ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ: ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী স্বীকার করেছেন তাদের অন্তত ১০০ থেকে ২০০ সৈন্য প্রতিদিন মারা যাচ্ছে
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অব্যাহত লড়াইয়ের মধ্যে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে, সেখানে তারা রাশিয়ার দিক থেকে বেশ তীব্র আক্রমণের মুখে আছেন এবং প্রতিদিন তাদের অন্তত ১০০ থেকে ২০০ সৈন্য লড়াইয়ে নিহত হচ্ছে, আহত হচ্ছে প্রতিদিন পাঁচশ'য়ের মত সৈন্য।
তবে ইউক্রনের প্রেসিডেন্টের একজন উপদেষ্টা মিখাইলো পদোলিয়াক বলছেন, প্রতিদিন নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। তিনি বলছেন, প্রতিদিন একশ' থেকে দু'শ ইউক্রেনীয় সৈন্য মারা যাচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অলেক্সি রেজনিকভ বলেছেন, পোল্যান্ডের কাছ থেকে তারা যে বিশেষ ধরনের হাউয়িৎযার কামান পেয়েছে তা যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য এখন অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের পাশাপাশি তৈরি রাখা হয়েছে।
কিন্তু তিনি বলেছেন, তাদের জরুরি ভিত্তিতে এবং দ্রুত আরও ভারি অস্ত্রশস্ত্রের প্রয়োজন।
মি. পদোলিয়াক বিবিসিকে বলছেন, রাশিয়ার গোলাবর্ষণ ঠেকাতে এবং তাদের শক্তির সাথে পাল্লা দিতে বিভিন্ন পাল্লার রকেট ছুঁড়তে সক্ষম এমন অন্তত ৩০০ সমরাস্ত্র তাদের দরকার।
ইউক্রেন পক্ষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
ইউক্রেনের যুদ্ধ এখনও কেন্দ্রীভূত রয়েছে ডনবাস অঞ্চলে- আরও সুনির্দিষ্ট ভাবে সেভেরোদোনেৎস্ক শহরে।
- রুশ বাহিনীর হাতে আটক ব্রিটিশ সৈন্যদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ
- খাদ্য সংকট নিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাল্টাপাল্টি দোষারোপ
- কী কী পেলে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করবেন পুতিন?
সেভেরোদোনেৎস্কে ইউক্রেন বাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা বলা হচ্ছে। সেখানে লড়াই চলছে রাস্তায় রাস্তায় এবং ইউক্রেন বাহিনী তুমুল গোলাবর্ষণের মুখে রয়েছে।
লুহানস্কের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেছেন, রুশ আক্রমণের মুখে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা শহর থেকে পিছু হঠে শহরের উপকণ্ঠে সরে গেছে।
তিনি একথাও বলছেন যে এলাকার ৯০ শতাংশের বেশি এখন রাশিয়ার দখলে, যদিও তিনি বলছেন "শহরটি সাময়িকভাবে রাশিয়ার দখলে"।
তবে শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান দাবি করেছেন, সেখানে লড়াই কঠিন হয়ে উঠলেও তার সৈন্যরা এখনও শহরের শিল্প এলাকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।
সামরিক প্রশাসনের প্রধান অলেকসান্ডার স্ট্রিউক বলেছেন, লড়াই "কঠিন কিন্তু তারা এখনও প্রতিহত করতে সক্ষম।"
তবে তিনি একথা স্বীকার করেছেন যে সেভেরোদোনেৎস্কে এখনও যারা আটকা পড়ে আছে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যাবার পরিস্থিতি নেই।
এদিকে, জাতিসংঘে মস্কোর রাষ্ট্রদূত ভাসিলি নেবেনযিয়া বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ডনবাসে রাশিয়ার অগ্রগতি সন্তোষজনক এবং খুব শিগগিরি রাশিয়া দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এলাকার পুরো দখল নেবে।
মার্চের শেষের দিকে যখন রাশিয়ার সেনারা রাজধানী কিয়েভের আশপাশ থেকে পিছু হটে, তখন যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দু পূর্ব ইউক্রেনের দিকে সরে যায়।
দু'হাজার চৌদ্দ-পনের সালের যুদ্ধের পর থেকেই ডনবাসের বড় অংশ রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর:
- ইসলামের নবীকে নিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা নূপুর শর্মা কে?
- বাজেটে যেসব পণ্যের দাম বাড়ানো ও কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে
- ঘৃণা-বিদ্বেষের রাজনীতি কি মুসলিম বিশ্বে ভারতের স্বার্থ ঝুঁকিতে ফেলছে?
ফ্রান্স ও জার্মাানির কড়া সমালোচনা
এরই মধ্যে পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট বেশ কঠোর ভাষায় ফ্রান্স এবং জার্মানির সমালোচনা করেছেন।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রজ ডুডা জার্মানির বিল্ড সাময়িকীকে এক সাক্ষাৎকার দেবার সময় ফ্রান্স আর জার্মানির বিরুদ্ধে খুবই কড়া মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যখন ইউক্রেনকে ধ্বংস করতে ব্যস্ত, তখনও এই দুই দেশ তার সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেছেন মি. পুতিনের সঙ্গে এই আলোচনা অর্থহীন।
তিনি সাময়িকীতে সাক্ষাৎকার দেবার সময় প্রশ্ন করেছেন: ''দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কি কেউ অ্যাডল্ফ হিটলারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছিল অথবা কেউ কি বলেছিল - নাৎসী নেতাকে অপদস্থ করা ঠিক নয়। তার মুখ বাঁচানোর পথ রাখা উচিত!''
আলোচনার মাধ্যমে এই যুদ্ধ অবসানের চেষ্টায় এমানুয়েল ম্যাক্রঁ এবং ওলাফ শোলৎজ এখনও মি. পুতিনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছেন।
পোল্যান্ড ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় সমর্থক দেশগুলোর অন্যতম। তারা ইউক্রেন থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শরণার্থীকে তাদের দেশে আশ্রয় দিয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ভারি অস্ত্রশস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করছে।