অপুষ্টিতে ভুগছে দেশের শিশুরা, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশ–পাকিস্তানের চেয়ে পিছিয়ে ভারত
ভারত অন্যান্য দিকে উন্নয়ন করলেও জয় করতে সফল হয়নি ক্ষুধাকে। শুক্রবার এ বছরের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১০৭টি দেশের মধ্যে ৯৪ নম্বর স্থানে রয়েছে ভারত। তবে গত বছরের তুলনায় কিছুটা হলেও সামনের দিকে রয়েছে এই দেশ। ২০১৯ সালে ১১৭টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১০২ নম্বরে, যা ওই বছর যৌথভাবে প্রকাশ করে কনসার্ন ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ও ওয়েলথহাঙ্গারলাইভ।
গত দু’বছরের তুলনায় ভারত এগিয়েছে বেশ কয়েক ধাপ
২০১৮ সালে বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১১৯টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ছিল ১০৩ নম্বরে। বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার পর্যালোচিত বার্ষিক প্রতিবেদনের লক্ষ্য বিশ্বব্যাপী, আঞ্চলিক ও দেশপর্যায়ে ক্ষুধা নিরুপণ করা এবং তা সনাক্ত করা। সর্বশেষ রিপোর্টে জিএইচআই বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার পর্যায়কে মাঝারি স্তরে রেখেছে এবং সতর্ক করেছে যে গোটা বিশ্বের প্রায় ৬৯ কোটি মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছেন। ২০২০ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের নম্বর ৫০-এর মধ্যে ২৭.২, যা ইঙ্গিত করছে যে ভারতের ক্ষুধার স্তর বেশ গুরুতর। এখানে উল্লেখ্য, ৯.৯-এর কম হলে খুবই নিম্নমানের ক্ষুধা, ১০-১৯.৯ হল মাঝারি ক্ষুধাকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং ২০-৩৪.৯ নম্বর হল গুরুতর ক্ষুধার ইঙ্গিত দেয়। এর ওপরে উঠলে সেই দেশের ক্ষুধার পর্যায় চুড়ান্ত সতর্কতার বার্তা দিচ্ছে।
ভারত সামান্য উন্নতি করেছে এ বছর
তবে এটাও গুরুত্বপূর্ণ যে জিএইচআই ২০২০-তে ভারতের নম্বর উন্নতি করেছে (২৭.২), যা ২০০০ সালে ছিল ৩৮.৯, ২০০৬ সালে ছিল ৩৭.৫, ২০১২ সালে ছিল ২৯.৩। ২০১৯ সালে ১১৭টি দেশের মধ্যে ১০২ নম্বর স্থানে ভারতের স্থান ছিল।
ভারতে শিশুরা অপুষ্টির শিকার
রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের ১৪ শতাংশের বেশি মানুষ অপুষ্টির শিকার। এছাড়াও অপুষ্টিতে ভুগছে ৩৭.৪ শতাংশ শিশু। বয়সের অনুপাতে দৈর্ঘ এবং ওজন অনেক কম এমন শিশুর সংখ্যা ভারতে বাড়ছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ। যার ফলে অপুষ্টিতে মৃত্যুও হচ্ছে অনেক শিশুর। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকের এই পরিসংখ্যান রীতিমতো উদ্বেগের ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য। রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পরিসংখ্যান থেকে দেখা গিয়েছে, বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তানে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত রোগের অন্যতম কারণ হল পরিবারে আর্থিক অনটন, খাবারের মান খারাপ, প্রসূতির পুষ্টির অভাবের মতো ঘটনা।
ভারত পিছিয়ে নেপাল, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের থেকে
বর্তমানে ভারত পিছিয়ে রয়েছে নেপাল, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়া থেকে। একমাত্র ১০৭টি দেশের মধ্যে ১৩টি দেশের অবস্থা ভারতের চেয়েও খারাপ। বিশ্ব খাদ্য সূচকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে বিশ্বে মাঝারি স্তরের ক্ষুধা থাকলেও ৩১টি দেশের ক্ষুধার পর্যায় বেশ গুরুতর এবং অতিরিক্ত ৯ টি দেশকে সাময়িকভাবে গুরুতর হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে।