For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

নিরাপদ সড়ক: ঈদুল আযহার সাত দিন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় যেতে পারবে না মোটরসাইকেল

বাংলাদেশে গত ঈদুল ফিতরের সময় মহাসড়কের দুর্ঘটনায় হতাহতদের বড় একটি অংশ ছিল মোটরসাইকেল চালক ও যাত্রী।

  • By Bbc Bengali

যানজটের কারণে মোটরসাইকেল জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও, এতে ঝুঁকিও বাড়ছে
Getty Images
যানজটের কারণে মোটরসাইকেল জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও, এতে ঝুঁকিও বাড়ছে

বাংলাদেশে ঈদুল আযহার সময় মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। এক জেলা থেকে আরেক জেলাতেও মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না।

রবিবার বিকালে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জরুরি একটি সভা শেষে সড়ক পরিবহন সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেছেন, যৌক্তিক কারণ ছাড়া ঈদের আগে তিন দিন, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের তিন দিন- এই সাত দিন এক জেলা থেকে আরেক জেলায় মোটরবাইক চলাচল করবে না।

এই সময় দেশের সব মহাসড়কে রাইড শেয়ারিং সার্ভিসও বন্ধ থাকবে। ঢাকা, বরিশাল বা চট্টগ্রামের রাইড শেয়ারিং বাইকের যেটি যে জেলার মোটরসাইকেল, সেটি সেই জেলাতেই চালাতে হবে বলে তিনি জানান।

তবে যৌক্তিক এবং অনিবার্য প্রয়োজনে পুলিশের অনুমতি নিয়ে মোটরসাইকেল চালানো যাবে বলে মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

মি. আমিন উল্লাহ নুরী জানান, ঈদের আগে পরে মহাসড়কে দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতেই এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে মোটরসাইকেলে চলাচলের ঝুঁকি ও বিশৃঙ্খলা তৈরির সমালোচনার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত এলো সরকারের তরফ থেকে।

এর আগে রবিবার সকালে বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে সচিবালয়ে ঈদ প্রস্তুতি সভায় মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধের বিষয়ে আলোচনাও হয়। সেখানে মহাসড়কে মোটরসাইকেল বন্ধের জন্য বাস মালিক-শ্রমিকদের পক্ষ থেকে জোরালো দাবি করা হয়, যদিও সরকার সেই বৈঠক শেষে কোন সিদ্ধান্ত জানায়নি।

সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ঈদের আগের তিনদিন নিত্যপণ্য, কাঁচামাল, ওষুধ, জ্বালানি তেল, রপ্তানি পণ্য, পশুবাহী ট্রাক ছাড়া মহাসড়কে ট্রাক, কর্ভাড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ থাকবে।

তবে বাংলাদেশে একাধিক গবেষণায় মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও হতাহতের পেছনে মোটরবাইককে দায়ী করা হয়েছে।

গত কয়েক বছরের তুলনায় এই বছর ঈদুল ফিতরের সময় শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে মোটরসাইকেল চালকদের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি
Getty Images
গত কয়েক বছরের তুলনায় এই বছর ঈদুল ফিতরের সময় শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে মোটরসাইকেল চালকদের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি

গত ঈদুল ফিতরের সময় মহাসড়কগুলোতে মোটরসাইকেলের আধিক্য বেড়ে গিয়েছিল। সেই সময় মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ৩২৩ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের ৪৩ শতাংশই ছিল মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়।

বেসরকারি রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের হিসাব অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশে যত দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার ৩৯ শতাংশই মোটরসাইকেলের কারণে হয়েছে।

তাদের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশে ২ হাজার ৭৮টি মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২১৪ জনের। দুই হাজার কুড়ি সালের তুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে ৫০ শতাংশ, মৃত্যু বেড়েছে ৫১ শতাংশ। নিহতদের বেশিরভাগের বয়স ৩০ বছরের নীচে।

এর পেছনে অবৈধভাবে লাইসেন্স পাওয়া, লাইসেন্স ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়া চালানো আর ঝুঁকিপূর্ণভাবে মোটরসাইকেল চালানোকে দায়ী করেন বিশেষজ্ঞরা।

পদ্মা সেতু সবার জন্য খুলে দেয়ার পর ২৬শে জুলাই মোটরসাইকেলের কারণে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। সেদিন মোটরবাইক দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যুও ঘটে। এরপর সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত যাত্রী ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার না করেই অনেকে মোটরসাইকেল চালান
PROBAL RASHID
অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত যাত্রী ও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ব্যবহার না করেই অনেকে মোটরসাইকেল চালান

বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. মাহবুব আলম তালুকদার বলছেন, সড়কে বিশৃঙ্খলা এবং দুর্ঘটনার পেছনে মোটরসাইকেল চালকদের বড় দায় রয়েছে।

তিনি বলছেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা তৈরি করছে মহাসড়কগুলোয় মোটরসাইকেল চালানো।

''মোটরসাইকেল একটা ঝুঁকিপূর্ণ বাহন, এটা হাইওয়েতে চালানোর মতো গাড়ি না। সেখানে বিশেষ লেন থাকলে চালানো যেত, কিন্তু বাস-ট্রাকের পাশাপাশি হাইওয়ে মোটরসাইকেল চলা উচিত নয়, '' তিনি বলছেন।

তবে মঈনুল ইসলাম নামের একজন মোটরবাইক চালক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিবিসি বাংলাকে বলছেন, বাসের বাড়তি ভাড়া, টিকেট না পাওয়ার কারণে তিনি গ্রামের বাড়িতে যেতে নিজের বাইক ব্যবহার করেন।

তিনি বলছেন, ''বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কারও তো সড়কে দুর্ঘটনায় পড়ে, সেগুলো তো বন্ধ করা হচ্ছে না। ঈদের সময় বাসের টিকেট পাওয়া যায় না, তিনগুণ চারগুণ দাম চাওয়া হয়। এবার আবার সেই টিকেটের জন্য যুদ্ধ করতে হবে, এতো স্বল্প সময়ে টিকেট পাবো কিনা, তাও জানি না।''

সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকে পক্ষে বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন।

সাজ্জাদ হোসেন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, "অনেকের জন্য বড় ধরনের সমস্যা হবে ঈদের সময় বাড়ি যেতে ও ফিরতে। সিদ্ধান্তটি পূনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ রইল।"

জান্নাতুল মাওয়া নামে এক নারী মন্তব্য করেছেন, "একদম সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার যদি দুর্ঘটনার হার কমে। "

English summary
Safe roads: Motorcycles will not be able to travel from one district to another for seven days of Eid-ul-Azha in Bangladesh
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X