সাত সপ্তাহের স্বেচ্ছা নির্বাসনের পর শ্রীলঙ্কায় ফিরলেন গোতাবায়া, বাড়ানো হল নিরাপত্তা
সাত সপ্তাহের স্বেচ্ছা নির্বাসন পর শ্রীলঙ্কায় ফিরলেন গোতাবায়া, বাড়ানো হল নিরাপত্তা
দেশের আর্থিক সঙ্কট ক্রমেই প্রকট হচ্ছিল। সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের আগুন আরও তীব্র হচ্ছিল। সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজপক্ষে। একাধিক দেশ ঘুরে সাত মাসের স্বেচ্ছা নির্বাসন পর তিনি ফের শ্রীলঙ্কায় ফিরে এসেছেন বলে জানা গিয়েছে। শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে তাঁকে ফুল ও মালা দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
শ্রীলঙ্কার আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজাপক্ষকে ফুলের মালা দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো জন্য সরকারি আধিকারিকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। জানা যায়, বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ড থেকে শ্রীলঙ্কায় ফেরেন। দেশের ক্ষুব্ধ জনগণ তাঁর বাসভবনে হামলা করেন। তার ঠিক আগেই গোতাবায়া শ্রীলঙ্কা ছেড়ে পালিয়ে যান। একটি বাণিজ্যিক বিমানে প্রথমে তিনি সিঙ্গাপুরে যান। সেখান থেকেই পদত্যাগ পত্র পাঠান। পাশাপাশি বিদেশ থেকেই রনিল বিক্রমাসিংহকে প্রেসিডেন্ট করার পক্ষে সওয়াল করেন। সিঙ্গাপুর থেকে তিনি ব্যাঙ্ককে চলে যান। ৫২ দিন পর তিনি ফের দেশে ফিরে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গোতাবায়া থাইল্যান্ডের হোটেলে ভার্চুয়াল বন্দি হিসেবেই বাস করছিলেন। তিনি প্রথম থেকেই শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন। শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসার পর গোতাবায়ার জন্য নতুন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে। ওই ইউনিটে সেনাবাহিনীর আধিকারিকদের সঙ্গে পুলিশও রয়েছে।
অন্যদিকে, জানা গিয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রথমে সিঙ্গাপুরে যান। সিঙ্গাপুর তাঁর স্বল্প মেয়াদের ভিসা বাড়াতে অস্বীকার করে। বাধ্য হয়েই সিঙ্গাপুর থেকে থাইল্যান্ডে যান। নিরাপত্তার কারণে তাঁকে হোটেলের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়। যার জেরে তিনি ব্যাঙ্ককে কার্যত হোটেলে বন্দি অবস্থায় ছিলেন। এই পরিস্থিতি তিনি শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। গোতাবায়ার ভাই তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বাসিল এই বিষয়ে শ্রীলঙ্কার বর্তমান প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি ক্ষমতাচ্যুত এই নেতাকে শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসার অনুমতি দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। অন্যদিকে, গোতাবায়া রাজপক্ষের শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসার জেরে জনগণের মধ্যে ব্যাপত ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাঁরা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে দায়ী করেছেন।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কায় ফেরার পর প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, গোতাবায়া নিজের বাসভবনে যাবেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি একটি সরকারি ভবনে রয়েছে। সেখানে নিরপত্তা বলয় কঠোর করা হয়েছে। সাদা পোশাকের পুলিশ সহ সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
তেজস্বীকে এবার বড় 'ধাক্কা' দেওয়ার মেজাজে নীতীশের জেডিইউ! বিহারে উঠল কোন দাবি
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারীর পর শ্রীলঙ্কার পর্যটন শিল্প ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ে। করোনা মহামারী, লকডাউনের প্রভাব ছোট দ্বীপরাষ্ট্রটি সামলাতে পারেনি। যার জেরে ব্যাপক আর্থিক সঙ্কট দেখতে পাওয়া যায়। বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা যায়। জ্বালানির আকাল দেখা দেয়। শ্রীলঙ্কার মুদ্রাস্ফীতি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।