তিউনিসিয়া হত্যাকাণ্ড : ব্রেক ডান্সার থেকে আইএস জঙ্গি সঈফ
তিউনিস, ২৯ জুন : গত বুধবারও সঈফ রেজগুই নিজের শহরে বসে নিজের প্রিয় ফুটবল দল নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছে। বান্ধবীদের সঙ্গে খোসগল্প করেছে, এমনকী নিজের ব্রেকডান্স করার গোপন স্কিল দেখিয়ে চমকে দিয়েছে।
এর পরের দিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সঈফ নিজের কাকা আলিরেজগুইয়ের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। স্নাতকোত্তরের ছাত্র সঈফ রেজগুই এসবই করেছে কায়রোয়ানে তার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটিতে বাড়িতে এসে। তার ঠিক পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার আরও একটি কাজ অবশ্য সে করেছে, এবং যার জন্য সারা পৃথিবী তাকে নিয়ে চর্চায় মেতেছে।
এই সঈফই হল সেই আইএস জঙ্গি যে শুক্রবার তিউনিসিয়ার সুসা শহরের জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকতে হাতে কালাশনিকভ নিয়ে এলোপাথারি গুলি চালিয়ে একা হাতে ৩৮ জনকে হত্যা করেছে। একজন আইএসআইএস জঙ্গি হিসাবেই এইকাজ সে করেছে বলে জানা গিয়েছে।
তিউনিসিয়ার সুসা শহরের সমুদ্র সৈকতে শুক্রবার বেলা ১২ টা নাগাদ ঢুকে পড়ে দুই আইএস জঙ্গি। এলোপাথারি গুলি করে মেরে ফেলে ৩৮ জন নিরীহ মানুষকে। পুলিশের গুলিতে এক সন্ত্রাসবাদীর প্রাণ গেলেও আর একজন পালিয়ে যায়। মৃত সেই ব্যক্তিই হল সঈফ রেজগুই। [তিউনিশিয়ায় জঙ্গি হানা : অধিকাংশ মৃত পর্যটকই ব্রিটিশ, ঘটনার দায় স্বীকার আইএসের]
কীভাবে সঈফের মতো একজন শিক্ষিত যুবকের ব্রেনওয়াশ করে তাকে জঙ্গিতে পরিণত করা হল তাই ভেবে বের করতে পারছেন না তার পরিবারের আত্মীয়রা। জানা গিয়েছে, সারাক্ষণ ফুটবল আর মিউজিক নিয়েই ব্যস্ত থাকত সঈফ।
সঈফের কাকা আলি রেজগুইয়ের প্রতিক্রিয়া, "কে ভেবেছিল ও এমন একটি ভয়াবহ কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে?" ঘটনা হল, কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না এমন ঘটিয়েছে তাদের চেনা শান্ত স্বভাবের সঈফ।
প্রসঙ্গত, এই বছরের মার্চে তিউনিসিয়ার জাদুঘরে জঙ্গি হামলা চালিয়ে ২১ জন বিদেশি পর্যটককে মেরে ফেলেছিল জঙ্গিরা। এক্ষেত্রেও দায় স্বীকার করেছিল আইএসআইএস।
সরকারি হিসেব বলছে, তিউনিসিয়ার প্রায় তিন হাজার যুবক আইএসের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। ফলে ফের কোনও এক সঈফ বেরিয়ে এসে একা হাতে শেষ করে দিতে পারে বেশ কিছু নিরীহ প্রাণকে। আতঙ্কের প্রমাদ গুণছে আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশটি।