পাকিস্তানে অস্থিরতার নতুন ভরকেন্দ্র সুপ্রিমকোর্ট, অবস্থানে অনড় বিরোধীরা
পাকিস্তানে অস্থিরতার নতুন ভরকেন্দ্র সুপ্রিমকোর্ট, অবস্থানে অনড় বিরোধীরা
চরম অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। কিছুদিন আগেই সেদেশের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন বিরোধীরা। সেই প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছিলেন, মন্ত্রিসভা ভেঙে নতুন করে নির্বাচন হবে। তবে এখনও নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছেন বিরোধীরা। এবার তাঁরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন, সংসদ ভবন থেকে বাইরে এক পাও যাচ্ছেন না।
পাকিস্তানের রাজনীতিতে খানিক ধুমকেতুর মতোই উত্থান হয়েছিল ইমরান খানের৷ দারিদ্র দূরীকরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন, দেশের ঋণের বোঝা কমানো থেকে শুরু করে জনগণের সার্বিক জীবনযাপনের মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন ইমরান খান। পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্রিকেট অধিনায়ক তিনি। বিশ্বকাপ জয়ী সেই ইমরানেই ভরসা রেখেছিল পাকিস্তানবাসী। তবে ক্রিকেট, রাজনীতি দুই আলাদা জগৎ। ইমরান খানের আমলে আরও ঋণের বোঝায় তলিয়ে গিয়েছে পাকিস্তান। দেশের দরিদ্র মানুষেরও বিশেষ কোনও সুরাহা হয়নি।
স্বাভাবিকভাবেই বিরোধীরা চেপে ধরেছে একাধিক ইস্যুতে। সম্প্রতি যে রাজনৈতিক চাপ তুঙ্গে পৌঁছোয়। ইমরানের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন বিরোধীরা। তবে এরই মাঝে একাধিকবার অধিবেশন মুলতুবিও হয়। রবিবার সকালেও শুরু হয়েছিল সংসদ অধিবেশন। সব ঠিক থাকলে খুব সম্ভাবনা ছিল ইমরানের গদিচ্যুত হওয়ার। সরকারপক্ষকে কার্যত বাঁচিয়ে নেন ডেপুটি স্পিকার। সংবিধানের পাঁচ নং ধারা দেখিয়ে এদিনও অধিবেশন মুলতুবি করে দেন তিনি।
সাদা জার্সি গায়ে ক্রিকেট মাঠের দিনগুলি থেকেই রিভার্স স্যুইংয়ে পারদর্শী ছিলেন ইমরান। রবিবার ডেপুটি স্পিকারের 'রিভার্স স্যুইং'য়ের পরও তার সুবিধা নিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। বললেন, 'মন্ত্রিসভা ভেঙে নতুনভাবে নির্বাচনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখেছি আমি। পাকিস্তানের মানুষ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হোক৷'
মন্ত্রিসভা ভেঙেছেন ইমরান, পাক-রাজনীতির নতুন সংযোজন এই পাঁচটি বিষয়
যদিও বিরোধীরা এরপরই দ্বারস্থ হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের। ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গেছেন তাঁরা। পূর্ব প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কন্যা মরয়াম নওয়াজ শরিফ বলেন, 'ইমরান একজন উন্মাদ। তাঁকে যদি শাস্তি না দেওয়া যায়, দেশজুড়ে জঙ্গলরাজ চলবে।' সংসদে পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দলের নেতা তথা নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ আবার বলেন, 'ইমরান খান দেশকে একনায়কতন্ত্রের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন৷ সংবিধান অবমাননার ফল ভুগতেই হবে৷ আশা করছি সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের মর্যাদা বজায় রাখবে।'