রিয়াদে কানাডার রাষ্ট্রদূত বহিষ্কার, কেন এত ক্ষেপেছে সৌদি আরব
সৌদি আরব তার অভ্যন্তরীণ ব্যপারে নাক গলানোর অভিযোগ এনে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করতে যাচ্ছে। আটক মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তি দাবি করার পরই কানাডার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ।
সৌদি আরব তার অভ্যন্তরীণ ব্যপারে নাক গলানোর অভিযোগ এনে কানাডার রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করেছে। ।
এর আগে সৌদি আরবে সম্প্রতি এক অভিযানে আটক করা মানবাধিকার কর্মীদের মুক্তি দাবি করে কানাডা।
এদের একজন হচ্ছেন সৌদি-আমেরিকান মানবাধিকার কর্মী সামার বাদাওয়ি - যিনি সৌদি আরবের পুরুষ অভিভাবকত্ব পদ্ধতির অবসান দাবি করেছিলেন এমন কয়েকজনের অন্যতম। এ দাবির পরই সৌদি কর্তৃপক্ষের টার্গেটে পরিণত হন তারা।
কানাডার বক্তব্যের জবাবে তাদের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার ছাড়াও সৌদি আরব অটোয়া থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরে আসারও নির্দেশ দিয়েছে।
সৌদি আরব ত্যাগ করার জন্য কানাডীয় রাষ্ট্রদূতকে মাত্র ২৫ ঘন্টা সময় দেয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে কানাডা বলেছে, সম্প্রতি সৌদি আরবে যেভাবে নারী এবং মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে - তাতে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কানাডা তাদের মুক্তিরও দাবি জানায়।
কিন্তু সৌদি আরব বলছে, এটা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নগ্ন হস্তক্ষেপ, এবং তারা কানাডার সাথে বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্পর্কও স্থগিত করছে।
এ নিয়ে কানাডা বলেছে, সৌদি আরবের পদক্ষেপ গুলোর ব্যাপারে তারা আরো ব্যাখ্যা চেয়েছে, তবে তারা মানবাধিকার রক্ষার স্বার্থে তারা সব সময়ই কথা বলবে।
বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন:
সৌদি নারীর এখনো যে পাঁচটি বিষয়ে অধিকার নেই
'সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ রূপকথার রাজপুত্র নন’
সৌদি নারীদের ড্রাইভিং: দৃষ্টিভঙ্গি কতটা বদলেছে?
কিন্তু রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করার মধ্যে দিয়ে বোঝা যায় যে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে সরকার কতটা আক্রমণাত্মক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে।
তিনি মেয়েদের গাড়ি চালানোর অনুমতির মতো এমন সব সংস্কারের উদ্যোগ নিযেছেন - যা মিডিয়ায় বড় বড় হেডলাইন হয়েছে।
কিন্তু সম্প্রতি মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযানের মাধ্যমে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি ভিন্নতম সহ্য করবেন না।
মানবাধিকার সংগঠন এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক একজন পরিচালক সামাহ হাদিদ এ ব্যাপারে বলেছেন, সৌদি আরব মুখে সংস্কারের কথা বললেও এ ঘটনায় তাদের প্রকৃত চেহারা বেরিয়ে পড়েছে।
তিনি বলেন, "সাম্প্রতিক এই নারী অধিকার কর্মী - যাদের অনেকেই গাড়ি চালানোর অধিকার দাবি করেছিলেন - তাদর এভাবে গ্রেফতার করাটা সৌদি আরব সংস্কার কর্মসূচির কথা বলছে, স্পষ্টতই তার বিপরীত এক ঘটনা। এ সব কর্মসূচি আসলে জনসংযোগের বেশি কিছু নয়।"
"যদি আপনি এসব শান্তিপ্রিয় কর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী ও সরকারের সমালোচকদের গ্রেফতারের দিকে তাকান তাহলে বোঝা যায় যে এসব সংস্কার এবং নারী অধিকারের অঙ্গীকার ফাঁকা বুলি মাত্র।"
এ ছাড়া সৌদি আরবের একজন নেতৃস্থানীয় নারী অধিকার কর্মী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটেন এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা এসব গ্রেফতারের বিরুদ্ধে কানাডার সাথে কণ্ঠ মেলান।
মানাল আল-শরিফ নামে এই অধিকারকর্মী - কানাডা যেভাবে সৌদি আরবের সমালোচনা করেছে তার জন্য দেশটিকে ধন্যবাদ দেন।
আরও পড়ুন:
জিগাতলা-সায়েন্স ল্যাব 'ঠান্ডা', অশান্ত বাড্ডা
শহীদুল আলমকে আটকের কারণ জানে না পরিবার
'শহীদুল আলমকে একদল লোক তুলে নিয়ে গেছে'
নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী