কিম জং উন, উত্তর কোরিয়ার রহস্যময় একনায়কের জীবনী একনজরে
কিম জং উন, উত্তর কোরিয়ার রহস্যময়ী একনায়কের জীবন এক নজরে
১৯৪৮ সালে উত্তর কোরিয়া প্রতিষ্ঠা করেন কিম ইল সং। তারপর থেকেই তার পরিবার দেশটি শাসন করছে। শাসন ক্ষমতা বাবার হাত থেকে যাচ্ছে ছেলের কাছে। প্রায় ৭০ বছরের শাসনকালে তিনজন নেতা পেয়েছে উত্তর কোরিয়া। প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল সংয়ের পর ক্ষমতায় বসেন তার ছেলে কিম জং ইল। সেখান থেকে ক্ষমতা পান তার ছেলে বর্তমান শাসন কিম জং উন।
নিজের কাকাকে মেরেছিলেন কিম জং উন
কিম জং লি মারা যাওয়ার পর উত্তর কোরিয়ার মসনদ দখল করেছিলেন কিম জং উন। তাঁর বিষয়ে শোনা যায়, তিনি নাকি তাঁর কাকাকে মেরে মৃতদেহটাকে কুকুরে খাইয়েছিলেন। কাকার প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল খুব বেশি, আর সেই প্রভাব খাটিয়ে কাকা তাঁর ভাইপোকে ক্ষমতায় বসতে সাহায্য করেছিলেন। তবে পরিস্থিতি বদলাতেই সেই কাকাকেই মেরে দিয়েছিলেন কিম।
কোন কোন পদে রয়েছেন কিম জং উন?
এমনকি নিজের দেশের সেনাবাহিনীর প্রধানকে মেরে ফেলেছিলেন কিম। কে এই কিম জং উন। নিজের দেশের সরকারের উপরে কতটা কর্তত্ব আছে তাঁর? উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতাশীন ওয়ার্কার্স পার্টি অব কোরিয়ার ফার্স্ট সেক্রেটারি, উত্তর কোরিয়ার কেন্দ্রীয় সেনা কমিশন ও জাতীয় প্রতিরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান এবং কোরিয়ান পিপলস আর্মির সুপ্রিম কমান্ডারও তিনি।
কিমের রাজনীতিতে পদার্পণ
২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি। সেদিনই এক তরুণ নেতাকে চার তারকা জেনারেল ও দেশটির শীর্ষ নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে বরণ করা হয় উত্তর কোরিয়ায়। এই দিনটিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে উদযাপনও করা হয়। সেই দিটনির ঠিক পাঁচ বছর পর উত্তর কোরিয়া তাদের প্রথম হাইড্রোজেন বোমার সফল পরীক্ষণ চালায়।
কবে জন্ম নেন কিম?
কিমের জন্মদিনটি কোরিয়ানদের কাছে আজও অজানা। দিনক্ষণ না জানা থাকলেও বছরটি ১৯৮৪ বলে একটা গুঞ্জন রয়েছে। তাঁকে নিয়ে এমন অজানা অনেক বিষয়ই রয়েছে দেশটির অধিবাসীদের কাছে।
উত্তর কোরিয়ার মসনদে কিম
২০১১-এর ডিসেম্বরে আকস্মিকভাবে মারা যান তাঁর বাবা কিম জং-ইল। বাবা কিম জং-ইলের মৃত্যুর পর কিম জং-উন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতার পদে বসেন। তার পর থেকে দল, সরকার এবং সেনাবাহিনীতে নিজের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে বহু পদক্ষেপ নেন কিম
অল্প বয়সে দেশের কিমের হাতে শাসনভার
অল্প বয়সে দেশের শাসনভার তুলে নেওয়ার পর অনভিজ্ঞ উনের ব্যাপারে অধিকাংশ পর্যবেক্ষকেরই ধারণা ছিল, অন্তত পরের কটি বছর বাবার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা এবং বরিষ্ঠ সেনা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে দায়িত্ব-কর্তব্য রপ্ত করেন তিনি।
কাজ ফুরোতেই যা করলেন কিম
তবে কাজ ফুরোতেই সেদেশের সেনা প্রধান জেনারেল রি ইয়ং-গিলকে মারা সিদ্ধান্ত নেন কিম। শুধু তাঁকে নয়, কিমকে পরমার্শ দানকারী শীর্ষ তিন সেনাকর্তাকেও একই ভাবে মৃত্যুদণ্ড বা বন্দি করেন কিম।
বাবার ঘনিষ্ঠদের সরাতে থাকেন কিম
এছাড়াও কিম তাঁর বাবার ঘনিষ্ঠ বেশ কিছু নেতা এবং সেনা অফিসারকে বরখাস্ত করেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় বলে খবর। ২০১৫-র মে মাসে তৎকালীন সেনাপ্রধান হিয়ং ইয়ং-চল-কেও কিম জং উন মৃত্যুদণ্ড দিয়ে দেন বলে খবর মিলেছিল। বিমান বিধ্বংসী কামান থেকে গোলা ছুড়ে তাঁকে মেরে ফেলা হয় বলে জানা যায়।
কিমের জীবন নিয়ে সংশয়
তবে গত ১৫ এপ্রিল ছিল কিমের দাদুর জন্মদিন। এ উপলক্ষে ওই দিন আয়োজিত অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন কিম। এটি অনেক বড় বিষয়। কারণ কিমের দাদু উত্তর কোরিয়ার জাতির জনকের জন্মদিন দেশটির জন্য খুব বড় অনুষ্ঠান। কিম জং-উন কখনও এ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকেননি। এরপরই শুরু হয় গুঞ্জন।
অসুস্থ কিম জং উন
হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন উত্তর কোরিযার নেতা কিম জং উন। এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই এই বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে উত্তর কোরিয়া জানিয়ে দেয় যে এই খবর সর্বৈব মিথ্যা। তবে এরপর হংকংয়ের এক টিভি চ্যানেলের খবরে কিমের মৃত্যু হয়েছে দাবি করতেই এই বিষয়ে শুরু হয় আরও জোর জল্পনা।