করাচি বিমানবন্দরে হামলা তালিবান জঙ্গিদের, গুলির লড়াইয়ে নিহত ২৮
গতকাল রাত সওয়া এগারোটা নাগাদ জঙ্গিদের একটি দল ঢুকে পড়ে বিমানবন্দরে। 'দ্য ডন' সংবাদপত্র জানাচ্ছে, ভুয়ো পরিচয়পত্র ব্যবহার করে জঙ্গিরা ঢুকেছিল। কী উদ্দেশ্য ছিল, তা পরিষ্কার না হলেও গোয়েন্দারা অনুমান করছেন, বিমান ছিনতাই করে পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে দর কষাকষিই ছিল জঙ্গিদের লক্ষ্য। যদিও নিরাপত্তাবাহিনীর তৎপরতায় সেই চেষ্টা সফল হয়নি।
জঙ্গিরা প্রথম হামলা চালায় বিমানবন্দরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। এখানে নির্বিচারে গুলি চালায়। ঝনঝন শব্দে ভেঙে পড়ে কাচ। পুলিশ তাদের হামলার মুখে পড়ে পিছু হটে। খবর যায় নিকটবর্তী মলির সেনা ছাউনিতে। কিছুক্ষণের মধ্যে সাঁজোয়া গাড়ি, মেশিনগান, ট্যাঙ্ক নিয়ে এসে পড়ে ফৌজিরা। চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় বিমানবন্দর। সেনাবাহিনীকে তাক করে গ্রেনেড ছুড়তে থাকে জঙ্গিরা। বিমানবন্দরের টার্মিনালের ভিতরেই প্রচণ্ড বিস্ফোরণ হয়। পরপর অন্তত তিনটি শক্তিশালী বিস্ফোরণে তছনছ হয়ে যায় বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক টার্মিনাল। জঙ্গিরা মরিয়া হয়ে গ্রেনেড ছুড়ে মারে ইস্পাহানি হ্যাঙ্গারে। এখানে কয়েকটি বিমান রাখা ছিল। 'দ্য ডন'-এর দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের (পিআইএ) একটি বিমান, এয়ার ব্লু-র একটি বিমান। অল্প ক্ষতি হয়েছে একটি মালবাহী বিমানেরও। যদিও এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিম বাজওয়া। তিনি বলেছেন, কোনও বিমানের ক্ষতি হয়নি। আগুন যা দেখা গিয়েছে, তা বিমানে লাগা আগুন নয়। পার্শ্ববর্তী একটি ভবনে জঙ্গিরা বোমা মারায় আগুন ছড়ায়।
আরও পড়ুন: "করাচি হামলার পিছনে রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল"
দুপুর একটা নাগাদ পুরো বিমানবন্দরের দখল নিয়ে নেয় সেনা। বিকেল থেকে বিমানবন্দর খুলে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য। শুরু হয় বিমান চলাচল। সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ এই সফল অভিযানের জন্য সেনাকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। সেনা সূত্রে বলা হয়েছে, মৃত জঙ্গিদের কাছ থেকে পাঁচটি সাব মেশিনগান, তিনটি আত্মঘাতী জ্যাকেট, দু'টি রকেট লঞ্চার, ১২টি পেট্রোল বোমা, রকেটচালিত গ্রেনেড ও কয়েক হাজার তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। জঙ্গি হামলার ঘটনার কড়া নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। বিভিন্ন দেশও এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছে।
করাচি বিমানবন্দরের ঘটনার জেরে সারা দেশে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।