For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

নেতা হবে ছেলে, তাই নাম ঠিক করতে পরিবারের ভোট

শিশুর নাম রাখা নিয়ে অভিনব এক নির্বাচন হয়ে গেল ভারতে। পরিবারের উদ্যোগে নানা নামের ব্যানার লাগানো হলো, হলো প্রচারণা, তারপর ভোট। কেমন হয়েছিল ওই নির্বাচন?

  • By Bbc Bengali

সন্তানের নাম কী রাখবেন, তা নিয়ে অনেক বাবা মা-ই আজকাল বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন। কেউ শরণাপন্ন হন কবি-সাহিত্যিকদের, কেউ খোঁজেন অভিধান, কেউ আবার চিরাচরিতভাবে পরিবারের বড়দের দেওয়া নামটাই রেখে দেন।

নেতা হবে ছেলে, তাই নাম ঠিক করতে পরিবারের ভোট

কিন্তু এ সব চেনা-জানা পদ্ধতির ধার ধারেন নি মহারাষ্ট্রের গোন্ডিয়া জেলার বাসিন্দা মিঠুন আর মানসী বাং। তারা আয়োজন করেছেন এক ভোটাভুটির, কারণ তাদের ছেলে বড় হয়ে নেতা হবে বলে ঠিকুজিতে দেখা গেছে।

এক মেয়ের পাঁচ বছর পরে পুত্র সন্তান হয় বাং দম্পতির, ৫ এপ্রিল।

"ছেলে হওয়ার পরে আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে তার জন্মকুন্ডলি তৈরি করা হয়। শ্বশুর-মশাই ঠিকুজি দেখে বলেছেন যে ছেলে একদিন নেতা হবে বা সামাজিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত হবে।"

"কিন্তু সেই ছেলের নাম কী রাখা হবে, তা নিয়ে আমি আর আমার স্ত্রী অনেক ভেবেও কুল কিনারা করতে পারছিলাম না। আমার বড়ভাই আর তার স্ত্রী বলেছিলেন ইয়ক্শ নামটা রাখা যেতে পারে। দিদি আর বোনদের ছেলেমেয়েরা বলেছিল মামা, ইয়ুভান নামটা ভাল। আর দিদি-বোনেরা নাম দিতে চেয়েছিল ইয়োভিক," বলছিলেন কাপড়ের ব্যবসায়ী মি. বাং।

এই তিনটি নামের মধ্যে কোন নামটি বেছে নেবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না কেউই।

মি. বাংয়ের মাথায় তখন আইডিয়া আসে ভোট নেওয়া যেতে পারে!

ব্যাস, যেমন কথা তেমন কাজ। সামাজিক কাজকর্মে জড়িত থাকার সুবাদে আর আত্মীয় পরিজনদের মধ্যে একজন প্রাক্তন সংসদ সদস্য থাকার ফলে কীভাবে ভোটের আয়োজন করতে হয় সেটা তার কিছুটা জানাই ছিল।

মিঠুন বাং বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "আমাদের জেলার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কিছুটা খাতির আছে। তাই তাদের কাছে একটা ইলেক্ট্রনিক ভোট যন্ত্র চেয়েছিলাম। তারা দিয়েও দিতেন হয়তো, কিন্তু আমার কয়েকজন বন্ধুই বারণ করল। বলল যে ওটা নির্বাচন কমিশনের সম্পত্তি। সেটা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নয়। তখন ব্যালট পেপার ছাপা হল। নির্বাচন কমিশনের আদলে 'শিশুর নাম নির্বাচন কমিশন' বানানো হল। আমাদের এক আত্মীয় আর একজন শিক্ষক এই কমিশনের সদস্য হলেন।"

১৫ জুন ছিল তাদের সন্তানের নামকরণের দিন, মানে ভোটের দিন।

ব্যবস্থা তো আগে থেকেই করতে হয়। তাই ব্যালট পেপার ছাপার পরে তৈরি হয়েছিল ব্যালট বাক্স। ভোট দেওয়ার জন্য ঘেরা জায়গা, তিনটি নামের প্রস্তাব যারা দিয়েছিলেন, তাদের নামে হোর্ডিং - সবই ছিল একেবারে নির্বাচনের মতো।

মি. বাং যে এলাকায় থাকেন, নাগপুরের কাছে গোন্ডিয়া জেলার সেই এলাকার নাম দেওরী তহশীল।

গোন্ডিয়াতে কদিন আগেই 'আসল' উপনির্বাচন হয়েছে। বিজেপি-র এক সংসদ সদস্য দল থেকে পদত্যাগ করে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। আর সেই নির্বাচনে বিজেপি-র পরাস্ত হওয়া নিয়ে জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে আলোচনাও হয়েছে অনেক।

তাই আত্মীয়-বন্ধুদের স্মৃতিতে সদ্য সমাপ্ত 'আসল' নির্বাচনের মতোই যাতে ভোটের ব্যবস্থাপনা হয়, সব ব্যবস্থাই করেছিলেন মি. বাং।

জানতে চেয়েছিলাম, ভোটের প্রচার চালানো হয় নি?

উত্তরে হেসে বললেন, "হ্যাঁ, তা-ও হয়েছে। আমি নিজে কয়েকটা হোর্ডিং লাগিয়েছিলাম অনুষ্ঠানের জায়গায়। আর যারা যে নাম পছন্দ করেছিল, তারা হোয়াটস্অ্যাপে নিজেদের ডিসপ্লে পিকচারটা প্রচারের জন্য পাল্টে দিয়েছিল। যেমন আমার বড়ভাই আর বৌদি লিখেছিলেন 'ভোট ফর ইয়ক্শ'। দিদি আর বোনেদের ছেলেমেয়েরা দিয়েছিল 'ভোট ফর ইয়ুভান'। আর আমরা যেহেতু নামের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না, তাই আমি আর আমার স্ত্রী ডি পি বানিয়েছিলাম চিন্তিত মুখের একটা ছবি।"

ভোটের আগের দিন সব অতিথি অভ্যাগতদের অনুরোধ করা হয়েছিল ভোট দেওয়ার জন্য - যেমন করে থাকে নির্বাচন কমিশন।

সন্ধেবেলায় সবাই আসার পরে যখন ঘোষণা করা হল ভোট দেওয়া শুরু হচ্ছে, মঞ্চে লাইন লেগে গিয়েছিল।

"অতিথিদের মধ্যে এলাকার প্রাক্তন সংসদ সদস্যও ছিলেন। তার অন্য জায়গায় যাওয়ার তাড়া ছিল। তাই ঘণ্টা দেড়েক পরে ভোট নেওয়া বন্ধ করতে হয়। ৭০০ জনের মধ্যে ততক্ষণে প্রায় ২০০ জন ভোট দিয়ে দিয়েছেন। তারপরে ভোট গণনা শুরু হয়। আর চূড়ান্ত ফল ঘোষণাটাও নাটকীয় হয়েছিল। তিনটে পর্দা ধীরে ধীরে উঠে যায়, শেষেরটায় লেখা ছিল নির্বাচিত নামটা। পর্দাটা তুলে ভোটের চূড়ান্ত ফল জানিয়েছেন মি. নানা পাটোলে, যিনি বিজেপির সংসদ সদস্য ছিলেন, এখন কংগ্রেসের রাজ্য নেতা," জানাচ্ছিলেন মিঠুন বাং।

আরো পড়তে পারেন:

ভক্তদের উল্লাস কি আসলেই ভূমিকম্প তৈরি করেছিল?

ভক্তদের উল্লাস কি আসলেই ভূমিকম্প তৈরি করেছিল?

ঘোড়ায় চড়া, জুতা পরায় দলিতদের উপর হামলা

স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় জনপ্রিয় হচ্ছে প্লগিং

কোন নামটা জিতল ভোটে?

"আমার দিদি আর বোনের ছেলেমেয়েরা যেটা দিয়েছিল, সেটাই। ইয়ুভান। এটা ভগবান শিবের আরেকটা নাম। ওরা খুব মজা পেয়েছে ফল ঘোষণার পরে। যে দুটো নাম ভোট জিততে পারে নি, তাদেরও মঞ্চে ডাকা হয়েছিল। বৌদি তো গেলই না, বড় ভাই লজ্জা পাওয়া মুখে মঞ্চে উঠল," হাসতে হাসতে বললেন মি. বাং।

বাং দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী মেয়ের নাম ভূমি। তার নামকরণ অবশ্য এরকম ভোট নিয়ে করা হয় নি। তবে তা নিয়ে মোটেই মন খারাপ নেই মেয়েটির। তবে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে এখন যে নিজের বাবা-মায়ের আর ছোট্ট ভাইয়ের ছবি দেখানো হচ্ছে, তাতেই সে খুশি।

English summary
Son would be leader, so the family's vote to fix the name
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X