২০৩০ সালে বছরে ৫৬০টি সর্বনাশা বিপর্যয়ের শিকার হবে পৃথিবী, প্রতিবেদন জাতিসংঘের
২০৩০ সালের মধ্যে মানুষ প্রতি বছর ৫৬০টি বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। মানুষ সর্বনাশা বিপর্যয়ের শিকার হবে বলে জানানো হয়েছে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে মনে করছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। এই বিপর্যয় এমনই বিধ্বংসী রূপ নেবে যা বিশ্বব্যাপী জীবন ও জীবিকাকে প্রভাবিত করতে পারে৷


বিশ্বে বছরে প্রায় ৫৬০টি বিপর্যয়
জাতিসংঘের একটি নতুন প্রতিবেদন বিশ্ব-পরিস্থিতির একটি ভয়ঙ্কর চিত্র তুলে ধরেছে। যে চিত্র ইঙ্গিত দেয় যে আগামী বছরগুলিতে পৃথিবী আরও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে চলেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রবণতা যদি নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্ব বছরে প্রায় ৫৬০টি বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

৪০০টিরও বেশি দুর্যোগ হচ্ছে পৃথিবীতে
২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৪০০টিরও বেশি দুর্যোগ হচ্ছে পৃথিবীতে। এই দুর্যোগের মধ্যে রয়েছে বন্যা, ঝড়, ভূমিকম্প, মহামারী বা রাসায়নিক দুর্ঘটনাও। বৈজ্ঞানিকরা জানিয়েছেন, "জলবায়ু পরিবর্তন বা জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপদের মাত্রা, ফ্রিকোয়েন্সি, সময়কাল এবং তীব্রতা বাড়িয়ে তুলছে। এই দুর্যোগের ফলে ক্ষয়ক্ষতি হবে বহু পরিমাণে। বিপর্যয় বাড়বে। ১৯৭০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বছরে ৯০ থেকে ১০০টি মাঝারি থেকে বড় আকারের দুর্যোগে।

২০৩০ সালে চরম তাপপ্রবাহ হবে
প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে, ২০৩০ সালে চরম তাপপ্রবাহের সংখ্যা ২০০১ সালের তুলনায় তিনগুণ হবে এবং ৩০ শতাংশ বেশি খরা হবে। ইতিমধ্যে, এটি কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথাই বলে না বরং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট কোভিড-১৯, অর্থনৈতিক মন্দা এবং খাদ্য ঘাটতির দিকেও নজর দেয়।

দুর্যোগের প্রভাবও বৃদ্ধি যে কারণে
জলবায়ু পরিবর্তন আরও চরম পরিস্থিতি ঘটাতে পারে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে। দুর্যোগের প্রভাবও বৃদ্ধি পেয়েছে এর ফলে। যদি আমরা এই পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে না পারি, তবে দুর্যোগের পরিণতি ভয়াবহ রূপ নেবে। জাতিসংঘ দুর্যোগ-ঝুঁকি সম্বন্ধে সাবধান করেছে বিশ্ববাসীকে।

দুর্যোগের ফলে ১৭০ বিলিয়ন ডলার খরচ হবে বছরে
১৯৯০ সালে দুর্যোগে বিশ্বে বছরে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। এখন সেটা বছরে ১৭০ বিলিয়ন ডলার হবে। মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়ছে। এর মধ্যে পরোক্ষ খরচ অন্তর্ভুক্ত নেই বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল আমিনা জে মহম্মদ নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।

দুর্যোগগুলি উন্নয়নশীল দেশগুলিকে প্রভাবিত করে
তিনি বলেছেন, "আমাদের জীবনযাপন নির্মাণ এবং বিনিয়োগ মানবতাকে একটি সর্পিল দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তার ফলে দুর্যোগের ঝুঁকি আরও বাড়ছে। তা থেকে বাঁচতে বিশ্বকে আরও বেশি কিছু করতে হবে। আত্মতুষ্টি নিয়ে বসে থাকলে হবে না। আমাদের আর বেশি সচেষ্ট হতে হবে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্যোগগুলি উন্নয়নশীল দেশগুলিকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করে। এর ফলে প্রতি বছরে গড়ে ১ শতাংশ জিডিপি হারায় উন্নয়নশীল দেশগুলি, উন্নত দেশগুলি ০.১ থেকে ০.৩ শতাংশ জিডিপি হারায়।
ভাত খেলেও নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস! শুধু মাত্র একটি কাজ করতে হবে