রাশিয়া থেকে তুরস্কে পৌঁছল এস-৪০০ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম; মার্কিন কংগ্রেস ধিক্কার জানালেও নীরব পেন্টাগন
রাশিয়ার তরফ থেকে তুরস্ককে দেওয়া এই বিতর্কিত 'উপহার' নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা, দল নির্বিশেষে।
শেষ পর্যন্ত রাশিয়া থেকে এস-৪০০ সামরিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তুরস্কের কাছে পৌঁছল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার সদস্যরা এই নিয়ে সোচ্চার হলেও মার্কিন সামরিক সদর দফতর পেন্টাগন এবং বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে এখনও কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি এই নিয়ে। রাশিয়া টুডে একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলল কংগ্রেস সদস্য
রাশিয়ার তরফ থেকে তুরস্ককে দেওয়া এই বিতর্কিত 'উপহার' নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা, দল নির্বিশেষে। হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভস-এর ফরেন এফেয়ার্স কমিটির প্রধান এবং ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য এলিয়ট এঞ্জেল এবং অন্যতম সদস্য রিপাবলিকান মাইকেল ম্যাককল এই বিষয়ে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তায়িপ এর্দোয়ানকে সমালোচনা করে বলেছেন যে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
'এর্দোয়ান ভুল পথ বেছেছেন'
শুক্রবার, ১২ জুলাই, এঞ্জেল এবং ম্যাককল একটি বিবৃতিতে জানিয়েছেন যে এর্দোয়ানের সামনে পরিষ্কার দু'টি পথ ছিল এবং তিনি ভুল পথটি বেছে নিয়েছেন। ন্যাটোর মিত্র দেশ হয়েও তুরস্ক যেভাবে রাশিয়ার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তাতে তাঁরা যারপরনাই আশ্চর্য।
এখানে বলা যেতে পারে যে আঙ্কারা ওয়াশিংটনের সঙ্গেও সামরিক সহযোগিতায় লিপ্ত এবং কংগ্রেসের ওই দুই সদস্য দাবি তুলেছেন অচিরে তুরস্ককে এফ-১৫ 'স্টেলথ ফাইটার প্রোগ্রাম'-এ যোগদান করা থেকে আটকানো এবং তুরস্কের যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কারবার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার।
মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে আমেরিকা 'ক্যাটসা' বলে একটি আইন পাশ করেছে যার মাধ্যমে ওয়াশিংটন তার দুশমন দেশগুলির (রাশিয়া যাদের অন্যতম) সঙ্গে সম্পর্ক রাখা কোনও তৃতীয় দেশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারে। এই বিষয়ে মনে করিয়ে দেওয়া যেতে পারে যে রাশিয়ার থেকে এস-৪০০ বা ইরানের থেকে তেল কেনার ব্যাপারেও ভারত আমেরিকার 'ক্যাটসা'-র কড়া নজরে পড়তে পারে।
পেন্টাগন, বিদেশ মন্ত্রক কোনও অবস্থান নেয়নি এখনও
তবে পেন্টাগন এবং মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক এখুনি ওই কংগ্রেস সদস্যদের দাবি নিয়ে কোনও কথা বলেনি। বরং প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে বলা হয়েছে যে এস-৪০০ নিয়ে আধঘন্টা মতো আলোচনা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের দুই কর্তার মধ্যে যদিও সেখানে কী কথা হয়েছে, তার বিশদ কিছু জানা যায়নি, জানিয়েছে 'রাশিয়া টুডে'।
২০১৬ সালের জুলাই মাসে তাঁর বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ অভুত্থানের পরেই এর্দোয়ান পশ্চিমের কাছে প্রবল সমালোচিত হন কড়া হাতে বিরোধী কন্ঠ দমন করার জন্যে এবং রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েন। এস-৪০০ নিয়ে তাদের এফ-১৫ কর্মসূচি থেকে বাদ দেওয়ার মার্কিন হুঁশিয়ারিকেও পাল্টা দিয়েছে তুরস্কও। তারা বলেছে যে আমেরিকা সেরকম পদক্ষেপ নিলে তা দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তিকেই ভঙ্গ করবে। এফ-১৫ কর্মসূচি থেকে তুরস্ককে বাদ দিলে তা এফ-১৫ উৎপাদন প্রক্রিয়ার উপরেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার খবরের সূত্রটি।