আমাজনে 'ফুটন্ত নদী'-র সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা, এমন নদী পৃথিবীতে আর একটিও নেই!
ছোটবেলায় নিজের পরিবারের লোকেদের মুখে ফুটন্ত নদীর কথা শুনেছিলেন আন্দ্রে রুসো। তখন বেশ মজার লেগেছিল বিষয়টি। লাগবে নাই বা কেন? এমন অনেক ঘটনার কথা, রূপকথার কাহিনি অনেকেই ছোটবেলায় পড়ে বা শুনে থাকে। তবে ফের একবার কিছুটা বড় হওয়ার পরও যখন এসব কাহিনি সে ফের শুনল, এবার আর কৌতুহল চাপতে পারেনি সে। বারবার সুযোগ খুঁজেছে কবে গিয়ে সে নিজের চোখে এই ফুটন্ত নদীকে চাক্ষুস করবে। [মেরু প্রদেশের বরফে ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফাটল]
জিওথার্মাল এনার্জি নিয়ে গবেষণারত পেরুর ভূবিজ্ঞানী আন্দ্রে রুসো এর মাঝে অনেককে ওই নদী নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। এমন নদী রয়েছে বলে কেউ জবাব দিতে পারেননি। সাধারণত আগ্নেয়গিরির আশেপাশে এমন নদী পাওয়া যেতে পারে। লাভার কারণে যার জল গরম হতে পারে। তবে আমাজনে এমন কোনও আগ্নেয়গিরি নেই। ফলে সকলেই না বলেছিলেন। [ঘুমের মধ্যে বাধাহীন অবস্থায় উড়তে পারে পাখিরা]
অবশেষে ২০১১ সালে ফের একবার নিজের কাকিমার কাছে ফুটন্ত নদীর গল্প শোনার পরে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি রুসো। কাকিমাকে সঙ্গে নিয়ে একেবারে আমাজনের জঙ্গলে এসে হাজির হয়েছেন তিনি। আর সেখানে নিজের চোখে সেই ফুটন্ত নদীকে দেখেছেন তিনি। [পৃথিবীর গভীরতম 'সিঙ্কহোল'-এর খোঁজ মিলল দক্ষিণ চিন সাগরে!]
৪ মাইল বা ৬.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ২৫ মিটার চওড়া ও ৬ মিটার গভীর এই নদীটি সত্যিই ফুটন্ত জল বয়ে নিয়ে চলেছে। রুসো থার্মোমিটার নিয়ে মেপে দেখেছেন, এই জলের স্ফুটনাঙ্ক ৮৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একেবারে ফুটন্ত না হলেও তার একেবারে কাছাকাছি তাপমাত্রার। ফলে এটি কোনও রূপকথা নয়। [সমকামী যৌনতা উপভোগ করে মেয়ে গোরিলারাও!]
তবে আমাজনের মাঝে কীভাবে হঠাৎ করে এমন একটি ফুটন্ত নদী এল তা এখনও খুঁজে বের করা যায়নি। গত পাঁচ বছর ধরে এই এলাকায় থেকে নদীটি নিয়ে যাবতীয় গবেষণা চালিয়েছেন রুসো। তা থেকেই রহস্যের সমাধান বের করা হচ্ছে।
আপাতত মনে করা হচ্ছে, মূলত উষ্ণ প্রস্রবনের ফলেই এই নদীর জল এতটা গরম হয়ে গিয়েছে। কারণ ভূপৃষ্ঠের বুকে শিরার মতো প্রচুর ফল্ট লাইন রয়েছে। তারমধ্যে গরম জল ভর্তি। এগুলি ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে এলে ভূ-তাপ নির্গত হয় এবং উপরের জল উষ্ণ হয়ে প্রস্রবন সৃষ্টি হয়।
এই নদীতে কেউ সাঁতার কাটা তো দূর অস্ত নামতই পারে না। কেনও পশু-পাখি নদীতে পড়ে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু। আপাতত নদীতে রক্ষণাবেক্ষণ ও এর চারপাশের পরিবেশকে রক্ষা করা নিয়েই কাজ করে চলেছেন রুসো। এই ধরনের নদী বা জলাশয় পৃথিবীতে আর একটিও নেই, হলফ করে এই দাবি করেছেন ভূবিজ্ঞানী রুসো।