বাতাসের মাধ্যমে সংক্রমণও করোনা প্রাদুর্ভাবের বড় কারণ হতে পারে, বলছে গবেষণা
বাতাসের মাধ্যমে সংক্রমণও করোনা প্রাদুর্ভাবের বড় কারণ হতে পারে, বলছে গবেষণা
ইতিমধ্যেই ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন লক্ষের গণ্ডি পার করেছে। গত দশদিনে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ মানুষ। পাশাপাশি গোটা বিশ্বে ৭৭ লক্ষের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মরা গেছেন ৪ লক্ষ ২৮ হাজারের বেশি মানুষ। এরা এমতাবস্থায় গবেষকেরা জানাচ্ছেন বাতাসের মাধ্যমে সংক্রমণও করোনা প্রাদুর্ভাবের বড় কারণ হিসাবে উঠে আসছে।
গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয় করোনার তিনটি প্রধান ভর কেন্দ্রকে
করোনা প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে বিশ্বের তিনটি প্রধান ভর কেন্দ্রের সামগ্রিক অবস্থার কথা বিচার করেই গবেষকেরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বলে জানা যাচ্ছে। ১৯৯৫ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত মারিও জে মোলিনা সহ আরও বেশ কিছু গবেষক এই গবেষণা চালিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। এর জন্য তারা বেছে নিয়েছিলেন বিশ্বের অন্যতম তিনটি করোনা বিধ্বস্ত শহর আমেরিকার নিউইয়র্ক, চিনের উহান এবং ইতালির একটা বড় অংশ।
অভিযোগের আঙুল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিকেও
গবেষক দলের মধ্যে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া সান দিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এই বিষয়ে আরও কিছু আশঙ্কাও প্রকাশ করেন। তাদের মতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এতদিন শুধু মাত্র সংস্পর্শ ও এলাকাভিত্তিক যোগাযোগের মাধ্যমে করোনা সংক্রমণের উপর জোর দিয়ে আসছিল। কিন্তু যার জেরে উপেক্ষিত থেকে গেছে বায়ুবাহিত করোনা গতিপ্রকৃতি। গবেষকদের মতে বাতাসে থাকা অ্যারোসলের হাত ধরেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে প্রাণঘাতী করোনা।
কী এই অ্যারোসল ?
সম্প্রতি পিএনএএস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা। কিন্তু এই অ্যারোসল আসলে কী ? সাধারণভাবে যেকোনো ভারী পদার্থ অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে ভূপতিত হয়। কিন্তু অপেক্ষাকৃত ভারি "কণা" (particles/droplets) তরল পদার্থ বা গ্যাসের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় থাকতে পারে। গ্যাসের মধ্যে তরল বা কঠিন পদার্থের কণা ঝুলে থাকলে তাকে অ্যারোসল বলে। ঠিক যেমন কুয়াশা। আর এ কারণেই করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে রেস্পিরেটরি ড্রপলেট বা হাঁচি-কাশির ফলে বের হওয়া জলকণাকে অ্যারোসল বলা হচ্ছে। যার মাধ্যমেই সংক্রমণ বড় আকার নিচ্ছে মত গবেষকদের।
বিশ্বের একাধিক প্রান্তে চলছে গবেষণা
এদিকে ফিনল্যান্ডের আলটো ইউনিভার্সিটি, ফিনিশ মেটেরোলজিক্যাল ইন্সটিটিউট, ভিটিটিস টেকনিক্যাল রিসার্চ সেন্টার ও হেলসিঙ্কি ইউনিভার্সিটির একটি যৌথ গবেষক দলও কিছুদিন আগে বাতাসের মাধ্যমে করোনা গতিপ্রকৃতির উপর কাজ করেছেন। ইতিমধ্যেই তারা ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট অ্যারোসল কণার গতিবিধির মডেলও তৈরি করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। এর মধ্যে এত ক্ষুদ্র কণাও আছে, যা বাতাসে ভেসে থাকতে পারে এবং বায়ুপ্রবাহের সঙ্গে চলাচলও করতে পারে।
শুধু করোনা ভাইরাস নয়, ২০২০ আরও এক চরম প্রাকৃতিক অবস্থার সাক্ষী রইল, বলছে বিজ্ঞানীরা