প্রথম আমেরিকা, নবমে ভারত, স্বর্ণ মজুতে বিশ্বের শীর্ষে থাকা দশটি দেশ সম্পর্কে জেনে নিন বিশদে
প্রথম আমেরিকা, নবমে ভারত, স্বর্ণ মজুতে বিশ্বের শীর্ষে থাকা দশটি দেশ সম্পর্কে জেনে নিন বিশদে
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি স্বর্ণের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ধারক এবং তা মজুত পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কে সোনা সংরক্ষণ করার অর্থ হল সেই দেশের মুদ্রার মূল্যকে সমর্থন করতে এবং এটি বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি রক্ষার্থে ব্যবহার করা হয়। সরকারগুলি স্বর্ণের মজুতকে উচ্চ মূল্য দেয়। যখন মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে শুরু করে, বিভিন্ন সরকার পাল্টা প্রতিরোধ হিসাবে বৃহৎ পরিমাণে স্বর্ণ কিনে রাখে। সম্প্রতি ফেব্রুয়ারিতে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিশ্বজুড়ে ৮.৮ টন সোনা যোগ হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মোট সোনার পরিমাণে। ভারত (১১.২ টন), উজবেকিস্তান (৭.২ টন), কাজাখাস্তান (১.৬ টন) এবং কলোম্বিয়া (০.৫ টন) তুরস্কের চেয়ে বেশি সোনা কিনেছে, যার কিছুই বিক্রি হয়নি। এটি এ বছর এ পর্যন্ত মোট বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মোট বিক্রি ১৬.৭ ট্রিলিয়ন ডলারে নিয়ে গিয়েছে, যা এক দশক পর সবচেয়ে কম বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।
আমেরিকা
প্রথম স্থানে রয়েছে আমেরিকা। এই দেশে মোট ৮,১৩৩.৫ টন সোনা মজুত রয়েছে। এই সোনা রয়েছে ইউনাইটেড স্টেটস বুলিয়ান ডিপোজিটারিতে, যা সাধারণত ফোর্ট নক্স নামে পরিচিত, এটি কেন্টাকি-এর ফোর্ট নক্সের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনা পোস্ট সংলগ্ন একটি সুরক্ষিত ভবন। আমেরিকার ট্রেজারি বিভাগ এটা পরিচালিত করে। ভল্টে মার্কিন স্বর্ণের মজুতের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে, পাশাপাশি ফেডারাল সরকারের মালিকানাধীন বা তার হেফাজতে থাকা অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র রয়েছে। এগুলি সব আমেরিকার মিন্ট পুলিশের কড়া তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
জার্মানি
জার্মানিতে ৩,৩৬২.৪ টন সোনা মজুত রয়েছে, এটি রয়েছে ফ্রাঙ্কফুর্টের এম মেইনে ডয়চে বুন্দেস ব্যাঙ্কে, এই ব্যাঙ্কটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারাল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিউ ইয়র্কের শাখা এবং ইংল্যান্ডের লন্ডনের ব্যাঙ্ক। জার্মানি ২০১৭ সাল থেকে প্রত্যাবর্তন অপারেশনে যোগ দিয়ে নিউ ইয়র্কের বাঙ্ক ডে ফ্রান্স ও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাঙ্কে নিজেদের ভল্ট থেকে ৬৭৪ টন সোনা ফিরিয়ে এনেছে।
ইতালি
এই দেশে সোনা রয়েছে ২,৪৫১.৮ টন। এই সোনা রাখা রয়েছে ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক প্রেসিডেন্ট মারিও দ্রাঘিতে। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ঘেরা এই ব্যাঙ্কে একটা মাছিও গলতে পারে না। ইতালির সরকার এই ব্যাঙ্কটির পরিচালনায় রয়েছে। এই ব্যাঙ্কে অধিকাংশ সোনার বিস্কুট রাখা রয়েছে।
ফ্রান্স
এই দেশে স্বর্ণের পরিমাণ ২,৪৩৬.০ টন। শেষ কিছু বছর ধরে ফ্রান্সের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক খুব কম সংখ্যক সোনা বিক্রি করেছে। দেশের সুদূর ডানপন্থী জাতীয় ফ্রন্ট দলের সভাপতি মেরিন লে পেন কেবলমাত্র দেশের সোনা বিক্রি বন্ধ করা ও বৈদেশিক ভল্ট থেকে পুরো পরিমাণ ফিরিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২,৪৩৬.০ টন সোনার মজুত নিয়ে তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স।
রাশিয়া
রাশিয়ায় সোনা মজুত রয়েছে ২,২৯৯ টন। গত সাত বছর ধরে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক সবচেয়ে বড় স্বর্ণের ক্রেতা হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে, যদিও ২০১৮ সালে বৃহৎ স্বর্ণ মজুতকার হিসাবে চিনের নাম উঠে আসে। রাশিয়া আমেরিকার ডলার থেকে দূরে সরে নিজের মুদ্রায় বৈচিত্র্য আনার উদ্যোগে ২০১৭ সালে ২২৪ টন সোনা কেনে।
চিন
চিনে মজুত স্বর্ণের পরিমাণ ১,৯৪৮.৩ টন। ২০০৯ সালের পর প্রথমবার পিপলস ব্যাঙ্ক অফ চিন ২০১৫ সালের গরমের সময় মাসিক ভিত্তিতে নিজের সোনা কেনার গতিবিধি প্রকাশ করতে শুরু করে। যদিও সোনা মজুত করার দিক থেকে চিন ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।
সুইজারল্যান্ড
এই দেশে স্বর্ণের পরিমাণ ১,০৪০.০ টন। যা মাথাপিছু বিশ্বের বৃহত্তম সোনার মজুত রয়েছে, এই দেশ সপ্তম স্থানে রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, নিরপেক্ষ এই দেশটি মিত্র এবং শত্রু উভয় শক্তির সঙ্গে লেনদেন করে ইউরোপের স্বর্ণ বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে।
জাপান
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাপানে ৪২.৮৭৮ মার্কিল ডলার বিলিয়নের সোনা মজুত রয়েছে। জাপানে বর্তমানে ৭৬৫.২ টন সোনা মজুত রয়েছে যা বিশ্বের অষ্টম স্থানে এই দেশকে নিয়ে যায়।
ভারত
ভারতে স্বর্ণ মজুতের পরিমাণ ৬৫৭.৭ টন। ভারতে ২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে স্বর্ণ ৬৬৮.২৫ টনের তুলনায় স্বর্ণের মজুদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭৬.৬১ টন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সোনার মজুতের বৃদ্ধি বেড়েছে। নবম স্থানে রয়েছে ভারত।
নেদারল্যান্ড
ডাচ সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ঘোষণা করেছিল যে বর্তমানের ভারসাম্যপূর্ণ সুরক্ষা ব্যবস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে তাদের সোনার ভল্টগুলি শহর থেকে প্রায় এক ঘন্টার বাইরে আমস্টারডাম থেকে ক্যাম্প নিউ আমস্টারডামে স্থানান্তরিত করা হবে। নেদারল্যান্ড ৬১২.৫ টন স্বর্ণের মজুত নিয়ে দশম স্থানে রয়েছে।