মুদ্রাস্ফীতি ও তীব্র আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত ব্রিটেন, কোন পথে এগোবেন নয়া প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস
মুদ্রাস্ফীতি ও তীব্র আর্থিক জর্জরিত ব্রিটেন, কোন পথে এগোবেন নয়া প্রধানমন্ত্রী লিজা ট্রাস
ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন লিজা ট্রাস। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত ঋষি সুনক। কিন্তু টোরি সদস্যদের পছন্দের বিচারে অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলেন লিজা ট্রাস। তিনি দেশের তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হলেন। তবে বর্তমানে তাঁর সামনে কঠিন পথ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বর্তমানে ব্রিটেন তীব্র আর্থিক সঙ্কটে ভুগছে। মুদ্রাস্ফীতি ব্যাপক বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতি লিজা ট্রাসকে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাধান সূত্র খুঁজে বের করতে হবে। না হলে ব্রিটেন আরও অন্ধকারে তলিয়ে যাবে।
ব্রিটেনের তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী
লিজ ট্রাস মার্গারেট থ্যাচার ও থেরেসা মে-র পর ব্রিটিনের তৃতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হলেন। মঙ্গলবার লিজ ট্রাস স্কটল্যান্ডে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে দেখা করবেন। তিনি নতুন নেতাকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানাবেন। এই প্রথম রানি এলিজাবেথ বাকিংহাম প্যালেসের বদলে স্কটল্যান্ডের রিট্রিট বলমোরালে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন। একাধিক কেলেঙ্কারির অভিযোগের পর বরিস জনসন জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ দেন। মঙ্গলবার ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বিদায়ী ভাষণ দেবেন।
দেশের সঙ্কট মোকাবিলায় আত্মবিশ্বাসী ট্রাস
বর্তমানে ব্রিটেনের আর্থিক পরিস্থিতি মোটেই ভালো নয়। ব্রিটেনে একাদিকে যেমন মুদ্রাস্ফীতি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তেমনি বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে একাধিক প্রতিকূলতা সামনে এসেছে। ব্রিটেনে পেট্রোপণ্যের দাম হু হু করে বেড়েছে। তারমধ্যে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন দেখতে পাওয়া গিয়েছে। ব্রিটেনের মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ১০.১ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতি দেশের হাল ধরতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ব্রিটেনের নয়া প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। নির্বাচনী প্রচারের সময় এক সাক্ষাৎকারে লিজা ট্রাস বলেছেন, 'আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হই, সেক্ষেত্রে দেশের জ্বালানি মূল্য ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেব।' তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সমাধান সূত্রে আসার চেষ্টা করব। তবে সবার প্রথম দরকার একটি শক্তিশালী মন্ত্রিসভা।' অন্যদিকে, অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন, আন্দাজ করতে পারছেন না কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হবে।
কঠিন পরিস্থিতিতে ব্রিটেন
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ১২ বছরের দুর্বল রক্ষনশীল সরকারের জন্য ব্রিটেনের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। রাশিয়ার ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর ব্রিটেনে মুদ্রাস্ফীতি আরও তীব্র আকারে দেখা দেয়। ব্রিটেনের জীবনযাত্রার মানের ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। একটি সমীক্ষায় ব্রিটেনের মানুষ মনে করছেন, অক্টোবর থেকে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়বে। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারবে। এই পরিস্থিতি থেকে লিজা ট্রাস দেশকে বের করে আনতে পারবে কি না, সেই বিষয়ে দ্বিধাভক্ত ব্রিটেনের মানুষ। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যুদ্ধ পরবর্তী ব্রিটেন কখনও এতটা আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়েনি।