
আমেরিকা ও মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রুবেল
২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে আমেরিকা ও মিত্রদেশগুলি মস্কোর উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিল৷ এবং তারপর থেকে হুহু করে পড়েছে রুবেলের দাম৷ যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরের দিনগুলিতে, রুবেলের পতন ছিল রাশিয়ার নতুন আর্থিক বিচ্ছিন্নতার প্রতীক। একটা সময় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলার প্রতি রুবেলের মূল্য পড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ১২১.৫ এ। এটিই এ পর্যন্ত রুবেলের সর্বনিম্ন পতন৷

১৯৯৮ সালের রাশিয়ার আর্থিক সঙ্কটের সময় যে অবস্থা হয়েছিল দেশটির সেটির স্মৃতিই যেনই উসকে দিচ্ছিল যুদ্ধকালীন নিষেধাজ্ঞা। সে সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কটাক্ষ করে বলেছিলেন যে রুবেলকে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু আমেরিকা সহ সারা বিশ্বকে চমকে দিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রুবেল৷ এমনকি যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে যে জায়গাতে ছিল ডলার সাপেক্ষে সেখানেই পৌঁছে গিয়েছে রাশিয়ার মুদ্রার ভ্যালু। বুধবার মস্কোতে রুবেল শেষ করেছে ডলার প্রতি ৭৯.৭-এ৷ ক্রমশ একটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তা হল যে রাশিয়ার সরকারের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং বিদেশী ব্যবসার বহির্গমন সত্ত্বেও যদি রাশিয়ার তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত ও রপ্তানির উপর অন্য দেশ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্টানগুলিকে নির্ভর করতে হয় তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা একপ্রকার ব্যর্থই হবে৷
যদিও পুতিনের কোষাগার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিশ্ব অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে৷ ব্লুমবার্গ ইকোনমিকস আশা করছে যে দেশটি এই বছরজ্বালানি রপ্তানি থেকে প্রায় ৩২১ বিলিয়ন ডলার আয় করবে৷ যা ২০২১ সালের থেকে এক তৃতীয়াংশেরও বেশি। পাশাপাশি ডলার সাপেক্ষে দ্রুত রুবেলের ভ্যালুর পুনরুদ্ধার পুতিনকে বড় জয় এনে দিয়েছে৷ যদিও সম্প্রতি মস্কোর সামরিক বাহিনীর ইউক্রেনে করা নৃশংসতার জন্য বিশ্বজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়ছে৷ যা নিয়ে কিছুটা হলেও চাপে রয়েছে মস্কো।
জেনারেলি ইন্স্যুরেন্স অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের একজন সিনিয়র বাজার কৌশলবিদ গুইলাম ট্রেসকা বলেছেন, রাজনীতিবিদদের জন্য, নিষেধাজ্ঞার সেরকম কোনো প্রভাব নেই। এটি একটি ভাল পিআর টুল। এবং এটি মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবকে সীমিত করতে সাহায্য করে।' রাশিয়ার সোভিয়েত-পরবর্তী ইতিহাসে, রুবেল-ডলার বিনিময় হার নিয়ে রাশিয়ানরা সবচেয়ে বেশি যত্নশীল। ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে হাইপারইনফ্লেশনের সূত্রপাত হওয়ায় মুদ্রার পতনের পতাকাবাহী প্রতিটি শহরে এই হার সম্প্রচার করা হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে রাশিয়া ঋণ খেলাপি হওয়ার পর রুবেলের বড় পতন ঘটেছিল৷