পূর্ণ সদস্য না হয়েও এসসিও-র মঞ্চে আমেরিকাকে তুলোধোনা করল ইরান
মধ্য এশিয়ার দেশ কিরঘিস্তানের রাজধানী বিশকেক-এ চলছে সাংহাই ইকোনোমিক কোঅপারেশন বা এসসিও-র ঊনবিংশতম শীর্ষ সম্মেলন এবং সেখানে উপস্থিত রয়েছে গোষ্ঠীটির প্রত্যেক সদস্য দেশের নেতৃত্ব।
মধ্য এশিয়ার দেশ কিরঘিস্তানের রাজধানী বিশকেক-এ চলছে সাংহাই ইকোনোমিক কোঅপারেশন বা এসসিও-র ঊনবিংশতম শীর্ষ সম্মেলন এবং সেখানে উপস্থিত রয়েছে গোষ্ঠীটির প্রত্যেক সদস্য দেশের নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই দু-দিন ব্যাপী সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ছাড়াও রয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এবং প্রতিবেশী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আর এই নেতারা ছাড়াও মধ্য এশিয়ার চারটি দেশ কাজাখস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান এবং আয়োজক দেশ কিরঘিস্তানও রয়েছে।
ইরানের শীর্ষ নেতৃত্বও রয়েছে এই সম্মেলনে, যদিও ইরান পর্যবেক্ষক দেশ হিসেবেই পরিচিত এসসিও-র মঞ্চে। কিন্তু তা হলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের চলতে থাকা সংঘাতের বিষয়ে এসসিও-র মঞ্চকে কাজে লাগানোর কথা ভেবে ইরানের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি বক্তব্য পেশ করেছেন বিশকেকে।
'গত দুই বছর ধরে আমেরিকা যে খুশি তাই করছে'
শুক্রবার রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে রুহানি এসসিওতে করা তাঁর মন্তব্যে কড়া আক্রমণ করেছেন ওয়াশিংটনকে। তিনি বলেন বিগত দুই বছর ধরে আমেরিকা কোনওরকম আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের আর্থিক এবং সামরিক শক্তিকে ব্যবহার করে আগ্রাসী অবস্থান নিয়ে ওই অঞ্চল এবং সমস্ত পৃথিবীর স্থিতিশীলতার পক্ষে এক বড় বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, দু'বছর আগেই ওয়াশিংটনে পালাবদল হলে ক্ষমতায় আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ওমান খাঁড়িতে বাণিজ্যিক জাহাজের উপরে আক্রমণে পারদ চড়ছে
বৃহস্পতিবার মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পিও ওমান খাঁড়িতে জাপানি এবং নরওয়েজিও তেল বহনকারী জাহাজে আক্রমণ এবং আগুন লাগিয়ে দেওয়ার প্রেক্ষিতে ইরানকে আক্রমণ করার জবাবে রুহানি তাঁর বক্তব্য রাখেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয় যাতে দাবি করা হয় যে ইরানের ইসলামিক রিভোলিউশনারি গার্ডস কর্পস-এর একটি টহলদারি নৌকো থেকে কিছু লোক ওই দু'টির মধ্যে একটি জাহাজের তলা থেকে একটি মাইনজাতীয় কিছু বের করার চেষ্টা করছে।
ইরানের উপরে তেল বাণিজ্যের নিষেধাজ্ঞা লাগু হওয়ার পরে তেহরান অন্যান্যদের নিশানা করছে বলে অভিযোগ উঠছে যদিও ইরান এই দাবিকে নস্যাৎ করেছে। ইরানকে এই সমস্ত অভিযোগে অভিযুক্ত করা পম্পিও এবং মার্কিন আধিকারিকদের কাছে বাঁ-হাতের খেল বলে পাল্টা দাবি করেন ইরানের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি, শুক্রবারেই।
ইরানের রাষ্ট্রপতি রুহানি অবশ্য বিশকেক সম্মেলনে ১৩ জুন-এর খাঁড়িতে জাহাজ আক্রমণের কথা বলেননি কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পকে নিশানা করে বলেন যে তাঁর প্রশাসনের একচেটিয়া কাজকর্ম সমগ্র আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকেই বিপদের মুখে ঠেলছে।
চিন আস্বস্ত করল ইরানকে
রুহানি আরও বলেন যে ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে যে বহুজাতিক পরমাণু চুক্তি থেকে আমেরিকা নাম প্রত্যাহার করে নেয়, সেই চুক্তির প্রতি ইরান এখনও দায়বদ্ধ। চিনের তরফ থেকে এই সম্মেলনে ইরানকে আশ্বস্ত করে বলা হয় যে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, তেহরানের সঙ্গে বেইজিং সবরকম সহযোগিতা করবে।ম সহযোগিতা করবে।