বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ বরফ গলেছে আর্কটিক সাগরে, চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে ২০১৯ সালে রেকর্ড পরিমাণ বরফ গলেছে আর্কটিক সাগরে, চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে চিন্তার ভাঁজ ক্রমশ চওড়া হচ্ছে বিজ্ঞানীদের কপালে। সম্প্রতি মেরু ও সাগর গবেষণা কেন্দ্র(এনসিপিওআর)-এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জুলাই মাসে উত্তর মহাসাগরের আর্কটিক সাগরে সর্বাধিক বরফ গলন হয়েছে, যার জেরে আশেপাশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাষ্পীভবন, বাতাসের আদ্রতা, মেঘের ঘনত্ব ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ লক্ষ্যণীয়ভাবে বেড়েছে।
বিশ্বের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে প্রভাব রাখে উত্তর মহাসাগর
বিশ্বের একেবারে দক্ষিণে আটলান্টিক মহাসাগরের এই অংশটি সুমেরু ভূমধ্যসাগর বা আর্কটিক সাগর নামে পরিচিত। এই আর্কটিক সাগরের জমাট বরফের স্তর গোটা বিশ্বের জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এনসিপিওআরের মতে, আর্কটিক সাগরে গত ৪১ বছরের মধ্যে সর্বাধিক বরফ গলন প্রত্যক্ষ করা গেছে ২০১৯-এর জুলাইয়ে। ১৯৭৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রতি দশকে বরফ গলনের পরিমাণ ৪.৭% হলেও ২০১৯-এ এই পরিমাণ ১৩%-এ দাঁড়িয়েছে।
প্রাণীকুলের উপর নেমে আসতে বড়সড় বিপর্যয়
এনসিপিওআরের এক উচ্চপদস্থ বিজ্ঞানী অবিনাশ কুমার জানিয়েছেন, "এইভাবে বরফ গলতে থাকলে পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তন হবে ও মহাসাগরে জলের প্রবাহ ধীর হয়ে পড়বে, ফলে সমস্ত প্রাণীকুলের উপর বিপর্যয় নেমে আসবে।" ১৯৭৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত প্রায় চারদশকের তথ্য কৃত্রিম উপগ্রহ মারফত সংগ্রহ করে এনসিপিওআরের বিজ্ঞানীরা, উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর পরিবর্তন সম্পর্কিত গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আর্কটিক সাগরের আশেপাশের অঞ্চলে আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্যনীয়
এনসিপিওআরের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আর্কটিক সাগরের বরফের স্তরের গলনে এবং গ্রীষ্ম ও শরতের সময়কাল বৃদ্ধিতে আর্কটিক সাগর ও তার আশেপাশের অঞ্চলে আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ওই গবেষণা কেন্দ্রের একটি বিবৃতিতে জানা গেছে, এইভাবে বরফ গলন চলতে থাকলে ২০৫০ সালে আর্কটিক সাগর বরফ শূন্য হয়ে পড়বে যা সমগ্র মানবসভ্যতা ও জলবায়ুর ক্ষেত্রে বড়সড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।
নতুন বরফ জমাট বাঁধার আগেই গলছে বিশাল পরিমাণ বরফের চাঁই
আর্কটিক সাগরের বরফাবৃত স্তর পৃথিবীর জলবায়ু নির্ধারণ করে আসছে বহুকাল ধরেই। উত্তর মহাসাগরের এই বরফ গলনের জেরে বাতাসের আদ্রতা-উষ্ণতায় যেমন বদল হচ্ছে, তেমনই বাতাসের বেগ, বাষ্পীভবন এবং অন্যান্য জলবায়ুর উপাদানেও বদল আসছে। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় এই যে, সারা বছরে বরফ গলনের পরিমাণ শীতে বরফ গঠনের থেকে অনেকটাই বেশি, ফলত মহাসাগরের জলস্তর বেড়ে উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলির জলের তলায় যাওয়ার সম্ভাবনা দিনেদিনেই বাড়ছে।
লাদাখের আকাশসীমায় এবার চিনা ড্রোন! গালওয়ানে পিএলএ-র অবস্থান নিয়ে চূড়ান্ত ধোঁয়াশা