লাগাতার বিক্ষোভে নতিস্বীকার, পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষে
গত কয়েকমাস ধরে ভয়ঙ্কর অবস্থা শ্রীলঙ্কা জুড়ে। স্বাধীনতার পর সে দেশে ভয়ঙ্কর অর্থনৈতিক সঙ্কট চলছে। দিনের একটা বড় অংশ জুড়ে লোডশেডিং করে রাখা হচ্ছে। সমস্ত জিনিসের দামও আকাশ ছোঁয়া। এই অবস্থায় লঙ্কার মানূষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বেড়েছে। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে মানুষের ক্ষোভ।

এই অবস্থায় সে দেশের প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষের ইস্তফার দাবি উঠছিল। কিন্তু কোনও আন্দোলনের কাছেই নতিস্বীকার তিনি করবেন না বলেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। এই অবস্থায় লাগাতার আন্দোলনের চাপে রাজাপক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।
Sri Lankan Prime Minister Mahinda Rajapaksa resigns: Local media#SriLanka
— ANI (@ANI) May 9, 2022
(file pic) pic.twitter.com/PWAkZGGVms
তবে ইস্তফার ঠিক আগে রাজাপক্ষে একটি টুইট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, শ্রীলঙ্কার মানুষের আবেগ বাড়ছে। এমন অবস্থায় সে দেশের জনগণকে সংযম থাকার কথাও টুইটের মাধ্যমে জানিয়েছেন রাজাপক্ষে। শুধু তাই নয়, হিংসা শুধুমাত্রই হিংসা ছড়ায় বলেও টুইটে লেখেন তিনি। পাশাপাশি আর্থিক সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলেও মন্তব্য রাজাপক্ষের। আর প্রশাসন সেই রাস্তা খোঁজার চেষ্টা করছে বলেও জানান। আর এরপরেই প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ।
শ্রীলঙ্কায় এই মুহূর্তে প্রবল অর্থনৈতিক সঙ্কট চলছে। চিন সহ একাধিক দেশের কাছ লোন নিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় 'অর্থনৈতিক ভাবে দেউলিয়া' ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা। আর এরপর থেকে সে দেশের মানুষের মধ্যে আরও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। একেবারে পথে নেমে ক্রমশ চলছে আন্দোলন-বিক্ষোভ।
প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ক্রমশ চড়ছিল উত্তেজনার পারদ। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন আগেই মধ্যরাত থেকে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করার ঘোষণা করেন সে দেশের রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে। গত পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার সরকার বিরোধী বিক্ষোভকে প্রশমন করতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন রাজাপক্ষে। কিন্তু এরপরেও সে অর্থে বিক্ষোভ ঠেকানো রীতিমত চ্যালেঞ্জের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রশাসনকে পড়তে হচ্ছিল।
এই অবস্থায় আজ সোমবার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রাজাপক্ষের। জানা যাচ্ছে, তাঁর ইস্তফার পরেই রাস্তায় নেমেছেন বহু শ্রীলঙ্কার মানুষ। পালটা যে কোনও ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিশাল পুলিশবাহিনীকেও মোতায়েন করা হয়েছে সেখানে।
বলে রাখা প্রয়োজন, ২.২ কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশ। পরিস্থিতি সেখানে এতটাই খারাপ যে খাবার, ওষুধ, জ্বালানির অপ্রতুলতায় ভুগছে গোটা দেশ। যার ফলে দেশের সব প্রান্তে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এটাই শ্রীলঙ্কায় হওয়া সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে উঠে এসেছে।