করোনা আবহে চিনে গিনিপিগ উইঘুররা! অপরীক্ষিত ওষুধ প্রয়োগের অমানবিক চিত্র জিনজিয়াংয়ে
করোনা ভাইরাস বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছে। করোনা ভাইরাস সারা পৃথিবীতে ভয়াবহ রূপ ধারণ করে সংক্রমণ ছড়িয়েই চলেছে। এহেন অবস্থায়, মানুষের একমাত্র ভরসা করোনা ভাইরাসের টীকা। আর তার থেকেও বড় লড়াই, টীকা আসা পর্যন্ত টিকে থাকা। তবে টীকার পাশাপাশি প্রয়োজন ওষুধেরও আর অল্প বিস্তর পর্যায়ে সেটা নিয়েও চলছে গবেষণা।
কোনও পরীক্ষা ছাড়াই ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে জিনজিয়াংয়ে
করোনা সংক্রান্ত সব ওষুধ-টীকার গবেষণাই চালাচ্ছে উৎসস্থল চিন। তবে টীকার ক্ষেত্রে যেভাবে নিয়ম মেনে পরীক্ষা চালাচ্ছে চিন, ওষুধ পরীক্ষণের ক্ষেত্রে উঠে এল বিপরীত চিত্র। জানা গিয়েছে এক ধরনের ওষুধ তৈরি করেছে চিন। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, এই ওষুধে করোনা রোখা সম্ভব। তবে কোনও পরীক্ষানীরিক্ষা ছাড়াই এই ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে জিনজিয়াংয়ের উইঘুর মুসলিমদের উপর।
গ্রেফতার করে দেওয়া হচ্ছে ওষুধ
বিভীষিকাময় এক ঘটনা উঠে আসতেই চিনের এই অমানবিক ওষুধ পরীক্ষার কথা প্রকাশ্যে আসে। এই বিষয়ে মুখ খোলেন জিনজিয়াং প্রদেশের এক মহিলা। সেই মহিলার দাবি, তাঁকে বিনা কারণেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বহু কয়েদির সঙ্গে তাঁকে গাদাগাদি করে রাখা হয়েছিল। এবং আচক অবস্থায় তাঁকে একটি তরল পদার্থ খেতে বাধ্য করা হয়েছিল।
৪০ দিনের কোয়ারেন্টাইন বিধি লাগু জিনজিয়াংয়ে
সেই মহিলার দাবি, সেই তরল পদার্থ খেতেই তাঁর শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। পাশাপাশি তাঁর চামড়াও খসে পড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ। তরল পদার্থটি ওষুধ নাকি ডিসইনফেক্ট তা ঠাওর করা সেই মহিলার সাধ্যি ছিল না। তবে জিনজিয়াং প্রদেশে যে করোনা রুখতে চিনা সরকার যে কোনও পর্যায় যেতে পারে তা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট। জিনজিয়াং প্রদেশে তো ৪০ দিনের কোয়ারেন্টাইন বিধি লাগু করেছে সরকার।
৮২৬টি করোনা কেস ধরা পড়েছে জিনজিয়াংয়ে
জুলাইয়ের মাঝমাঝি সময় থেকে জিনজিয়াংয়ে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়তে শুরু করে। এরপর থেকে বিগত ৪৫ দিন যাবৎ সেখানে খুবই কঠোর লকডাউন চলছে। তারপরেও সেখানে ৮২৬টি করোনা কেস ধরা পড়ে। যার জেরে আরও তৎপর হয়ে পড়ে চিনা সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে সেখানে স্থানীয় ভাবে করোনা ছড়ানোর কোনও কেস সামনে আসেনি। তবুও কড়াকড়ি শিথিল করতে নারাজ চিনা প্রশাসন।
চিনে টীকা প্রয়োগের কাজ
এদিকে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছে, সেই সময় চিন ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজও শুরু করেছে। বেজিং বলছে, গত জুলাই থেকে বেশ কয়েকজনকে করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সে দেশে একাধিক গবেষণাগারে কোভিড-১৯-এর টীকা তৈরির কাজ চলছে।
কাঁদের দেওয়া হচ্ছে এই ভ্যাকসিন?
চিনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টারের প্রধান ঝেং ঝংইউ এই বিষয়ে জানান, স্বাস্থ্যকর্মী, সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ জরুরি ক্ষেত্রে কর্মরত লোকজনের অনেককেই কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য সেই ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে।