Russia-Ukraine Crisis: ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই’, ইউক্রেনের সঙ্কটে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদে সামিল রুশ নাগরিকরা
Russia-Ukraine Crisis: ‘যুদ্ধ নয় শান্তি চাই’, ইউক্রেনের সঙ্কটে বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদে সামিল রুশ নাগরিকরা
এড়ানো গেল না রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। রাষ্ট্রপুঞ্জের হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান ঘোষণা করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্রিমিয়া দিয়ে ইউক্রেনে ঢুকল রুশ সেনা। ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শোনা গেল বিস্ফোরণের শব্দ, অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের সাইরেন। কিন্তু পুতিনের এই সিদ্ধান্তকে মোটেও ভালো নজরে দেখছেন না খোদ তাঁর দেশের লোকেরাই। বিশ্বজুড়ে রাশিয়ানরা রাস্তায় নেমে পুতিনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করছেন। অনেক রুশ নাগরিকই প্রতিবাদে সামিল হয়ে পুতিনকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
প্রতিবাদে সামিল রাশিয়ানরা
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মস্কোতে হাজার জনের বেশি মানুষ রাস্তায় জড়ো হয়ে ‘যুদ্ধ নয়' বলে চিৎকার করতে থাকেন। পাশ দিয়ে যাওয়া গাড়িগুলি ভিড় ভাঙতে ক্রমাগত হর্ন বাজিয়ে চলেছেন। অন্যান্য শহরের রাস্তায় প্রতিবাদীদের প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে সেন্ট পিটার্সবার্গের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় ঐতিহাসিক গোস্টিনি ডভোর শপিং আর্কেডের বাইরে প্রতিবাদীদের জমায়েত হতে দেখা যায়। জানা গিয়েছে যে ৫৪টি রাশিয়ার শহর থেকে ১৭৪৫ জন মানুষকে আটক করা হয়েছে, যার মধ্যে ৯৫৭ জনকে আটক করা হয়েছে মস্কো থেকে। প্রসঙ্গত, ১৯৭৯ সালে আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর থেকে মস্কোর সবচেয়ে আক্রমনাত্মক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে শত শত পোস্ট এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ইউক্রেনের এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছেন রুশ নাগরিকরা
ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের ‘গণহত্যা'র হাত থেকে রক্ষা করার জন্য এই আক্রমণটিকে একটি ‘বিশেষ সামরিক অভিযান' বলে অভিহিত করেছেন, তবে এটি একটি মিথ্যা দাবি যা আমেরিকা আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল যে এটা অজুহাত হতে পারে রাশিয়ার এবং যা অনেক রুশ নাগরিক প্রত্যাখান করেছেন। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে বিস্ফোরণের সাইরেন ও ব্যাপক বিস্ফোরণের আওয়াজে রীতিমতো কেঁপে ওঠে এই দেশের অন্যান্য শহরগুলিও। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন যে এখনও পর্যন্ত ৫৭ জন ইউক্রেনবাসী নিহত হয়েছেন এবং একাধিক আহত। এই যুদ্ধ থামাতে রাশিয়ানরা খোলা চিঠি লিখছেন এবং অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করে দাবি জানিয়েছেন যে ক্রিমলিনে হামলা বন্ধ করা হোক।
রাশিয়ার তদন্ত কমিটির সতর্কতা
অন্যদিকে, রাশিয়ার তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি সতর্কতা জারি করে রাশিয়ানদের মনে করিয়ে দেয় যে অনুমতি ছাড়া কোনও বিক্ষোভ আইনের বিরুদ্ধে, তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সারা দেশে বিক্ষোভ করেছেন।
গোটা বিশ্ব জুড়ে চলছে যুদ্ধ নয় শান্তি চাই
তবে শুধু রাশিয়াতেই নয়, গোটা বিশ্ব জুড়েই রাশিয়ার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা নিয়ে প্রতিবাদ চলছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা ইউক্রেনের এই হামলার প্রতি নিন্দা জানাতে বৃহস্পতিবার টোকিও থেকে তেল আবিব এবং নিউইয়র্ক শহরেও পাবলিক স্কোয়ারগুলিতে এবং রুশ দূতাবাসের বাইরে জমায়েত হয়েছিলেন। সুইস রাজধানী বার্নেতে, হাতে ইউক্রেনের পতাকা হাতে নিয়ে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে ‘ইউক্রেনে শান্তি চাই' স্লোগান দিচ্ছিলেন। অন্যান্য বিক্ষোভগুলি দেখা গিয়েছে বেইরুট, তেল আবিব, ডাবলিন ও প্রাগে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ৭টা ৩৯ মিনিটে পুলিশ রাশিয়ার ৫৩টি শহর থেকে ১৬৬৭ জনকে আটক করে। মস্কো থেকে গ্রেফতার ৬ হাজার মানুষ।
রুশ নাগরিকদের কাছে আবেদন ইউক্রেনের
অপরদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোডিমির জেলেনস্কির অভিযোগ, রাশিয়া অসামরিক এলাকায় হামলা চালাচ্ছে। তিনি এই সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে রুশ নাগরিকদের প্রতিবাদে এগিয়ে আসার আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আজ হোক বা কাল, রাশিয়াকে কথা বলতেই হবে।