For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: লুহানস্কের পতনের পর পুতিনের পরবর্তী লক্ষ্য কী?

  • By Bbc Bengali

রাশিয়ার ঘোষিত লক্ষ্য হচ্ছে পুরো ডনবাস অঞ্চল
Getty Images
রাশিয়ার ঘোষিত লক্ষ্য হচ্ছে পুরো ডনবাস অঞ্চল

ইউক্রেনে আরো একবার ঠিক একই ঘটনা ঘটতে দেখা গেল। রাশিয়ার আরো একটি অগ্রাভিযান - এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর আরো একটি পশ্চাদপসরণ।

এবারের ঘটনাস্থল লিসিচানস্ক।

বিবিসির জো ইনউড লিখছেন, এখানে তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী লড়াই হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তা হলো না।

লুহানস্কের গভর্নর সেরহি হাইদাই বললেন - একটি "কৌশলগত সেনা প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে" সে লড়াই এড়ানো হয়েছে।

তার কথায় - কামানের সংখ্যা এবং গোলাবারুদের পরিমাণের দিক থেকে রাশিয়া বিরাট সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। অনেক দূর থেকেই তারা সবকিছু ধ্বংস করে দিতে পারতো - কাজেই এখানে অবস্থান নিয়ে থাকার কোন মানে হয় না।

লিসিচানস্ক শহর দখল করার যে বর্ণনা রুশ পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে - তার সাথে মি. হাইদাইয়ের কথা মিলে যায়।

তাদের শহরে ঢুকতে কোন বাধা মোকাবিলা করতে হয়নি। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে - চেচেন যোদ্ধারা লিসিচানস্কের কেন্দ্রস্থলে নাচছে।

উল্লাস তো তারা করবেই। কারণ লিসিচানস্ক দখল করা মানে হচ্ছে লুহানস্ক অঞ্চলের প্রায় পুরোটাই রাশিয়ার দখলে চলে গেল।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেন অভিযান বা "বিশেষ সামরিক অপারেশনের" এটা ছিল অন্যতম প্রধান কৌশলগত লক্ষ্য।

ডনবাস দখলের যুদ্ধ বা সার্বিকভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য এটা কী অর্থ বহন করে?

রাশিয়া চায় পুরো ডনবাস অঞ্চলকে 'মুক্ত' করতে

প্রথমে ব্যাপারটা দেখা যাক রাশিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে। তাদের ঘোষিত লক্ষ্য হচ্ছে ডনবাস অঞ্চল দখল করা - তাদের ভাষায় "মুক্ত করা।"

লিসিচানস্ক দখলের মধ্যে দিয়ে পুরো লুহানস্ক রুশ নিয়ন্ত্রণে আসার পর প্রেসিডেন্ট পুতিন তার কম্যান্ডারদের সর্বোচ্চ 'রাশিয়ার বীর' খেতাব দিয়েছেন - যা থেকেও এ বিজয়ের গুরুত্ব বোঝা যায়।

বিবিসি বাংলায় সম্পর্কিত আরো খবর:

পুরো ডনবাসের নিয়ন্ত্রণ দখলের পথে এগুচ্ছে রাশিয়া

লিসিচানস্ক দখলে, এবং পুরো লুহানস্ক এখন 'মুক্ত'- রাশিয়ার ঘোষণা

ইউরোপ জুড়ে মার্কিন সৈন্য বাড়ানোর ঘোষণা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের

ইউক্রেন যুদ্ধ বছরের পর বছর চলতে পারে, সতর্ক করছেন পশ্চিমা নেতারা

স্লোভিয়ানস্ক শহরে একটি বিপণীকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। রোববারের ছবি।
Getty Images
স্লোভিয়ানস্ক শহরে একটি বিপণীকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। রোববারের ছবি।

কিন্তু এর পর কী হতে পারে? এখানে বেশ কয়েক রকমের চিত্র অনুমান করা যেতে পারে।

এটা মোটামুটি নিশ্চিত যে রাশিয়া এখন ডনবাসের বাকি অঞ্চল - অর্থাৎ দোনেৎস্কের বাকি অংশ - করায়ত্ত করার জন্য চেষ্টা করবে।

বিশেষ করে তাদের লক্ষ্য হবে স্লোভিয়ানস্ক এবং ক্রামাটরস্ক - ইতোমধ্যেই যেগুলোর ওপর রুশ গোলাবর্ষণ শুরু হয়ে গেছে।

বিশেষ করে স্লোভিয়ানস্কের তাৎপর্য অন্যরকম। কারণ - ২০১৪ সালে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী অভ্যুত্থান এখান থেকেই শুরু হয়েছিল।

তবে এ দুটি শহর দখলের পর রাশিয়ার লক্ষ্য কী হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। এটা অনেকটা নির্ভর করে ডনবাস দখলের পর তাদের বাহিনীর অবস্থা কী হয় তার ওপর।

প্রেসিডেন্ট পুতিন পরোক্ষভাবে কথাটা স্বীকার করেছেন।

তিনি বলেছেন, যে ইউনিটগুলো লুহানস্কে যুদ্ধ করেছে, এবং সাফল্য ও বিজয় পেয়েছে, তাদের নিশ্চয়ই বিশ্রাম করা উচিত - যাতে তাদের যুদ্ধক্ষমতা বাড়ে।

এই সৈন্যরা যদি তাদের দ্রুতগতির অগ্রাভিযান অব্যাহত রাখে - তাহলে হয়তো তারা ইউক্রেনের পুরো দক্ষিণাংশ দখল করে নেবার প্রয়াস চালিয়ে যেতে পারে।

হয়তো দনিপ্রো শহর বা তারও পর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে এই অভিযান।

কিন্তু যদি তারা ক্লান্ত হয়ে গিয়ে থাকে - যেমনটা অনেক বিশ্লেষক বলছেন, বা মি. পুতিন আভাস দিচ্ছেন - তাহলে এমনটা হতেই পারে যে রাশিয়া হয়তো "বিশেষ সামরিক অভিযানের" সমাপ্তি ঘোষণা করতে পারে।

সেক্ষেত্রে হয়তো রাশিয়া মনে করতে পারে যে - একটি একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলে ইউক্রেনের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন কিছুটা ঝিমিয়ে পড়বে, এবং ফ্রান্স ও জার্মানির মতো কিছু দেশ তখন শান্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করতে পারে।

আরো পড়তে পারেন:

ডনবাসে রাশিয়াকে ঠেকাতে ব্যর্থ হলে পরিণতি কী ইউক্রেনের

ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে যে পাঁচটি ঘটনা আগামীতে ঘটতে পারে

দোনেৎস্কের ভের্কনোকামিয়নস্কে গোলার আঘাতের পর একটি বাড়িতে আগুন জ্বলছে
Getty Images
দোনেৎস্কের ভের্কনোকামিয়নস্কে গোলার আঘাতের পর একটি বাড়িতে আগুন জ্বলছে

ইউক্রেন হয়তো তার পরও যুদ্ধ চালিয়ে যাবে । কিন্তু নিয়মিত অস্ত্রের সরবরাহ না থাকলে ফ্রন্টলাইনগুলোতে যুদ্ধে একটা অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে - যেমনটা ২০১৪ এবং ২০২২ সালে হয়েছিল।

এতে রাশিয়ারই লাভ হবে, কারণ তার প্রতিবেশী দেশে যদি অস্থিরতা এবং তোলপাড় চলতে থাকে তাহলে তার সুবিধা হবে।

রাশিয়ার লক্ষ্য দোনেৎস্কের বাকি অংশ?

সম্প্রতি রুশ সৈন্যরা যেভাবে পূর্ব এবং দক্ষিণ ইউক্রেনের বেশ কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, তা দেখার পর দোনেৎস্কের শহরগুলোতে ইউক্রেনীয় সেনারা আদৌ কতটা শক্ত প্রতিরোধ তৈরি করতে সমর্থ হবে - তা নিয়ে সামরিক বিশ্লেষকদের অনেকেরই সন্দেহ রয়েছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার বর্তমান কৌশল দেখে এটা স্পষ্ট বোঝা যায় যে যুদ্ধের শুরুর দিকের ব্যর্থতা থেকে তারা শিক্ষা নিয়েছে এবং খুব সাবধানে এগুচ্ছে।

দেখা যাচ্ছে, টার্গেট করা এলাকাগুলোতে তারা প্রথম কয়েকদিন দিন-রাত প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের দিশেহারা করে ফেলছে। তারপর ট্যাংক এবং সাঁজোয়া যান নিয়ে রুশ সৈন্যরা শহরগুলোতে ঢুকে নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে।

দোনেৎস্কের শহরগুলোতেও রাশিয়া একইভাবে সফল হবে? ইউক্রেনীয় সৈন্যরাই বা ওইসব শহরে কতটা শক্ত প্রতিরোধ তৈরি করতে পারবে?

লুহানস্ক দখলের পর পুরো ডনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ দখলের পথে এগুচ্ছে রাশিয়া
BBC
লুহানস্ক দখলের পর পুরো ডনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ দখলের পথে এগুচ্ছে রাশিয়া

যদি তারা তা না পারে এবং পুরো ডনবাস দখলের লক্ষ্য যদি সত্যিই রাশিয়া অর্জন করতে সমর্থ হয়, তাহলে এই যুদ্ধ কোন দিকে গড়াবে - এসব প্রশ্ন নিয়ে বিস্তর কথাবার্তা শুরু হয়ে গেছে।

ডনবাস দখল করেই কি মি. পুতিন থামবেন?

ইউক্রেনের কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বন্দর মারিউপোলের পতনের পর থেকে আজভ সাগরের পুরো উপকুল এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। খেরসন বন্দরসহ পুরো খেরসন এলাকা এবং জাপোরোৎযিয়া এলাকার বিশাল অংশও এখন রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে - যেগুলো অর্থনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ইউক্রেন এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের অনেকের মধ্যেই এখন এমন ধারণা জোরদার হচ্ছে যে প্রেসিডেন্ট পুতিন যদি সহজে পুরো ডনবাস দখল করতে পারেন - তাহলে তিনি সেখানেই হয়তো থামবেন না।

হয়তো তিনি ইউক্রেনের আরো এলাকা দখলের পথে যাবেন - যাতে ভবিষ্যতে কোন আলোচনা হলে তা তার শর্ত মেনেই হয়।

সম্প্রতি একজন রুশ জেনারেল খোলাখুলিই বলেছেন - মিকোলাইভ এবং ওডেসা হয়ে রোমানিয়ার সীমান্ত পর্যন্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চান তারা, যাতে মলদোভার রুশ অধ্যুষিত ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার সাথে রাশিয়ার একটি স্থল করিডোর তৈরি হতে পারে।

তার অর্থ, আজভ সাগরের পর কৃষ্ণসাগর থেকেও ইউক্রেনকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা আঁটছে রাশিয়া।

স্লোভিয়ানস্কে গোলবর্ষণে আক্রান্ত একটি এলাকায় ইউক্রেনীয় পুলিশ
Getty Images
স্লোভিয়ানস্কে গোলবর্ষণে আক্রান্ত একটি এলাকায় ইউক্রেনীয় পুলিশ

"পূরো (কৃষ্ণসাগর) উপকূল দখল করে ইউক্রেনের অর্থনীতিকে চরম চাপে ফেলার পথ নিতে পারে রাশিয়া, যাতে সাগর পথে ইউক্রেনের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়," আল জাজিরা টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন মিলান-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইতালিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিজের গবেষক এলেনোরা আমব্রেসেটি।

এই পথে রাশিয়া এগুবে কি-না, তা অনেকটাই নির্ভর করবে ডনবাস দখলের যুদ্ধে তাদের হারজিতের ওপর।

ইউক্রেনীয় বাহিনী কি মনোবল হারিয়ে ফেলছে?

নিউ ইয়র্ক টাইমসে এক নিবন্ধে বিশ্লেষক টমাস গিবন্স-নেফ লিখছেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী রুশ আর্টিলারি বা কামানের গোলাবর্ষণের প্রচণ্ডতার মুখে টিকতে পারছে না। তাদের প্রচুর সৈন্য নিহত হচ্ছে, নতুন যোগ দেয়া সৈন্য দিয়ে লড়াই চালাতে হচ্ছে এবং মানসিকভাবেও তারা বিপর্যস্ত।

ইউক্রেনীয় ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সূত্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী - প্রতিদিন ইউক্রেনীয় পক্ষে শত শত সৈন নিহত হচ্ছে।

রুশ বাহিনীতেও মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে একই মাত্রায় - কিন্তু তারা ধীরগতিতে হলেও যুদ্ধে অগ্রগতি ঘটাচ্ছে।

কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রের সামনের সারিতে থাকা ইউক্রেনীয় সেনাদলগুলো দীর্ঘ লড়াইয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ার কারণে তারা ক্রমশই স্বল্প-প্রশিক্ষিত সৈন্যের ওপর আরো বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে - যারা আসছে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা দল বা ন্যাশনাল গার্ড থেকে।

অন্যদিকে রুশ বাহিনীর 'রিইনফোর্সমেন্ট' আসছে ওয়াগনার প্যারামিলিটারি, মস্কো-সমর্থক চেচেন বাহিনী, এবং লুহানস্ক ও দোনেৎস্কের বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধাদের মধ্যে থেকে।

সৈন্যদের মধ্যে মনোবল কমে যাচ্ছে এমন খবর প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে দু'পক্ষই তৎপর।

ভ্লাদিমির পুতিন
Getty Images
ভ্লাদিমির পুতিন

ইউক্রেনীয় বাহিনীর জন্য সমস্যা হচ্ছে রুশদের হাতে গোলাবারুদ অনেক বেশি। একজন ইউক্রেনীয় জেনারেলের কথায়, "গোলাবারুদ একটা সমস্যা। আমরা একটি গুলি ছুঁড়লে ওরা ৫০টা গুলি ছোঁড়ে। আপনি এখানে কিভাবে লড়াই করবেন?"

ঘেরাও হওয়া ঠেকানো

ইউক্রেনের দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের সৈন্যদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার যেটি তা হলো - ঘেরাও হয়ে পড়া ঠেকানো, যেমনটা মারিউপোলে হয়েছিল।

এটা ঠিক যে মারিউপোলে ইউক্রেনীয় বাহিনী যেভাবে যুদ্ধ করেছিল তাতে রাশিয়ার অগ্রাভিযানের গতি কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত পিছিয়ে গিয়েছিল । কিন্তু সবশেষ ফলাফল ছিল এটাই যে সেখানে ইউক্রেনীয় বাহিনীর সবচেয়ে দক্ষ সৈন্যরা হাজারে হাজারে নিহত বা বন্দী হয়েছিল।

ইউক্রেন এখন সর্বোতভাবে চাইছে যেন এমনটা আর না হয়।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তার ভাষণে এটা বলতে কোন রাখঢাক করেননি।

তিনি বলেছেন, "আমরা আবার দেয়াল গড়ে তুলবো, ভূমি পুনরুদ্ধার করবো কিন্তু সবকিছুর ওপরে লোকের জীবন বাঁচাতে হবে। "

বিবিসির জো ইনউডকে ঠিকই একই কথা বলছিলেন সেরহি হাইদাই।

"আমাদের সৈন্যরা পিছিয়ে এমন জায়গায় চলে গেছে যেখানে তাদের অবস্থান সুরক্ষিত। আমরা পাঁচ মাস ধরে লুহানস্ককে রক্ষা করেছি। যতদিন এই সুরক্ষা ছিল তার মধ্যেই আমরা দোনেৎস্ক অঞ্চলে নতুন প্রতিরক্ষাব্যুহ নির্মাণ করছিলাম। সৈন্যরা এখন সেখানেই চলে গেছে।"

লিসিচানস্ক ও সেভেরোদোনেৎস্ককে যেভাবে ইউক্রেনীয় বাহিনী এতদিন রক্ষা করেছে তাকে এমনকি একটি "সফল সামরিক অপারেশন" বলেও আখ্যায়িত করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির উপদেষ্টা ওলেক্সি আরেস্টোভিচ।

এ দুটি শহরেই এখন রুশ পতাকা উড়ছে। তাই এসব কথা শুনতে একটু অদ্ভূত শোনাতে পারে। কিন্তু ইউক্রেন যেটা বলার চেষ্টা করছে তা হলো, তারা একটি দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে নেমেছে এবং এখানে যে সময় দরকার - সেটা হাতে রাখছে।

এই যুক্তিটা বুঝতে হলে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে ইউক্রেনের অস্ত্র পাবার গুরুত্ব অনুধাবন করতে হবে। সহজ কথায়, নেটোর সরবরাহকৃত অস্ত্র ছাড়া ইউক্রেন এখন যে অবস্থায় আছে তার চেয়ে অনেক খারাপ অবস্থায় থাকতো।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সৈন্যদের প্রাণ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন
Getty Images
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সৈন্যদের প্রাণ রক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন

রাশিয়ার অগ্রাভিযানকে তারা যত বেশিদিন ঠেকিয়ে রাখতে পারবে - ততই তারা নিজেদের হাতে আরো বেশি আধুনিক রকেট ও কামান পাবে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে যে এইচআইএমওআরএস রকেট দিয়েছে তা এর মধ্যেই রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে এবং তা যুদ্ধের ভারসাম্য বদলে দিচ্ছে বলেই বলা হচ্ছে।

যুদ্ধ যতই দীর্ঘ হবে ততই ইউক্রেনের হাতে এর আরো সরবরাহ আসবে, এবং তারা যুদ্ধে আরো বেশি সুবিধা পাবে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়াও তার খরচ হয়ে যাওয়া সরঞ্জাম ও গোলাবারুদের শূন্যস্থান পূরণ করতে সমস্যায় পড়ছে।

নিশ্চিতভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না

রাশিয়া ও ইউক্রেন - দু'পক্ষই দাবি করছে যে তারাই যুদ্ধে সুবিধাজনক অবস্থায় আছে।

এখনকার পরিস্থিতিতে কোন কিছুই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

বিবিসির জো ইনউড বলছেন, একটা বিষয় লক্ষণীয় যে ডনবাসে যদিও ইউক্রেন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে কিন্তু অন্য দিকে তারা সম্প্রতি কিছু সাফল্যও পেয়েছে।

যেমন কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্নেক আইল্যান্ড থেকে রুশ সৈন্যরা হটে গেছে, সেখানে এখন ইউক্রেনীয় পতাকা উড়ছে।

তবে এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে এ যুদ্ধ খুব তাড়াতাড়ি শেষ হবে না।

এবং, লড়াইয়ের পরিণাম ভোগ করার জন্য এখন সম্ভবত তৈরি হতে হবে দোনেৎস্কের বাসিন্দাদেরকে।

English summary
Russia-Ukraine War: What is Vladimir Putin's next target after Luhansk
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X