতি (বিশেষ করে এখন নির্বাচনের দোরগোড়ায়), তা বুঝতে অসুবিধে হয় না।