ব্যাকট্রিয়ান ধন-সম্পত্তির খোঁজে জোরদার তাল্লাশি, কেন ঐতিহাসিক সম্পদের পিছনে পড়েছে তালিবানেরা?
ব্যাকট্রিয়ান ধন-সম্পত্তির খোঁজে জোরদার তাল্লাশি, কেন ঐতিহাসিক সম্পদের পিছনে পড়েছে তালিবানেরা?
ক্ষমতা দখলের পর থেকেই আফাগানিস্তানের মানুষের জন্য রোজই নিত্যনতুন ফতোয়া জারি করেছে তালিবানিরা। এবার আফগানিস্তানে রাখা সবচেয়ে মূল্যবান ধন-সম্পদ খুঁজে পেতে এবার জোরদার অনুসন্ধান অভিযান শুরু করে দিয়েছে উগ্রপন্থীরা। নয়া তালিব সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের কর্মকর্তারা সম্প্রতি এই তথ্য দিয়েছেন। যা নিয়ে জোরদার আলোড়ন শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
প্রথম খোঁজ মেলে আজ থেকে ৪ দশক আগে
তালেবান কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ব্যাকট্রিয়ান ধন-সম্পত্তি খুঁজে বের করার চেষ্টা শুরু করেছেন। চার দশক আগে উত্তর জাউজান প্রদেশের প্রাণকেন্দ্রে শেরবার্গেন জেলার তেলা তপা এলাকায় একটি বড় মাপের গুপ্তধন পাওয়া যায়। উঠে আসে প্রচুর সোনা। বর্তমানে এই জাতীয় আরও ধন-সম্পতির খোঁজ চালাচ্ছে তালিবরা। এদিকে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুসারে, ব্যাকট্রিয়ান সম্পদের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন বিশ্বের কয়েক হাজার সোনার টুকরো। ছয়টি সমাধির ভেতরে এগুলো পাওয়া গেছে।
কী এর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য আরও বলছে ব্যাকট্রিয়ান সম্পদের মধ্যে খ্রিস্টপূর্ব শতাব্দী থেকে শুরু করে প্রথম খ্রিস্টাব্দের সোনা রয়েছে। মোট সম্পদের মধ্যে ২০ হাজারের বেশি জিনিস রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আছে সোনার আংটি, মুদ্রা, অস্ত্র, কানের দুল, ব্রেসলেট ইত্যাদি। যা বর্তমান বাজারদর যে কয়েক হাজার কোটি টাকার বেশি হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
কী বলছে অন্তর্বর্তী সরকারের সাংস্কৃতিক কমিশন
আফগানিস্তানে তালিবানের অন্তর্বর্তী সরকারের সাংস্কৃতিক কমিশনের উপ-প্রধান আহমদুল্লাহ ওয়াসিক জানান, ব্যাকট্রিয়ান সম্পদের খোঁজ করতে সংশ্লিষ্ট দফতরকে দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তৈরি হয়েছে একাধিক বিশেষজ্ঞ দল। তারাই খোঁজ চালাবেন এই প্রাগৈতিহাসিক সম্পদের। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুসারে ব্যাকট্রিয়ান সম্পদ গুলি মূলত যে সমাধিগুলিতে রয়েছে সেগুলি ছয় বিত্তশালী এশীয় যাযাবরের। এদের মধ্যে পাঁচ নারী ও এক পুরুষ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সব সম্পদই কম করে ২ হাজার বছর পুরনো।
১৩ বছরে ১৩ বার প্রদর্শনী
এদিকে চার দশক আগে আফগানিস্তানের উত্তর জাউজান প্রদেশে এই ধরণের সম্পদের খোঁজ মেলার পর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়তে থাকে উদ্বেগ। এমনকী অনেকেই বলেন বেশ কিছু সম্পদ দেশের বাইরেও পাচার হয়ে গিয়েছে। এদিকে তালিবান আগ্রাসনের আগে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগান প্রেসিডেন্ট প্যালেসে এগুলি আনা হয়। পরে জনগণের জন্য এগুলো প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছিল। গত ১৩ বছরে ১৩ বার প্রদর্শন করা হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে।