করোনা আবহে 'বন্ধু' থেকে যোভাবে ট্রাম্পের চরম শত্রুতে পরিণত হল চিন! নেপথ্যে কোন কারণ?
দিনটা ছিল, ২৪ জানুয়ারি ২০২০। মাত্র তিন দিন আগেই আমেরিকায় প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিস মেলে। এরপর টুইট করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশংসা করেন চিনের। বলেন, চিন করোনা আটকে রাখতে খুব ভালো কাজ করছে। সেই টুইটের পর কেটে গিয়েছে ৬ মাস। এরই মধ্যে আমেরিকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ মিলিয়ন পেরিয়েছে। মারা গিয়েছেন ১ লক্ষ ৪৪ হাজার জন। আর সেই সঙ্গ এককালীন বন্ধু চিনও হয়ে উঠেছে আমেরিকার চরম শত্রু।
করোনা ভাইরাস জর্জরিত অর্থনীতি
করোনা ভাইরাস জর্জরিত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে ২০ লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে অনেক বিশেষজ্ঞরই মত ছিল যে এটা পর্যাপ্ত নয়। অনেকেই মনে করছিল, রাজকোষের ঘাটতি বাড়িয়ে লকডাউনে উদারহস্ত হতে চায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এদিকে সরকারের আশা ছিলযে এই বিপুল অর্থ বরাদ্দ ভারতের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে বিদেষি বিনিয়োগ টানতে সাহায্য করবে। আর এর ফলে চিনকেও মাত দিতে সমর্থ হবে ভারত। তবে এই আবহেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল জানিয়ে দিল, আরও বিদেশি বিনিয়োগ টানতে আরও বেশি অর্থনৈতিক সংস্কার তৈরি দেশের।
বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসেবে বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা ২০১৯ সালের শেষ দিকের মতো হতে আরও দুই বছর সময় লাগবে। ভারতের ক্ষেত্রেও তা সমান ভাবে প্রযোজ্য হবে। ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে সমর্থন সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারগুলোকে আরও বেশি সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বক্তব্য, করোনা ভাইরাসের মহামারী ২০২০ সালের প্রথম অর্ধে অর্থনীতিতে ধারণার চেয়ে বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আর এ থেকে ফের ঘুরে দাঁড়ানোর গতিও ধীর হবে।
কীভাবে আরও বিনিয়োগ টানবে ভারত?
তবে এই আবহতেও তো ভারতে গুগল ও ফেসবুকের মতো বড় সংস্থাগুলি ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই নিয়ে আইএমএফ-এর মুখপাত্র জেরি রাইসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, 'নিঃসন্দেহে গত কয়েক বছরে ভারত অর্থনৈতিক ভাবে চাঙ্গা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ টানতে ও ব্যবসা করার সরলীকরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি আরও ভআলো হয়েছে। তবে শ্রম, জমি ও পরিকাঠামোগত ভাবে আরও উন্নতি কাম্য ভারতের তরফে থেকে। তাহলে সেদেশে আরও বিনিয়োগ বাড়বে।'
চিনের সঙ্গে চলমান সংঘাতের আবহে ভারতীয় অর্থনীতি
প্রসঙ্গত, চিনের সঙ্গে চলমান সংঘাতের আবহে ভারত আত্মনির্ভর হওয়ার ডাক দিয়েছে। তবে আইএমএফ-এর পূর্বাভাস, এই সময়ে ভারতের ক্ষেত্রে এই সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে শুধু ১ শতাংশ। তাছাড়া ভারতীয় অর্থনীতি ৪.৫ শতাংশ হ্রাস পাবে এই সময়ে। এমনিতে দেখতে গেলে এই ১ শতাংশ বৃদ্ধি খুব কম। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবস্থাও এরকমই হবে। ২০২১ সালে বিশ্বের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ।