ফের আত্মঘাতি হামলা ইন্দোনেশিয়ায়, গির্জার পর নিশানায় এই স্থান
ইন্দোনেশিয়ায় সুরাবায়া শহরের পুলিশ সদর দফতরে এক শিশু-সহ একই পরিবারের পাঁচজন সদস্য আত্মঘাতি বোমা হামলা চালিয়েছে। ঘটনায় হত ১, আহত ৪ পুলিশ সহ মোট ১০ জন।
ইন্দোনেশিয়ায় ফের আত্মঘাতি জঙ্গি হামলা! ঘটনাস্থল সেই সুরাবায়া শহর। গির্জার পর এবার নিশানায় পুলিশ সদর দফতর। সোমবারও হামলা চালিয়েছে এক পরিবারের সদস্যরা। সেদেশর পুলিশ জানিয়েছে এক শিশু-সহ পরিবারের পাঁচজন সদস্য এই হামলা চালিয়েছে। ঘটনায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন। তাদের মধ্যে ৪ জন পুলিশ সদস্য। রবিবার ইন্দোনেশিয়ার দুটি গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছিল আরও একটি পরিবার। তাতে অন্তত ১৩ জন নিহত হয়েছিলেন।
সোমবারের হামলার ঘটনা ধরা পড়েছে শহরের সিসিভিভি ক্যামেরায়। ইন্দোনেশিযার জাতীয় পুলিশ প্রধান টিটো কর্ণাভিয়ান জানান, 'এক শুদুই মোটর বাইক চালাতে পাঁচজন লোক ছিল। তাদের মধ্যে একজন ছোট্ট শিশু ও এক মহিলাসহ দুটি মোটরবাইকে করে মোট পাঁচজন এসে হামলা চালায়। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য।' পুলিশ সদর দপ্তরের কাছে পৌঁছেই তারা আত্মঘাতি বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে ওই পরিবারের আট বছরের শিশুকন্যাটি বেঁচে গিয়েছে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তার বাবা-মা ও দুই দাদার সবাই মারা গিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভা পুলিশের মুখপাত্র বারুং মাঙ্গেরা জানিয়েছেন, 'আত্মঘাতী হামলাটি ঘটেছে সকাল পৌনে ৯ টার দিকে'।
রবিবার সন্ধ্যায় পূর্ব জাভার সিদরাজোর ওনোকোলো অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের পঞ্চম তলা থেকে পর পর কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছিলেন স্থানীয়রা। একই পরিবারের বাবা-মা ও এক শিশু ওই ঘটনায় নিহত হয়। এক ছেলে ও এক মেয়ে ওই ঘটনেয় বেঁচে যায়। তাদের চিকিৎসা চলছেয তবে পুলিশের দাবি 'তারা হামলার শিকার নয়, বরং বাবা-মায়ের সঙ্গে মিলে তারা বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেসময়ই অসতর্কতায় একধিক বিস্ফোরণ ঘটে যায়। অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ওই বিস্ফোরণের সঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের হওয়া হামলার যোগসূত্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
রবিবার অবশ্য ইন্দোনেশিয়ার আরেকটি পরিবারের সদস্যরা মিলে তিনটি গির্জায় হামলা চালায়। একটি হামলা পুলিশ ঠেকাতে পারলেও অপর দুটি বিস্ফোরণে নিহত হন অন্তত ১৩ জন। ঘটনার দায় নিয়েছিল আইএস জঙ্গি গোষ্ঠি। টিটো কর্ণাভিয়ান জানিয়েছিলেন, 'পরিবারটি ইন্দোনেশিয়ায় আইএসের সহযোগী জঙ্গি সংগঠন জামিয়া আনসারুত দাওলার (জেএডি) সদস্য ছিল। সিরিয়ায় থাকতে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠিটির সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়েছিল।' এদিনের ঘটনার পেছনেও আইএসের হাত থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ইসলামি জঙ্গিদের প্রভাব রয়েছে। ২০০২ তে বালিতে বোমা হামলায় ২০০ জনের প্রাণ গিয়েছিল। তারপর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী কয়েকশ' জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। জঙ্গি নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে। কিন্তি গত রবিবার থেকে হওয়া ঘটনাক্রম বলছে জঙ্গিরা কৌশল বদলে সাধারণ নাগরিকদের প্রভাবিত করে হামলা চালাচ্ছে।