নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশের পরবর্তী পরিস্থির উপর নজর রাখছে রাষ্ট্রসংঘ
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ পরবর্তী পরিস্থির উপর নজর রাখছে রাষ্ট্রসংঘ
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে চলতে থাকা উত্তর-পূর্বের পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়ে দিল রাষ্ট্রসংঘ। এই বিষয়ে রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র অ্যান্টোনিও গুতেরেস এই বিষয়ে বলেন, 'ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হওয়ায় কী কী হতে পারে তার উপর আমাদের নজর রয়েছে। কোনও ভাবে এই আইন মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণার পরিপন্থি কি না তা দেখা হবে। আমরা আশা করি ভারত সেই সব নজরে রাখবে।'
নজর রাখছে ট্রাম্প প্রশাসনও
এর আগে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের ঘটনা পরম্পরার ওপর খুব কাছ থেকে নজর রাখছে বলে জানায় ওয়াশিংটন। বৃহস্পতিবার সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, 'নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের ক্রমবর্ধমান বিকাশের ওপর আমরা খুব কাছ থেকে নজর রাখছি। এই আইনের অধীনে ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সম্মান এবং সমান আচরণ আমাদের দু'টি গণতন্ত্রের মৌলিক নীতি।' তিনি আরও বলেন, 'আমেরিকা ভারতকে আর্জি জানিয়েছে যে দেশের সংবিধান ও গণতান্ত্রিক মূল্য অনুযায়ী ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষিত করতে হবে।'
নতুন আইনে কী সংশোধন?
১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করেই এই নতুন সংশোধনী আনা হয়। আগে ভারতের নাগরিকত্ব পেতে কোনও শরণার্থীকে অন্তত ১১ বছর এদেশে থাকতে হত। গত বছর সেই সময়সীমা কমিয়ে ৬ বছর করা হয়েছিল। এবছর তা আরও কমানো হবে। নতুন বিল বলছে মাত্র ৫ বছর ভারতে থাকলেই নিঃশর্তে নাগরিকত্ব পেয়ে যাবে অমুসলিমরা। এক্ষেত্রে, শুধুমাত্র নিজেকে অমুসলিম বলে হলফনামা জমা দিলেই কাজ মিটে যাবে।
বিলের পক্ষে কী যুক্তি অমিত শাহের
বিলটির পক্ষে যুক্তি দিয়ে সোমবার সংসদে অমিত শাহ প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘুদের উপর হওয়া অত্যাচারের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, 'আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সংবিধানের অনুচ্ছেদ পড়ে শুনিয়ে বলেন এই দেশগুলিতে রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম। বিভাজনের সময় শরণার্থীরা দেশ ছেড়ে । ১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত চুক্তি সই হয়। তখন নিজেদের দেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। তবে এত বছরে আমাদের প্রতিবেশী দেশে হিন্দু, শিখ সহ সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত অত্যাচার চলেছে। তা হলে কী আমরা তাদের উপর অত্যাচার হতে দেব? এই আইনে শ্রীলঙ্কার তামিল হিন্দু ও মায়ানমারের হিন্দু রোহিঙ্গাদের বাদ রাখা হয়েছে। কিন্তু এই বিলে দেশের কোনও মুসলিমদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হয়নি।'
আইনে বাদ রয়েছে উত্তর-পূর্বের ১০টি জেলা
এর আগে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলির আশঙ্কা ও উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল লাগুর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কতগুলি জায়গা বাদ রাখা হবে বলে জানিয়েছিলেন অমিত শাহ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করেছে, তাতে অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মিজোরামের ইনার লাইন পারমিটভুক্ত এলাকা এবং উত্তর পূর্বের ষষ্ঠ তফশিলভুক্ত এলাকাগুলিকে বাদ রাখা হয়েছে। তা সত্ত্বেও এই বিল পাশ হতেই এই আইনের বিরোধিতায় জ্বলে উঠেছে উত্তর-পূর্ব।
বিক্ষোভ তামিলনাডু ও উত্তরপ্রদেশেও
এদিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের পাশাপাশি নাগরিকত্ব সংশোধনী এই আইনের বিরোধিতায় রাস্তায় নেমেছে ডিএমকে। তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জায়গায় এই বিষয়ে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। এদিকে বিক্ষোভ দেখানো হয় উত্তরপ্রদেশের আলিগড়েও। সেখানে আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্তরণে আনতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবাও।
গুয়াহাটিতে হাইকমিশনের কনভয়ে হামলার অভিযোগ! ভারতের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠাল বাংলাদেশ