শ্রীলঙ্কাজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত! ফের জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করলেন রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে
বেশ কিছুদিন ধরে চলা অচলাবস্থা দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় আরও সংকটজনক মোড় নিল বলেই আপাতভাবে মনে হচ্ছে। কারণ শুক্রবার মধ্যরাত থেকে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করার ঘোষণা করেছেন সেদেশের রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এই নিয়ে পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার সরকার বিরোধী বিক্ষোভকে প্রশমন করতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন রাজাপক্ষে।

এদিন শুক্রবার দেশজুড়ে ট্রেড ইউনিয়ন বিক্ষোভ দেখিয়েছে। এবং শ্রীলঙ্কায় বেড়ে চলা অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষিতে রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছে। তারপরই পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষে ফের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
শ্রীলঙ্কার শ্রমিক সংগঠনগুলি নাগাড়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছে এবং ধর্মঘট করে চলেছে। বর্তমান অর্থনৈতিক অবনতির জন্য সরাসরি রাষ্ট্রপতি রাজাপক্ষেকে কাঠগড়ায় তুলেছে শ্রমিক সংগঠন। এদিন তার ওপরে ছাত্ররা ফের রাস্তায় নেমে চূড়ান্ত বিক্ষোভ দেখায়। যার ফলে পুলিশকে কাঁদানে গ্যাস এবং জলকামান নিয়ে মোকাবিলায় নামতে হয়। এর ফলে অনেকে আহত হয়েছেন। ছাত্রসমাজ শুরু থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে পথে নেমেছে।
২.২ কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কায় গত কয়েক মাস ধরেই চূড়ান্ত অরাজক অবস্থা চলছে। খাবার, ওষুধ, জ্বালানির অপ্রতুলতায় ভুগছে গোটা দেশ। যার ফলে দেশের সব প্রান্তে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর থেকে এটাই শ্রীলঙ্কায় হওয়া সবচেয়ে বড় সংকট হিসেবে উঠে এসেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পথে ঘাটে নেমে আমজনতা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে।
এদিন শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা বন্ধে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বেসরকারি বাস রাস্তায় নামেনি। শিল্প শ্রমিকরা কারখানার বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। এবং দেশজুড়ে গোতাবায়া রাজাপক্ষের সরকারকে কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়েছে।
শ্রমিক সংগঠনের স্পষ্ট কথা, গুনে গুনে বলে দেওয়া যেতে পারে কোথায় কোথায় নীতি নির্ধারণে রাজাপক্ষে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। এবং যার ফলে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি কার্যত মাটিতে মিশে গিয়েছে।
এদিকে শতবিরোধ সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষে সাফ জানিয়েছেন, তিনি কোনওভাবেই পদত্যাগ করবেন না। এই অবস্থায় আগামিদিনে শ্রীলঙ্কার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই এখন দেখার।