For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

দক্ষিণ কোরিয়া: হ্যালোইন উৎসবের ভিড়ে মৃত্যুর কবল থেকে যেভাবে প্রাণ নিয়ে ফিরে এসেছেন এক বাংলাদেশি

  • By Bbc Bengali

১৫৩ জন মানুষ পদদলিত হয়ে মৃত্যুর এই ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
Getty Images
১৫৩ জন মানুষ পদদলিত হয়ে মৃত্যুর এই ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোলে শনিবার রাতে ভিড়ে চাপা পড়ে দেড়শোর বেশি মানুষ যখন নিহত হন, তখন ভাগ্যক্রমে সেই দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে যান সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা বাংলাদেশি নাগরিক ম্যাক্সিম চৌধুরী। সোল শহরের জনপ্রিয় নৈশ বিনোদন এলাকা ইতেওন এলাকায় হ্যালোউইনের উৎসব দেখতে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে তিনিও গিয়েছিলেন। একটি সরু গলির মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় যে হাজার হাজার মানুষ আটকে পড়েছিল, সেই জনস্রোতে তিনিও ছিলেন। ম্যাক্সিম চৌধুরী দক্ষিণ কোরিয়ায় আছেন তিরিশ বছরের বেশি সময় ধরে। কীভাবে তিনি শনিবারের দুর্ঘটনার সময় সেই ভিড় ঠেলে প্রাণে বেঁচে ফিরে এসেছেন, সেই কাহিনী বলেছেন বিবিসি বাংলার শাকিল আনোয়ারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে:

সোলের ইতেওন এলাকাটা আমারও খুব প্রিয়, এটা আমার খুবই পরিচিত একটা জায়গা। আমার কিছু ভাই-স্বজন এই এলাকায় থাকে। যে কোন উৎসবে-অনুষ্ঠানে সেখানে মানুষের ঢল নামে। বিদেশিদের কাছেও জায়গাটা বেশ জনপ্রিয়।

শনিবার ছিল আমার ছুটি। হ্যালোইনের উৎসব দেখতে আমরা ৪/৫ বন্ধু মিলে শনিবার সেখানে যাই। গিয়ে দেখি সেখানে হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে।

করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ এভাবে মুক্ত পরিবেশে উৎসব করার সুযোগ আর পায়নি। শনিবার সেই সুযোগটা পেয়েছিল মানুষ। কাজেই সেখানে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল।

অন্যান্য খবর:

দক্ষিণ কোরিয়ায় হ্যালোউইন উৎসবে ভিড়ে চাপা পড়ে মৃত্যুর সংখ্য দেড়শ ছাড়িয়েছে

পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের তীব্র প্রতিবাদ, মিয়ানমারের দুঃখপ্রকাশ

বাংলাদেশের 'পাগলাটে' এক জয়ের পাঁচটি আলোচিত মুহূর্ত

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের স্ত্রী কে এই আকশাতা মূর্তি

হুড়োহুড়ি যেভাবে শুরু

আমরা ইতেওনে পৌঁছে দেখি, সেখানে ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি লোকসমাগম হয়ে গিয়েছে। স্রোতের মতো মানুষ কেবল আসছে। মানুষের স্রোতের ধাক্কায় আমরাও সামনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছি। হ্যামিলটন হোটেলের যে সরু গলিতে ঘটনা ঘটেছে, আমরা সেদিকেই আগাচ্ছিলাম।

এই গলিটা একদম সংকীর্ণ, নিঃশ্বাস ফেলার মত জায়গা ছিল না। এরপরে আবার আরেকটা গলি। মানুষের ভিড়ের ডানে-বামে কেটে আমরা সামনে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু একটা পর্যায়ে স্রোতটা আটকে গেল।

কারণ সামনের গলিতে ছিল একটা নাইটক্লাব। এই ক্লাবে ঢোকার জন্য সব সময় একটা দীর্ঘ লাইন থাকে। সেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ, আবার এদিক থেকে যাওয়া মানুষের স্রোত, সব মিলিয়ে একটা জট তৈরি হলো। সেখানে সবাই এই সরু জায়গার মধ্যে আটকা পড়ে গেল।

আর এই জায়গাটা ছিল একটু ঢালু, নীচের দিকে নেমে গেছে। ভিড়ের চাপে যখন কেউ একজন পড়ে যাচ্ছিল, তাকে আর তোলা যাচ্ছিল না, তার ওপর দিয়ে অন্যরা চলে যাচ্ছিল। যারা পড়েছে তাদের একজনও আর উঠতে পারেনি। এভাবেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছিল।

আমি যেভাবে বেঁচে গেলাম

আমরাও আসলে এই গলিটার দিকেই যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু মানুষের স্রোত যখন আটকে গেল তখন আমরা আর সেই গলি দিয়ে নামার সুযোগ পাইনি। নামলে আমরাও দুর্ঘটনার শিকার হতাম। আমরা সেদিকে না গিয়ে সামনের আরেকটা রাস্তার দিকে অগ্রসর হই।

তখনো আমরা টের পাইনি, কী ঘটছে। এত যে প্রাণহানি হচ্ছে, বুঝতে পারিনি। ভেবেছি হয়তো কিছু মানুষ আহত হয়েছে, হয়তো দু-একজন মানুষ মারা গেছে।

এই দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে সেখানে যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল কীনা।
Getty Images
এই দুর্ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে সেখানে যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল কীনা।

ঐ রাস্তা থেকে বেরিয়ে যখন অন্যদিকে গেলাম, তখন ফায়ার ব্রিগেডের লোক আসতে শুরু করেছে। এরপর পুলিশ আসলো। এরা যখন এলাকাটা ক্লিয়ার করা শুরু করলো, আহত বা নিহত লোকজনকে এনে রাস্তায় শোয়ানো শুরু করলো, তখন বুঝতে পারলাম যে ভয়াবহ এক ঘটনা ঘটে গেছে।

এত মৃত্যু কখনো দেখিনি

আমি দক্ষিণ কোরিয়ায় আছি বহু বছর ধরে। এত বেশি মৃত্যু আমি চোখের সামনে আর কখনো দেখিনি। এর আগে ২০১৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় একটা জাহাজ ডুবিতে প্রায় তিনশো মানুষ মারা গিয়েছিল। এরও বহু বছর আগে যখন এখানে ছাত্র হিসেবে এসেছিলাম, তখন এখানে একটা ডিপার্টমেন্ট স্টোর ভেঙে পড়েছিল। সেখানে অনেক মানুষ মারা যায়। কিন্তু সেটা তো আমার সামনে ঘটেনি। কিন্ত গতকালের ঘটনাটা আমি চোখের সামনে দেখেছি।

আমি এত মৃত্যু কখনো দেখিনি। মানুষের মৃত্যু যে কত করুণ হতে পারে, কতটা বেদনাদায়ক হতে পারে, সেটা আমি দেখেছি, কিন্তু এটা আমি বুঝিয়ে বলতে পারবো না।

আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আমার হয়তো হায়াত ছিল, হয়তো তাই আমি শনিবার ঐ গলিতে ঢুকতে পারিনি।

পুরো দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষ এখন খুবই ভারাক্রান্ত। সবাই খুব মুষড়ে পড়েছে। পুরো জাতি যেন একটা বড় ধাক্কা খেয়েছে।

English summary
South Korea Halloween tragedy: How a Bangaldeshi saved his life
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X