সৌদি আরবকে টেক্কা দিতেই কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সুরে তাল ঠুকছে তুরস্ক
ফের একবার কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত বিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করল তুরস্ক। প্রসঙ্গত ৫ অগাস্টের প্রাক্কালে পাকিস্তানের তাদের নাগরিকদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল জম্মু ও কাশ্মীরকে ইন্ডিয়ান ইলিগালি অকুপাইড জম্মু ও কাশ্মীর ডাকতে। এবার সেই নামে কেন্দ্র শাসিত জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলকে ডাকতে শুরু করল তুরস্ক।
কাশ্মীর ইস্যুতে প্রথম থেকেই পাকিস্তানের পক্ষে তুরস্ক
অবশ্য কাশ্মীর ইস্যুতে তুরস্কের এই অবস্থান নতুন কিছু নয়। এর আগেও জম্মু ও কাশ্মীরকে পাকিস্তানের দেওয়া ইন্ডিয়ান অকুপাইড কাশ্মীর নামেই ডাকত তুরস্ক। এছাড়া পাক অধিকৃত কাশ্মীরকে তারা আজাদ কাশ্মীর বলে সম্বোধন করত। যদিও তুরস্কের এই পাকিস্তান তোষণ করে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোকে একেবারেই পছন্দ করত না দিল্লি। এবং ইস্তানবুলকে এই বিষয়ে জানিয়েও দেওয়া হয়েছিল স্পষ্ট ভাষায়।
ইসলামাবাদ-ইস্তানবুল আতাঁত
যদিও প্রথম দফায় ভারতের অভিযোগ জানানোর পর তুরস্ক ভিত্তিক নিউজ অ্যাজেন্সি আনাদলু জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারত শাসিত অঞ্চল বলে সম্বোধন করতে শুরু করে। তবে এতে ছ্যাঁকা লাগে পাকিস্তানের কাটা ঘায়ে। আর তাই এরদোয়ান প্রশাসনের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ জানায় ইসলামাবাদ। এবং এর পরেই পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী ইন্ডিয়ান ইলিগালি অকুপাইড জম্মু ও কাশ্মীর নামটি ব্যবহার শুরু করে তুরস্ক।
ওআইসি-র সমন্তরাল একটি গোষ্ঠী তৈরির পরিকল্পনা
আদতে তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ন মুসলিম বিশ্বের খালিফা বা প্রধান ব্যক্তি হতে চাইছেন। এই লক্ষ্যে তিনি ওআইসি-র সমন্তরাল একটি গোষ্ঠী তৈরি করতে চাইছেন। পাকিস্তান তাতে তুরস্কের সঙ্গে রয়েছে। যার ফল স্বরূপ পাকিস্তানের এই ছোটো ছোটো দাবিগুলি মেনে নিচ্ছে তুরস্ক।
ওআইসিতে মুখ পুড়েছে পাকিস্তানের
প্রসঙ্গত, সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে না দাঁড়ানোয় পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি সৌদিকে সতর্ক করেছিলেন। সেই সতর্কবার্তার খেসারতও চুকোতে হয় পাকিস্তানকে। চিন থেকে ১ বিলিয়ন ডলার ধার নিয়ে তা দিয়ে সৌদির ঋণ শোধ করতে হয়েছে পাকিস্তানকে।
তুরস্কের সমর্থন পেয়ে আপ্লুত পাকিস্তান
উল্লেখ্য, পাকিস্তান চেয়েছিল ৫ অগাস্টকে কেন্দ্র কের কাশ্মীর নিয়ে ভারতের অবস্থানকে নিন্দা করুক আরবদেশগুলি। তাই ওআইসির বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে চেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু পাকিস্তান কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলতেই ৫৭ সদস্যের ওআইসি তা নস্যাৎ করে। রাষ্ট্রসংঘের পরে এই মুসলিম দেশ সম্বলিত ওআইসি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংগঠন। আর সেখানেই পাকিস্তানের কাশ্মীর নিয়ে ঘ্যানঘ্যান মুখ থুবড়ে পড়েছে। আর এই আবহে তুরস্কের সমর্থন পেয়ে আপ্লুত পাকিস্তান।
ভারতের অভ্যন্তরে দেশবিরোধী জাল ছড়াচ্ছে তুরস্ক
এই আবহে দ্রুত বেগে ভারতের অভ্যন্তরে দেশবিরোধী জাল ছড়িয়ে দিতে এবার উদ্যত হয়েছে তুরস্ক। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়ে পাকিস্তান ও চিনের পরে যদি কোনও দেশ সবথেকে বেশি সরব হয়ে থাকে, তাহলে সেটা হল তুরস্ক। এবং শুধু সরব হওয়াতেই এই বিষয়টি থেমে নেই। তুরস্ক ভারতের অভ্যন্তরেই দেশবিরোধী মনোভাব সৃষ্টির এক জাল ক্রমেই বিস্তার করছে চুপিসারে।
আইএসআই-এর মদত নিচ্ছে তুরস্ক
শুধু তাই নয় তুরস্ক তাদের এই কার্যকলাপ চালানোর জন্য সময় সময় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এরও মদত নিয়ে থাকে বলে জানা যাচ্ছে। ভারতীয় মুসলিম ছাত্র, বিশেষ করে কাশ্মীরি ছাত্রদের তুরস্ক স্কলারশিপ দিয়ে তুরস্কে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং সেখানে পাকিস্তানের অপারেটিভরা ধীরে ধীরে সেসব ছাত্রদের 'মগজ ধোলাই' করে।
শুরু হয়ে গেল ভাদ্রের বর্ষা, উপকূলবর্তী জেলায় জারি হল সতর্কতা, মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ