চরম উত্তেজনা দক্ষিণ চিন সাগরে! বেজিংকে রুখতে এবার করোনা আবহেই সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে তাইওয়ান
দক্ষিণ চিন সাগরে মাত্র কয়েক মাইলের মধ্যে অবস্থান করছে চিনা রণতরী এবং মার্কিন নৌবাহিনী। দু'তরফেই রয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা। যেকোনও সময় শত্রুর আক্রমণ নেমে আসতে পারে। এরই মাঝে তাইওয়ান প্রণালীর মিডিয়ান লাইন অতিক্রম করে সোমবারও চিনা যুদ্ধবিমান তাইওয়ানে ঢোকার চেষ্টা করে। এই আবহে আমেরিকা কতদিন তাইওয়ানকে সুরক্ষিত রাখতে পারবে? এই ভেবেই এবার নিজেদের নিরাপত্তার বিষয়ে নিজেরাই আরও বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে তাওয়ান।

সামরিক হুমকি বাড়িয়ে চলেছে চিন
গত কয়েক মাস ধরে এ অঞ্চলে সামরিক হুমকি বাড়িয়ে চলেছে চিন। তারা তাইওয়ান দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা জোরদার করছে। দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা লক্ষ করলে দেখা যাবে, চিন ধীরে ধীরে তার সামরিক প্রস্তুতি বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষত তাইওয়ানের নিকটবর্তী জলসীমা ও আকাশসীমায় তারা এ কাজ করে চলছে। তাদের দিক থেকে হুমকি বেড়েই চলছে।

চিন সামরিক ক্ষেত্রে খরচ করেছে ২৬১ বিলিয়ন ডলার
চিন সামরিক ক্ষেত্রে খরচ করেছে ২৬১ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৮ সালের থেকে ৫.১ শতাংশ বেশি। বেজিংয়ের কাছে রয়েছে ২১ লাখের বেশি সেনা। রয়েছে ৩৩ হাজার সাজোঁয়া গাড়ি, ৩৫০০ ট্যাংক। চিনা বায়ুসেনার কাছে রয়েছে ১২৩২। চিনা নৌবাহিনীর কাছে রয়েছে ৭৪টি সাবমেরিন, ৩৬টি ডেসট্রয়ার যুদ্ধজাহাজ এবং ৫২টি রণতরী।

চিনকে টেক্কা দিতে খরচ বাড়াচ্ছে তাইওয়ান
এদিকে চিনের এই শক্তিকে টেক্কা দিতে এবার প্রতিরক্ষা খাতে খরচ বাড়াতে চলেছে তাইওয়ানও। গত বছরের নিরিখে প্রতিরক্ষা খাতে এবার ১০ শতাংশ বেশি বরাদ্দ করেছে তাইওয়ান। তাইওয়ান মাত্র ১৩ হাজার ৮২৬ বর্গমাইলের একটা দ্বীপ। আয়তনে চিনের চার শতাংশও হবে না। লোকসংখ্যায় দুই শতাংশেরও কম হবে। তবুও নিজেদের দেশের সার্বভৌমত্ম রক্ষার্থে করোনা আবহেও সামরিক শক্তি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাইওয়ান। আর তার জন্য দেশটির বরাদ্দ হতে চলেছে ৪৫৩.৪ বিলিয়ন তাইওয়ানিজ ডলার।

বেজিংয়ের চোখে চোখ রেখে কথা বলা
তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন বেজিংয়ের চোখে চোখ রেখে কথা বল যাচ্ছেন। ২০২০ সালের মে মাসে তাইওয়ানের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন চিনবিরোধী নেতা সাই ইং ওয়েন। তাঁর শপথগ্রহণের পর চিনের তাইওয়ান বিষয়ক দফতরের মুখপাত্র ম্যা জিয়াওগুয়াং বলেন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার পর্যাপ্ত সক্ষমতা চিনের রয়েছে। বেজিং কখনওই কোনও বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম বা চিনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বাইরের শক্তির হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না।

চিন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত
চিন-তাইওয়ান বিরোধের সূত্রপাত ১৯২৭ সালে। ওই সময়ে চিনজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গৃহযুদ্ধ। ১৯৪৯ সালে মাও জে দংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা জাতীয়তাবাদী সরকারকে উৎখাতের মধ্য দিয়ে এ গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। জাতীয়তাবাদী নেতারা পালিয়ে তাইওয়ান যান।

তাইওয়ানের অভিযোগ
তাইওয়ান সরকার দাবি করে, চিন কমিউনিস্টদের দ্বারা অবৈধভাবে দখল হয়েছে। আর বেজিংভিত্তিক চিনা সরকার তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্নতাকামী প্রদেশ হিসেবে বিবেচনা করে। বর্তমানে তাইওয়ানকে চিনের স্বশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। আর তাই এবার বেজিং হংকং মডেল অনুসরণ করে জোর খাটাতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে তাইপেইয়ের তরফে।

প্রচণ্ডের সামনে মাথা নোয়াচ্ছেন ওলি, চিন্তায় বেজিং! নেপালের রাজনীতিতে বড়সড় রদবদলের ইঙ্গিত