টাইফুন ‘হাইশেন’ ১৫০ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়ল, উপকূলে শুরু সমুদ্র-তাণ্ডব
টাইফুন ‘হাইশেন’ ১৫০ কিলোমিটার গতিতে আছড়ে পড়ল, উপকূলে শুরু সমুদ্র-তাণ্ডব
সামুদ্রিক ঝড় টাইফুন 'হাইশেন' বিধ্বংসী গতিতে আছড়ে পড়ল দক্ষিণ কোরিয়া ও দক্ষিণ জাপানের মধ্যে। জাপানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের কায়সু দ্বীপে আঘাত হানার পর দক্ষিণ কোরিয়া উপকূলে আছড়ে পড়ে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলে তাণ্ডব চালায় সমুদ্র। জলোচ্ছ্বাসের জেরে বিরাটাকার ঢেউ আছড়ে পড়ে উপকূলে।
টাইফুন ‘হাইশেন’-এ বিধ্বস্ত জাপান-দক্ষিণ কোরিয়া
টাইফুন ‘হাইশেন' দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বুশানের ঠিক উত্তরে উলসানে গিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করে। এই টাইফুনের জেরে ট্রেন পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়। ১০টি বিমানবন্দর থেকে ৩০০টিরও বেশি বিমান বাতিল করা হয়। টাইফুনটি জাপানের কয়েক হাজার ঘরবাড়ির ক্ষতি করে। বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত করে দেয়।
আশঙ্কার চেয়ে কম ক্ষতি করেছে টাইফুন ‘হাইশেন’
তবে জাপান ভেবেছিল বিশাল ক্ষয়ক্ষতি হবে, ধ্বংসলীলা চালাবে টাইফুন। কিন্তু আশঙ্কার চেয়ে কম ক্ষতি করেছে টাইফুন ‘হাইশেন'। জাপান আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে ৮০ লক্ষ মানুষকে সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন এলাকা থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যায়। বহু মানুষকে শেল্টার হোমে রাখা হয়।
অন্যতম শক্তিশালী টাইফুন মায়াসাকের পর এল ‘হাইশেন’
টাইফুন ‘হাইশেন' কয়েক বছরের মধ্যে অন্যতম শক্তিশালী টাইফুন মায়াসাকের কয়েকদিন পরে হানা দিল। গত সপ্তাহে কোরিয়ার উপদ্বীপ এবং জাপানে টাইফুন মায়াসাক হামলা চালিয়েছিল। টাইফুন ‘হাইশেন'-এ বিধ্বস্ত হল জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়া প্রবল ঝড়ে জেজু দ্বীপপুঞ্জ-সহ কোরিয়ান উপদ্বীপের দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৫০০০টি পরিবার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
জাপানে আরও শক্তিশালী ছিল টাইফুন ‘হাইশেন’
এই টাইফুন জাপানে আরও শক্তিশালী ছিল। সোমবার স্থানীয় সময় বেলা তিনটে পর্যন্ত চার লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ি বিদ্যুৎহীন ছিল। ‘হাইশেন' পশ্চিম জাপান জুড়ে কারখানা, স্কুল এবং ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছে। শত শত বিমান ও ট্রেন পরিষেবাও বাতিল করা হয়। টাইফুন মায়াসাকের সময় ডুবে যাওয়া একটি মালবাহী জাহাজ থেকে নিখোঁজ নাবিকদের অনুসন্ধান স্থগিত করতে বাধ্য করেছিল প্রশাসন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৪৪ কিলোমিটার বেগে বইছিল ঝড়
কোরিয়ার আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে যে, টাইফুনটি শক্তি ক্ষয় করে পৌছয দক্ষিণ কোরিয়ায়। সকালে ঘণ্টায় ১৪৪ কিলোমিটার বেগে বইছিল, পরে তা ঘণ্টায় ১০৮ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে ভূ-খণ্ডে। জাপানে টাইফুনটি আঘাত হানার পর ৩৮ জন আহত হন। এদের মধ্যে পাঁচজন গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
টাইফুন হাইশেনের গতিবেগ জাপানে ১৫০ কিলোমিটার
স্থানীয় হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিধ্বংসী টাইফুন হাইশেনের গতিবেগ জাপানে ছিল সর্বোচ্চ ১৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। আর দিন কয়েক আগে ধেয়ে আসা মাইসাকের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার। এখানে উল্লেখ্য, টাইফুন আসলে একটি ঘূর্ণিঝড়। এলাকা বিশেষে নাম পরিবর্তন হয়ে যায় ঘূর্ণিঝড়ের। কেউ বলে সাইক্লোন, কেউ বলে টাইফুন, কেউ বলে হ্যারিকেন।
সাইক্লোন, টাইফুন আর হ্যারিকেন, ভিন্ন নামে ঘূর্ণিঝড়
প্রশান্ত মহাসাগর উপকূলবর্তী এলাকা বিশেষ করে চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ইত্যাদি ঘূর্ণিঝড়কে টাইফুন বলে। চিনা শব্দ টাই-ফেং থেকে এসেছে টাইফুন। আবার অনের বিশেষজ্ঞ বলেন, ফার্সি বা আরবি শব্দ তুফান থেকে এসেছে টাইফুন। তেমনই আটলাণ্টিক মহাসাগর সংলগ্ন উপকূলে ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় হ্যারিকেন। আর ভারত মহাসাগরীয় উপকূলের দেশগুলিতে ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় সাইক্লোন।
লাদাখ সংঘাতের উত্তাপ কমাতে মাথা নোয়াচ্ছে চিন! মস্কোয় ফের হাইভোল্টেজ বৈঠক আসন্ন