বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে রোহিঙ্গা গ্রাম
রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের আগুন পোড়া গ্রামগুলো বুলডোজার দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে, বলছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের রাজধানী সিটওয়েতে তিনটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছে। এমন এক সময় এ খবর এলো যখন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অভিযোগ করেছে যে ওই প্রদেশের রোহিঙ্গাদের আগুন পোড়া গ্রামগুলো বুলডোজার দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে।
মিয়ানমারের পুলিশ বলছে, একজন স্থানীয় কর্মকর্তার বাড়ি, আদালত, এবং রেকর্ড অফিসের কাছে বোমা তিনটি বিস্ফোরিত হয়। আরো তিনটি বোমা অবিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া যায়।
কারা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। এতে একজন পুলিশ কর্মকর্তা সামান্য আহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
এই প্রদেশে গত বছর আগস্ট মাসে এক সামরিক অভিযান শুরু পর থেকে ছয় লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে বা্ংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
রোহিঙ্গা জঙ্গীরা পুলিশ ফাঁড়ির ওপর কয়েকটি আক্রমণ চালালে ওই সেনা অভিযান শুরু হয়েছিল। এসময় তাদের বহু গ্রাম পুড়িয়ে দেয়া হয়, কয়েক হাজার লোককে হত্যা করা হয়। জাতিসংঘ একে জাতিগত নির্মূল অভিযান বলে বর্ণনা করেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নামের মানবাধিকার সংস্থা কিছু উপগ্রহ চিত্র প্রকাশ করে বলেছে, রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা মুসলিমদের অন্তত ৫৫টি গ্রাম বুলডোজার দিয়ে সম্পূর্ণ গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসব গ্রামের অনেকগুলো আগেই আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, এসব বাড়িঘর ধ্বংসের ফলে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের দিক থেকে কোন রকম আইনী দাবি তোলার সাক্ষ্যপ্রমাণও মুছে গেছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের পরিচালক ব্র্যাড এ্যাডামস বলেছেন, "এসব গ্রামে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল এবং তাই এগুলো সংরক্ষণ করা উচিত ছিল - যাতে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সেখানে গিয়ে তদন্ত চালাতে পারেন। এগুলো মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়ায় এখানকার বাসিন্দা রোহিঙ্গাদের স্মৃতি এবং আইনী দাবিও মুছে দেবার হুমকি তৈরি হয়েছে।"
তিনি বলেন, এর ফলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কেও উদ্বেগ বেড়ে গেল।
জাতিসংঘের কর্মীদের রাখাইন রাজ্যে তদন্তের জন্য যেতে দেয়া হয় নি।