উত্তপ্ত কঙ্গো, হিংসাত্মক বিক্ষোভে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত দুই বিএসএফ কর্মীর মৃত্যু
উত্তপ্ত কঙ্গো, হিংসাত্মক বিক্ষোভে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত দুই বিএসএফ কর্মীর মৃত্যু
কঙ্গোতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে ভারতের দুই সীমান্ত নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার কঙ্গোর সীমান্তে হিংসাত্মক একটি বিক্ষোভের জেরে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দুই বিএসএফ কর্মীর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন।
বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স বা সীমান্ত নিরাপত্তাবাহিনীর এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার কঙ্গোর বুটেম্বোতে রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা কন্টিনজেন্টের দুই বিএসএফ কর্মী একটি হিংসাত্মক বিক্ষোভের সময় গুরুতর আহত হন। পরে তাঁদের মৃত্যু হয়। বিএসএফের আধিকারারিকরা জানিয়েছেন, কঙ্গোর বেনি ও বুটেম্বো এলাকায় স্থানীয়রা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। সেই বিক্ষোভ বর্তমানে হিংসার আকার ধারণ করেছে। কঙ্গোর এই দুই এলাকা থেকে ৭০-৭৫ জন বিএসএফের কর্মী অবস্থান করছেন। তাদের মে মাসেই রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা কন্টিনজেন্টের অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, কঙ্গোতে মৃত ভারতের দুই বিএসএফ কর্মী কনস্টেবল পদে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁদের দুই জনের বাড়ি রাজস্থানে।
শোক প্রকাশ ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীর
কঙ্গোতে বিএসএফের দুই কর্মীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি টুইটারে মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি টুইটারে লেখেন, 'কঙ্গোতে বিএসএফের দুই বীর ভারতীয় শান্তিরক্ষীর প্রাণ হারানোয় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁরা রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা কন্টিনজেন্টের অংশ ছিলেন। এই হামলার জন্য অবশ্যই অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে। অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।'
কঙ্গোতে হিংসাত্মক বিক্ষোভের কারণ কী
রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা কন্টিনজেন্টের বিরোধিতা করে কঙ্গোর সাধারণ মানুশ বিক্ষোভে সামিল হয়েছে। এই বিক্ষোভ ক্রমেই হিংসার আকার ধারণ করছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, কঙ্গোরে পূর্বে গোমা নামক একটি শহরে বিক্ষোভের দ্বিতীয়দিনে বিক্ষোভের জেরে কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ৫০ জন। জানা গিয়েছে, বেনি ও বুটেম্বো এলাকার পরিস্থিতি সব থেকে খারাপ। স্থানীয় মানুষদের বিক্ষোভ ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছে। তারা রাষ্ট্রসংঘের সম্পত্তি লুঠপাঠ করতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে বেনি থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে মনুস্কো নামক এলাকায় বিক্ষোভকারীরা লুঠপাঠ চালায়।
কীভাবে মৃত্যু হয় বিএসএফের দুই জওয়ানের
বেনি ও বুটেম্বো উচ্চসতর্কতায় ছিল। এই দুই জায়গাতেই রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে বিএসএফের ৭০ থেকে ৭৫ জন জওয়ান ছিলেন। সোমবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। বুটেম্বোর পরিস্থিতি ক্রমেই হিংসাত্ম হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে থাকা সদস্যদের বিক্ষোভকারীরা ঘিরে ফেলেন। দ্রুত বিক্ষোভকারীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। পাঁচ শতাধিক বিক্ষোভকারী সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কঙ্গোর পুলিশ ও সেনাবাহিনী দ্রুত সেখানে উপস্থিত হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। সেই সময় অন্যান্যদের সঙ্গে বিএসএফের কর্মীরা ভিড়কে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা প্রাচীর ভাঙতে সক্ষম হয়। এরপরেই রাষ্ট্রসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্যদের ওপর হামলা করে। ঘটনায় বিএসএফের দুই জওয়ান গুরুতর আহত হন। পরে তাঁদের মৃত্যু হয়।