ইমরান খানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী কি 'ড. স্ট্রেঞ্জলাভ'! চিন্তায় ভারত-সহ গোটা বিশ্ব
খোলাখুলি, ভারতের শহর এলাকায় পরমাণু হামলার সুপারিশ করেন শিরিন মাজারি। কিন্তু তাকেই পরবর্তী পাক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী করার কথা ভাবছেন ইমরাণ খান।
ইমরান খানের মন্ত্রীসভায় স্থান পেতে পারেন ইসলামাবাদের স্কলার শিরিন মাজারি। শোনা যাচ্ছে তাঁকে প্রতিরক্ষা বা বিদেশ দপ্তরের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। অতীতে বিভিন্ন সময়ে তিনি খোলাখুলি ভারতের জনবহুল এলাকায় পরমাণু আক্রমণের সুপারিশ করেছেন। যে কারণে ভারত ও মার্কিন পরমাণু অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা তাঁকে পাকিস্তানের ড. স্ট্রেঞ্জলাভ বলে থাকেন।
সামরিক ক্ষেত্রে প্রতিআক্রমণ বলতে প্রতিপক্ষের সামরিক এলাকায় আক্রমণের কথা বোঝায়। কিন্তু শিরিন মনে করেন ভারতের পরমাণু অস্ত্রভান্ডারগুলি জনবহুল এলাকার কাছাকাছি, তাই এইসব এলাকাগুলিতে আক্রমণ করলেই সামরিক দিক থেকে ভারতের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করা যাবে।
ভারতের এক পদস্থ কূটনীতিকের মতে, মাজারির নিয়োগের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকে শুধু ভারতই নয় বিশ্বের বহু দেশই এনিয়ে চিন্তিত। মার্কিন মুলুকেও কূটনাতিকদের চিন্তুা বাড়িয়েছে এই সংবাদ। এক মার্কিন কর্তা জানিয়েছেন, 'প্রথমত, এরকম একজন কেউ যে জনজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এটাই খারাপ। এরপর একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণের পদে নিযুক্ত হয় তাহলে সেটা খুব খুব ক্ষতিকর হবে।'
১৯৯৯ সালে প্রকাশিত কয়েকটি নিবন্ধে অবশ্য শিরিন মাজারি, ভারতের সব জনবহুল এলাকায় পরমাণু হামলা চালাবেন না বলে জানিয়েছিলেন। ধর্ম দেখে তাঁর নিশানা থেকে বাদ গিয়েছে ভারতের বেশ কয়েকটি প্রদেশ। যেমন পঞ্জাবে তিনি হামলা চালাবেন না, সেখানে শিখদের বলতি বেশি বলে। হামলা চালানো হবে না পশ্চিমবঙ্গেও। কারণ এই রাজ্যের গায়েই রয়েছে বাংলাদেশ।
তাঁর মতে এবাবে পাকিস্তান বাংলাদেশকে বার্তা দিতে পারবে, যে সেই দেশের বাসিন্দাদের উপর যাতে পরমাণু আক্রমণের ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে তার জন্য পশ্চিমবঙ্গে হামলা চালানো হয়নি। শিখদের কেন তিনি রেহাই দিতে চান, তা শিরিন না লিখলেও অনেকের অনুমান খালিস্তানি জঙ্গিদের কথা মাথায় রেখেই পঞ্জাবকে ছাড় দিতে চান শিরিন।
সবচেয়ে ভয়ের বিষয় তিনি মনে করেন যে কোনও সাধারণ যুদ্ধের জবাবেও পাকিস্তানের উচিত ভারতের উপর পরমাণু আক্রমণ করা। তাঁর মতে পাকিস্তান দেশের এলাকা খুব বড় নয়। কাজেই সাধারণ যুদ্ধের ক্ষতি শিকার করার মতো বিলাসিতা করার উপায় তাদের নেই। তাই পরমাণু বোমা ব্যাবহারের 'নো-ফার্স্ট-ইউস' বিধি পাকিস্তানের ক্ষেত্রে খাটে না।
১৯৬৪ সালে প্রখ্যাত ফিল্ম পরিচালক স্ট্যানলি কুব্রিক তৈরি করেছিলেন ড. স্ট্রেঞ্জলাভ ছবিটি। ছবিটির মূল চরিত্র একজন আমেরিকান এয়ারফোর্স জেনারেল। ছবিতে তিনি তাঁর ঊর্ধতনদের না জানিয়েই রাশিয়ার উপর পরমাণু হামলা চালানোরর নির্দেশ দিয়েছিলেন। শিরিন মাজারি পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী অথবা পাক বিদেশমন্ত্রী হয়ে বসলে এশিয়ার দেশগুলির ঘুম ছুটে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।