বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি শহরে অস্ত্রধারীদের গুলিতে ৬ জন নিহত
পুলিশ বলছে ইউপিডিএফ এর প্রসীত গ্রুপের লোকজন সকালে একটি সমাবেশ ও মিছিল উপলক্ষে জড়ো হচ্ছিলেন। এ সময় অস্ত্রধারীরা জটলা লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে।
বাংলাদেশের খাগড়াছড়িতে পাহাড়ীদের সংগঠন ইউপিডিএফ সদস্যদের লক্ষ্য করে বন্দুকধারীদের হামলায় ছয় জন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন অন্তত তিন জন।
শহরের স্বনির্ভর বাজার এলাকায় সকাল পৌনে ৮টার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বিবিসি বাংলাকে জানান, পাহাড়ি সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) প্রসীত গ্রুপের লোকজন সকালে একটি সমাবেশ ও মিছিল উপলক্ষে জড়ো হচ্ছিলেন।
এ সময় অস্ত্রধারীরা পাশের একটি পুলিশ বক্স, সিএনজি স্ট্যান্ড এবং ইউপিডিএফের কার্যালয়ের সামনে জটলা লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। যা চলে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে।
এতে ইউপিডিএফের সদস্যসহ সাধারণ পথচারী হতাহত হন।
পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে সাত জনতে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায়। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছয় জনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে আরও কয়েকজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা, জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান হাসপাতালে হতাহতদের খোঁজখবর নেয়ার পাশাপাশি গুরুতর আহতদের দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
ইউপিডিএফের প্রতিপক্ষ জেএসএস এর সংস্কারপন্থী অংশ- ও ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক অংশ-বর্মা গ্রুপ হামলায় জড়িত থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
তবে এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানান তারা।
নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- তপন চাকমা, এল্টন চাকমা ও জিতায়ন চাকমা।
এর মধ্যে তপন চাকমা ইউপিডিএফ সহযোগী সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং এল্টন চাকমা একই সংগঠনের সহ সম্পাদক বলে জানা গেছে।
তবে জিতায়ন চাকমা সাধারণ পথচারী বলে জানায় পুলিশ।
এছাড়া গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে সোহেল চাকমা, সমর বিকাশ চাকমা ও সখিডন চাকমাকে। তারা ইউপিডিএফের সদস্য কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আধিপত্য বিস্তারের নাকি অন্য কোন কারণে এই হামলা হয়েছে সেটা তদন্তের নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি সদর থানার পুলিশ সুপার আলী আহমদ।
আরও পড়তে পারেন:
পার্বত্য চট্টগ্রাম: আঞ্চলিক রাজনীতির জটিল সমীকরণ
পাহাড়িদের দলগুলো বিভক্ত হয়ে পড়ছে কেন
পার্বত্য চট্টগ্রাম: আঞ্চলিক রাজনীতির জটিল সমীকরণ
হামলার বিষয়ে ইউপিডিএফের দুই পক্ষ বা জেএসএস এর কারো পক্ষ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বর্তমানে হামলা স্থলে বিজিবি সদস্যের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকলে পুরো শহরেই পরিস্থিতি থমথমে হয়ে আছে বলে জানা গেছে।