কতটা ভয়ঙ্কর ছিল 'মেকুনু'-র ধ্বংসলীলা, দেখুন ফোটো গ্যালারিতে
ছবি ও ভিডিওয় ওমানে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় 'মেকুনু'-র দাপট।
এত শক্তিশালী সাইক্লোন কোনওদিন দেখেনি ওমান। শুকনো আবহাওয়ার দেশ বলেই পরিচিত। সেখানেই গত কদিনে কোথাও কোথাও ৭০০ মিমির কাছে বৃষ্টি হয়েছে। সাইক্লোন 'মেকুনু'-র দাপটে তছনছ হয়ে গিয়েছে পারস্য উপসাগরীয় দেশটি।
আমাদের দেশেও প্রায়ই ঝড়-আঁধি আঘাত হানছে। দিল্লির আবহাওয়া দফতর জারি করে রেখেছে সতর্কতা। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক প্রত্যক্ষদর্শীদের ক্যামেরায় কীভাবে ধরা পড়লো ওমানের এই ভয়াবহ বিপর্যয়।
|
যেন মেঘের ঘুর্ণি-পাক
আকাশের দিকচক্রবাল যেন তছনছ হয়ে গিয়েছিল। সালাহ শহরের আকাশ মেঘকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল না কোনটা আকাশ কোন ভূখন্ড। সহস্র জলপাতের মতো মেঘগুলো বারবার নেমে আসছিল সালাহ শহরের মাটির ওপরে। বাতাসের গোঁ-গোঁ আওয়াজ, সঙ্গে বাতাসের তীব্র রোষাণলে প্রায় গুঁড়িয়েই যাচ্চিল চারিদিক। আর এরই মাঝে এক ঘুর্ণি পাক খেতে খেতে মিশে যাচ্ছিল মেঘের মধ্যে। এই হাওয়ার ঘুর্ণিটাই ছিল সাইক্লোন স্টর্ম মেকুনু। যা ক্যামেরা বন্দী করেছেন সালাহ শহরের এক যুবক।
|
তিন বছরের বৃষ্টি একদিনেই
সাইক্লোন 'মেকুনু'র প্রভাবে একদিনেই ২৭৮.২ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। যা সারা ওমানের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের তিনগুন।
|
হড়পা বান
মরুভূমির দেশ ওমান। রয়েছে শুখা পর্বতমালাও। এমন দেশে জলের স্রোত এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা মেকুনুর আগে ওমানবাসী কখনও ঠাওড় করেনি। মেকুনুর দাপটে দোফরা প্রদেশে উঁচু টিলা থেকে খন জলের , তখন বোঝা গেল প্রকৃতির ক্ষমতা কতটা।
|
দোফার-এর দফারফা
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দক্ষিণ ওমানের দোফার প্রদেশের। সালাহ শহর সহ গোটা জেলারই অবস্থা খুব খারাপ। জারি হয়েছে জরুরী অবস্থা।
|
বিপর্যস্ত সালাহ
সাইক্লোন মেকুনুর প্রভাবে সালাহ শহরে হড়পা বান নেমে আসে। এখনও এই শহরের আটজন নিখোঁজ। মৃত ১৩ জনের মধ্যে আছে এই ১২ বছরের এক কিশোরীও। পুলিশ জানিয়েছে, তীব্র বাতাসে ওই কিশোরী মাথায় একটি ধাতব দরজা এসে সজোরে আঘাত করে। তাতেই তার মৃত্যু হয়।
|
অবাক দৃশ্য
এমনিতে শুকনো আবহাওয়ার দেশ ওমান। সেখানে এর আগে এরকম ভয়াবহ ঝড়-বৃষ্টি বন্যা হয়নি।
|
উত্তাল সমুদ্র
সাইক্লোনের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাত তো ছিলই পাশাপাশি আরব সাগরে তীব্র জলচ্ছ্বাস দেখা যায়। দুয়ের প্রভাবে প্রবল বন্যার মুখে পড়েছে এমানের তৃতীয় বৃহত্তম শহর সালাহ।
|
জলের তলায়
কিছুক্ষণের মধ্যেই ওমানের বড় শহরগুলির সব রাস্তাঘাট জলের তলায় চলে যায়। ক্রমে জল বাড়তে থাকে।
|
ভাসমান গাড়ি
বিপর্যয়ের দ্রুততায় ড্রাইভাররা রাস্তার ওপরেই গাড়িগুলি ফেলে পালাতে বাধ্য হন। বন্যায় সেসব ভেসে যেতে দেখা গিয়েছে।
|
ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী
ওমানের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী সাইক্লোন বলা হচ্ছে মেকুনুকে। এর আগে ক্যাটেগরি ২ এর সাইক্লোন এদেশে দেখা যায়নি।
|
ক্যাটেগরি ৩
প্রথমে ক্যাটেগরি ২ সাইক্লোনের স্তরে ফেলা হচ্ছিল 'মেকুনু'কে। আছড়ে পড়ার পরে, ক্রমশঃ ক্যাটেগরি ৩-এর ভয়াবহতায় পৌঁছে যায় ঝড়টি। ঝড়ের দাপট কমলেও বন্যার জল নামার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
|
শুখা রাস্তায় জলস্রোত
শুকনো আবহাওয়ার দেশ ওমানের বিভইন্ন শহরের রাস্তা যেন একেকটা নদী হয়ে গিয়েছে।
|
সমুদ্র মন্থন
সাইক্লোন মেকুনুর দাপটে যে তীব্র জলোচ্ছাস ও বন্যা হয়েছে তাতেই আরব সাগরের তলা থেকে উঠে এসেছে নানা আজব জিনিস। মিলেছে কালাজাদুর উপকরণও। সাধারণত কারোর ক্ষতি করতে এরকম থলে বা শিশি আরব সাগরে ফেলা হয়।
|
হাহাকার
সালাহ আবহাওয়া দফতরের হিসেব বলছে গত কদিনে প্রায় ৬১৭ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। তাই দোফার জেলার যাবতীয় নদী নালা উপচে গেছে। গোটা জেলাই এখন বন্যার প্রকোপে। ওমান জুড়ে হাহাকার।
|
হানা হেরিটেজ সাইটেও
ওমানে আছড়ে পড়ার আগে 'মেকুনু' হানা দেয় ইয়েমেনের সোকোত্রা দ্বীপে। আরব সাগরের বুকের এই দ্বীপটি ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড ন্যাচারাল হেরিটেজ সাইট-এর স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু মেকুনুর দাপটে চুড়ান্ত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে দ্বীপটি।